Alakh Pandey the man behind legal fight against NEET results 2024 dgtl
NEET Scam 2024
নিটে ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে একা কুম্ভ ফিজ়িক্সওয়ালা অলখ, জয়ের জন্য লড়ছেন আইনের পথে
নিটের ফল প্রকাশিত হয়েছিল গত ৪ জুন, লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের দিনেই। ফল নিয়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছিল মুহূর্তের মধ্যে। বৃহস্পতিবার ছাত্রছাত্রীদের বাড়তি নম্বর বাতিল করা হয়েছে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪ ১৪:৩১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তার মোড় ঘুরে গিয়েছে বৃহস্পতিবার। নিটে যে পরীক্ষার্থীরা বাড়তি নম্বর পেয়েছিলেন, তা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
০২১৯
অন্তত ১৫৬৩ জনের বাড়তি নম্বর বাতিল হয়ে গিয়েছে নিটে। সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র জানিয়েছে, ওই পরীক্ষার্থীরা চাইলে আবার পরীক্ষা দিতে পারবেন। আগামী ২৩ জুন সেই পরীক্ষা হবে।
০৩১৯
নিটের ফল প্রকাশিত হয়েছিল গত ৪ জুন, লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের দিনেই। ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষার ফল নিয়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছিল মুহূর্তের মধ্যে। কারণ, মোট ৬৭ জন এ বারের নিটে প্রথম স্থানে রয়েছেন।
০৪১৯
এই ৬৭ জনই পেয়েছেন ১০০ শতাংশ নম্বর। ৭২০-র মধ্যে ৭২০ নম্বরই তাঁদের ঝুলিতে গিয়েছে। এক নম্বরও কাটা যায়নি। যা অতীতে কখনও হয়নি। এর আগে সর্বোচ্চ চার জন সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে প্রথম হতে পেরেছিলেন নিটে।
০৫১৯
নিটের এই ফলাফল দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, পরীক্ষায় কারচুপির সম্ভাবনা নিয়ে। যদি তর্কের খাতিরে ৬৭ জনের অপ্রত্যাশিত ফলের কথা মেনে নেওয়া যায়, তার পরেও প্রশ্ন থেকে যায় দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্থানাধিকারীদের নম্বর নিয়ে।
০৬১৯
দেখা গিয়েছে, দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্থানাধিকারীরা যে নম্বর পেয়েছেন, তা সাধারণ হিসাবের বাইরে। নিটের নম্বর দেওয়ার নিয়ম অনুযায়ী তা পাওয়ার কথা নয়। এর পরেই নিটের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়।
০৭১৯
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার অগ্রগতি এবং কেন্দ্রের বাড়তি নম্বর বাতিলের সিদ্ধান্তকে মামলাকারীর এক প্রকারের জয় বলাই যায়। শীর্ষ আদালতে নিটের এই আলোড়নের নেপথ্যে রয়েছেন এক ‘ফিজ়িক্সওয়ালা’। যাঁর উদ্যোগে মামলার জল গড়াল সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত।
০৮১৯
নিটের ফলাফল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি করেছেন অলখ পাণ্ডে। ‘ফিজ়িক্সওয়ালা’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালান তিনি। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের নিটের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। ন্য়াশানাল টেস্টিং এজেন্সির সিদ্ধান্তের পর রাতারাতি শিরোনামে উঠে এসেছেন সেই অলখ।
০৯১৯
উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের বাসিন্দা অলখ। তিনি নিজেও এক সময়ে জয়েন্ট পরীক্ষায় বসেছিলেন। তাতে সফল না হতে পেরে নিজের কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেন অন্য দিকে। শিক্ষাক্ষেত্রেই গড়ে তোলেন কেরিয়ার।
১০১৯
ছোট থেকে পদার্থবিদ্যার প্রতি টান ছিল অলখের। নিজে জয়েন্টে সাফল্য না পেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে শুরু করেন। সেই থেকে শুরু হয় ‘ফিজ়িক্সওয়ালা’র ক্লাস। নিজের কোচিং সেন্টার থেকে অনেক ছাত্রছাত্রীকে জয়েন্ট বা নিটের মতো পরীক্ষায় সাফল্য উপহার দিয়েছেন অলখ।
১১১৯
কানপুরের একটি কলেজে কিছু দিন পড়েছিলেন অলখ। বিটেক মাঝপথে থামিয়ে কোচিং সেন্টার খুলে বসেন তিনি। বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের অন্যতম সফল স্বনির্ভর উদ্যোক্তা তিনি।
১২১৯
অলখের সংস্থা ‘ফিজ়িক্সওয়ালা’ মোট ৬১টি ইউটিউব চ্যানেল চালায়। সাবস্ক্রিপশনের সংখ্যা ৩ কোটির বেশি। কয়েকটি সূত্রে জানাচ্ছে, অলখের সম্পত্তির পরিমাণ দু’হাজার কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে।
১৩১৯
নিটের ফলাফল নিয়ে আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন অলখ। তাঁর আইনজীবী সওয়াল করেন, এই বিতর্কের ফলে জাতীয় টেস্টিং এজেন্সির প্রতি ছাত্রছাত্রীদের ভরসা তলানিতে ঠেকেছে। একমাত্র উপযুক্ত তদন্তই সেই বিশ্বাস ফেরাতে পারে।
১৪১৯
নিটের নিয়ম অনুযায়ী, একটি প্রশ্নের ঠিক উত্তরে ৪ নম্বর পান পরীক্ষার্থীরা। উত্তর ভুল হলে বাড়তি আরও এক নম্বর কাটা যায়। অর্থাৎ, কেউ ভুল উত্তর লিখলে পাঁচ নম্বর কাটা যাওয়ার কথা।
১৫১৯
এই হিসাবে, সব ক’টি প্রশ্নের উত্তর ঠিক হলে ৭২০ পেতে পারেন পরীক্ষার্থীরা। একটি প্রশ্নের উত্তর না লিখলে ৭১৬ পাওয়ার কথা। একটি প্রশ্ন ভুল লিখলে সর্বোচ্চ ৭১৫ নম্বর পেতে পারেন পরীক্ষার্থী।
১৬১৯
নিটের ফলপ্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, কেউ ৭১৮ বা ৭১৭ নম্বরও পেয়েছেন। যা সাধারণ হিসাবে সম্ভব নয়। এই নম্বর নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে।
১৭১৯
এনটিএ-র দাবি, কিছু পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রে দেরি করে পৌঁছনোয় তাঁদের বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়েছিল। সেই কারণেই এমন নম্বর পেয়ে থাকতে পারেন কেউ কেউ। এই দাবির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়।
১৮১৯
এ ছাড়া, নিটের ফলপ্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, যাঁরা ৭২০ পেয়ে প্রথম হয়েছেন, তাঁদের অনেকে একটি পরীক্ষাকেন্দ্রেই ছিলেন। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগও তুলছেন কেউ কেউ।
১৯১৯
আপাতত দেড় হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রীর বাড়তি নম্বর বাতিল করা হয়েছে। তবে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি। আগামী ৮ জুলাই পর্যন্ত মামলার শুনানি স্থগিত রাখা হয়েছে। (এই প্রতিবেদনটি প্রথম বার প্রকাশের সময়ে লেখা হয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নিট পরীক্ষার্থীদের বাড়তি নম্বর বাতিল হয়েছে। তা ভুল। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ওই নম্বর বাতিলের কথা আদালতে জানানো হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।)