All need to know about Sommaroy Island of Norway dgtl
Sommaroy Island
থাকেন মোটে ৪০০ জন, মাছ ধরেই চলে জীবন, ‘নদীর স্রোতের ন্যায়’ সময় বয়ে যায় না যে ‘জাদু’ দ্বীপে
সকালে উঠেই শুরু হয় দৌড়। কখনও অফিসের কাজ, কখনও পরিবার, কখনও বা সামাজিকতার জন্য সে দৌড়। রোজ এ ভাবেই দিন শুরু হয়। নিজের নিয়মে শেষও হয়ে যায়। অথচ ভাবতে বসলে দেখা যায় নিজের জন্য কোনও সময়ই পাননি আপনি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৪ ১২:৩২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
সময়— এ এক দুর্লভ জিনিস। সময় অতীত থেকে বর্তমান হয়ে ভবিষ্যতের দিকে যায়। অতীত মানুষের স্মরণে থাকে। ভবিষ্যৎ থাকে অজানা। এটাই সময়ের গতিপথ। বিজ্ঞানের এক ধ্রুব সত্য। এই নিয়মের কোনও ব্যতিক্রম নেই।
০২১৫
সময়কে চোখে দেখা যায় না। শুধু ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে মেপে নিতে হয়। সময়কে কোনও বেড়াজালে আটকে রাখা যায় না। তবে সে আছে। আছে প্রতিটি নিঃশ্বাসে। মানুষের বিশ্বাসে। মানুষ সময়ের কাছে বাঁধা।
০৩১৫
সকালে উঠেই শুরু হয় দৌড়। কখনও অফিসের কাজ, কখনও পরিবার, কখনও বা সামাজিকতার জন্য সে দৌড়। রোজ এ ভাবেই দিন শুরু হয়। নিজের নিয়মে শেষও হয়ে যায়। অথচ ভাবতে বসলে দেখা যায় নিজের জন্য কোনও সময়ই পাননি। নিজের পছন্দের একটিও কাজে মন দিতে পারেননি দিনের পর দিন।
০৪১৫
কিন্তু এমন এক জায়গা এই পৃথিবীর বুকে রয়েছে, যেখানকার মানুষ সময়ের ধার ধারেন না। যখন খুশি খান, যখন খুশি স্নান করেন, যখন খুশি খেলতে যান, মাছ ধরেন।
০৫১৫
পৃথিবীর এই জায়গার নাম সোমারয় দ্বীপ। উত্তর ইউরোপের দেশ নরওয়ের একটি দ্বীপ। জনসংখ্যা মেরেকেটে শ’চারেক।
০৬১৫
এই সোমারয় দ্বীপের মানুষের জীবনেই সময়ের কোনও ‘দাম’ নেই। ঘড়ি ধরে কোনও কাজ করেন না তাঁরা। যখন খুশি জাগেন, যখন খুশি ঘুমোতে যান, যখন খুশি খাবার খান। নির্দিষ্ট কোনও সময়ের ছকে তাঁরা জীবনযাপন করেন না।
০৭১৫
কিন্তু কেন এমন জীবন সোমারয়ের বাসিন্দাদের? আসলে সোমারয় দ্বীপে মে মাসের ১৮ তারিখ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত— টানা ৬৯ দিন সূর্য অস্ত যায় না।
০৮১৫
আবার মেরুবৃত্তের উত্তরে থাকার কারণে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত দীর্ঘ সময় সূর্য ওঠে না। রাতের আঁধারে সময় কাটে সোমারয়বাসীর।
০৯১৫
আর সেই কারণেই ঘড়ি ধরে কোনও কাজ করেন না সোমারয়ের বাসিন্দারা। সূর্য অস্ত না যাওয়ার কারণে ওই ৬৯ দিনের মধ্যে স্থানীয় সময় যখন রাত ৯টা বাজার কথা, তখনও দ্বীপের মানুষ সাঁতার কাটা, পাহাড় চড়ার মতো কাজ করেন।
১০১৫
পাহাড়়ে ঘেরা সোমারয়ে মূলত মৎস্যজীবীদের বসবাস। মাছ ধরেই জীবনযাপন করেন তাঁরা। মৎস্যশিল্পের জন্য পরিচিতি রয়েছে এই দ্বীপের।
১১১৫
সোমারয় দ্বীপে প্রতি বছর পর্যটকদের সংখ্যা কম নয়। এখানে ছোট ছোট অনেক হোটেল এবং কেবিন পর্যটকদের ভাড়ায় দেওয়া হয়।
১২১৫
২০১৯ সালের জুন মাসে নরওয়ের সরকারি দফতর ‘ইনোভেশন নরওয়ে’ একটি প্রচার অভিযান চালিয়েছিল। ওই প্রচার অভিযানে বলা হয়, সোমারয়ের স্থানীয়েরা চান যেন দ্বীপটিকে বিশ্বের প্রথম ‘টাইম-ফ্রি জ়োন’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
১৩১৫
সোমারয়ের মানুষ নাকি সরকারের কাছেও দ্বীপের মধ্যে নাগরিক সময় বাতিল করার আবেদন জানিয়েছিলেন। এর পরেই বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সেই খবর করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বিষয়টি নিয়ে হাজার দুয়েক প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।
১৪১৫
মজার বিষয় হল, বিষয়টি নিয়ে যখন চর্চা তুঙ্গে, তখন খবর রটে যে ‘ইনোভেশন নরওয়ে’ যে প্রচার করেছে তা ভুয়ো। মাথায় হাত পড়ে অনেকের।
১৫১৫
আরও মজার বিষয় হল প্রচার চালাতে ‘ইনোভেশন নরওয়ে’র খরচ হয়েছিল ৬০ হাজার ডলার। অন্য দিকে, এই খবর করতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খরচ হয়েছিল ১১৪ লক্ষ ডলার।