371 days in space, NASA astronaut Frank Rubio achieves new Record dgtl
Astronaut
বাড়ি ফেরার উপায় নেই, জীবনের একটি বছর তাই মহাকাশেই ভেসে থাকলেন মহাকাশচারী
মহাকাশে ১৮০ দিনের সফরের পরিকল্পনা নিয়ে বেরিয়েছিলেন নাসার মহাকাশচারী রুবিও। তাঁর সঙ্গে ওই অভিযানে যোগ দিয়েছিলেন রাশিয়ার মহাকাশচারী সের্গেই প্রোকোপেভ এবং দিমিত্রি পেতেলিন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৪৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
বেরিয়েছিলেন ছ’মাসের সফরে। কিন্তু বিপদে পড়ে টানা এক বছরেরও বেশি সময় ভেসে থাকতে হল মহাকাশে।
০২১৫
৩৭১ দিন মহাকাশে কাটিয়ে সম্প্রতি পৃথিবীতে ফিরেছেন নাসার এক মহাকাশচারী। নাম ফ্র্যাঙ্ক রুবিও। তাঁর সঙ্গে রাশিয়ার দুই মহাকাশচারীও আটকে পড়েছিলেন মহাকাশে।
০৩১৫
২৪ সেপ্টেম্বর, গত বুধবার কাজাখস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আছড়ে পড়ে একটি স্পেস ক্যাপস্যুল। তার ভিতর থেকেই উদ্ধার করা হয় তিন মহাকাশচারীকে।
০৪১৫
যদিও এই স্পেস ক্যাপস্যুলটিতে ফেরার কথা ছিল না রুবিওদের। কয়েক সপ্তাহ আগেই এই ক্যাপস্যুলটি তড়িঘড়ি যেমন তেমন ভাবে প্রস্তুত করে জরুরি ভিত্তিতে মহাকাশে পাঠায় নাসা।
০৫১৫
অবশ্য তাড়াহুড়ো করে পাঠানো হলেও শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব নিয়ে মহাকাশচারীদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে পেরেছে এই ক্যাপসুল। যা এর আগেরটি পারেনি।
০৬১৫
রুবিওদের জন্য নাসা আগেও একটি ক্যাপসুল পাঠিয়েছিল মহাকাশে। তিন মহাকাশচারীর জন্য অপেক্ষাও করছিল সেই ক্যাপসুল। কিন্তু পৃথিবীর দিকে রওনা হওয়ার আগেই তাতে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। সমস্যার শুরু সেখান থেকেই।
০৭১৫
মহাকাশে ১৮০ দিনের সফরের পরিকল্পনা নিয়ে বেরিয়েছিলেন নাসার মহাকাশচারী রুবিও। তাঁর সঙ্গে ওই অভিযানে যোগ দিয়েছিলেন রাশিয়ার মহাকাশচারী সেরগেই প্রোকোপেভ এবং দিমিত্রি পেতেলিন। মূলত মহাকাশ স্টেশনেই থাকার কথা ছিল তিন জনের। সঙ্গে ছিল নির্দিষ্ট কিছু দায়িত্বও।
০৮১৫
সফর যখন প্রায় শেষের পথে, অর্থাৎ মাস চারেক পেরিয়ে গিয়েছে, তখন মহাকাশচারীদের ফিরিয়ে আনার জন্য মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছয় নাসা থেকে পাঠানো সোয়ুজ ক্যাপস্যুল। কিন্তু তাতে হঠাৎ ধাক্কা লাগে মহাকাশে ভেসে থাকা ‘স্পেস জাঙ্ক’ বা মহাকাশ জঞ্জালের।
০৯১৫
গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের শেষে ঘটে এই ঘটনা। এই ঘটনায় ভেস্তে যায় মহাকাশচারীদের ঘরে ফেরার পরিকল্পনা। কারণ আকস্মিক ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সোয়ুজ ক্যাপসুলের রেডিয়েটর বা বিকিরণ যন্ত্রটি।
১০১৫
ক্যাপসুলের এই রেডিয়েটরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্যাপসুলের ভিতরে মহাকাশচারীদের থাকার মতো উপযুক্ত তাপমান বজায় রাখে এই রেডিয়েটর। বাইরের প্রচণ্ড তাপেও ভিতরে ঠান্ডা ভাব বজায় রাখা সম্ভব হয় এই রেডিয়েটরের সাহায্যেই। তাই বাধ্য হয়েই বন্ধ করতে হয় মহাকাশচারীদের ফেরানোর পরিকল্পনা। কারণ ওই ক্যাপসুলে ফেরানোর চেষ্টা করার অর্থ তাঁদের জীবনের ঝুঁকি নেওয়া।
১১১৫
ওই ক্যাপসুলটিকে বাতিল করতে বাধ্য হয় নাসা। মহকাশচারীদের ফেলেই পৃথিবীতে ফিরে আসে প্রথম ক্যাপসুল। অনির্দিষ্ট কালের জন্য মহাকাশ স্টেশনে থেকে যান তিন মহাকাশচারী।
১২১৫
এর পরেই তড়িঘড়ি শুরু হয় দ্বিতীয় ক্যাপসুল বানানোর কাজ। গত বুধবার তাতে চড়েই পৃথিবীতে ফিরেছেন তিন মহাকাশচারী। অবশ্য তত দিনে জীবনের একটি বছর মহাকাশে কাটিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। খাওয়াদাওয়া, তেষ্টা মেটানো, বর্জ্য ত্যাগ সবই হয়েছে মহাকাশ স্টেশনের সীমিত যোগানে।
১৩১৫
বুধবার কাজাখাস্তান থেকে উদ্ধার করার পর সংবর্ধনা জানানো হয় ওই তিন মহাকাশচারীকে। মহাকাশ গবেষকেরা তাঁদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘‘আপনারা আগে নিজেদের বাড়ি ফিরুন। পরিবারের কাছে ফিরুন। আপনাদের জন্য এক বছর ছ’দিন ধরে অপেক্ষা করছেন প্রিয়জনেরা। এই একটি বছর উদ্বেগে কাটিয়েছেন প্রত্যেকেই।’’
১৪১৫
তবে জীবনের একটি বছর হারালেও সবটাই খরচের খাতায় যায়নি এই তিন মহাকাশচারীর। যে দায়িত্ব পালনে তাঁরা গিয়েছিলেন, সেই কাজ তাঁরা শেষ তো করেইছেন, পাশাপাশি একটি নতুন রেকর্ডও গড়েছেন তিন জনে।
১৫১৫
মহাকাশে দীর্ঘ সময় থাকার নতুন রেকর্ড এখন নাসার মুকুটে। এর আগে নাসার মহাকাশচারীদের ৩৫৫ দিন মহাকাশে থাকার রেকর্ড ছিল। নিজের রেকর্ডই ভেঙে নতুন কৃতিত্ব অর্জন করল নাসা। আমেরিকার ইতিহাসে এর আগে কোনও মহাকাশচারী ৩৭১ দিন টানা মহাকাশে থাকেননি। যদিও দীর্ঘতম মহাকাশবাসের কৃতিত্ব এখনও রাশিয়ার দখলে। নব্বইয়ের দশকে ৪৩৭ দিন টানা মহাকাশে ছিলেন রাশিয়ার মহাকাশচারী।