Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Presents
Retirement Plan

অবসরের জন্য সঞ্চয়ের রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে শুধু মাসিক আয়ের কথা ভাবলেই হবে না

সব ডিম যেমন এক ঝুড়িতে রাখতে নেই, তেমন আপনার সঞ্চয়ের পরিকল্পনাতেও নানান প্রকল্পের উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নীলাঞ্জন দে
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৪:২৯
Share: Save:

অবসরের আয়ের পরিকল্পনা করছেন। ভাবছেন মাসিক আয়ের কথা। কিন্তু সমস্যা হল গোটা মাসের চাহিদা নানান খণ্ডে ভাগ করা— ওষুধের খরচ, দৈনন্দিন বাজারের খরচ। তেমনি সঞ্চয়েরও কিন্তু সমান ভাগ থাকা উচিত। মাসের চাহিদা যেমন থাকে তেমনি থাকবে মেডিক্লেমের মতো বাৎসরিক খরচের চাপও। আর সঞ্চয়ের চরিত্রও হতে হবে এই সব চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়েই।

আরেকটি ব্যাপারও মাথায় রাখতে হবে। সব ডিম যেমন এক ঝুড়িতে রাখতে নেই, তেমন আপনার সঞ্চয়ের পরিকল্পনাতেও নানান প্রকল্পের উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি। বেশি ঝুঁকি মানে বেশি আয়। বুড়ো আঙুলের এই নিয়মটা মাথায় রেখে কিন্তু আপনাকে এগোতে হবে। মাথায় রাখতে হবে শুধু পরিকল্পনা করলেই হবে না। সেই পরিকল্পনাকে কিন্তু এগিয়ে নিয়েও যেতে হবে। মাথায় রাখতে হবে প্রতিটি খণ্ডের কথাও।

আপনি পরিকল্পনার স্তর থেকে এগিয়ে যখন বিনিয়োগের রাস্তা বাছতে শুরু করছেন তখন বাছছেন নানান পথ। তাদের একের থেকে অন্যের চরিত্র আলাদা। আলাদা ঝুঁকির চরিত্রও। ঋণপত্রে বিনিয়োগ করা আর শেয়ার বা ইকুইটি ভিত্তিক ফান্ডের চরিত্র আর ঝুঁকি সম্পূর্ণ আলাদা। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে অনেক সময়েই ইকুইটিতে বেশি ঝুঁকি এবং ঋণপত্রে কম এই বুড়ো আঙুলের নিয়মও অতি সরলীকৃত হয়ে উঠেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আমরা কেন বিনিয়োগরে ঝুড়ি নানান ঝুঁকির প্রকল্প দিয়ে ভরার কথা বলি? তার কারণ একটাই। প্রতিটি অ্যাসেট ক্লাসের নিজস্ব ঝুঁকি আছে, রিটার্নের হেরফের সেই জন্যই হয়। বাজারের কারণে হয়ত ঋণপত্রের বাজার খারাপ, কিন্তু ইক্যইটির বাজার খুব ভাল। তাই আপনার ঋণপত্রে আয়ের খামতি পুষিয়ে দেবে ইক্যুইটির বিনিয়োগ।

মুড়ি মিছরির দর যেমন এক করা যায় না, তেমনই প্ল্যানের অংশগুলির কর্মকাণ্ড একই আতস কাচের ভিতর দিয়ে দেখা উচিত নয়। সময়মতো যদি শুরু করে থাকেন তাহলে ইকুইটি-ভিত্তিক পরিকল্পনার জন্য আলাদা সময় বরাদ্দ করুন, আখেরে লাভবান হবেন। তবে সে ক্ষেত্রে শেয়ার মার্কেটে ভোলাটিলিটির দরুন রিটার্নের ওঠাপড়া থাকবেই, আর সেজন্য আপনাকে মানসিকভাবে তৈরি থাকতে হবে। নিজে না পারলে উপযুক্ত ফান্ড ম্যানেজার এর মাধ্যমে করুন। এছাড়াও সময়ের অভাবে অথবা রিস্কের বহর কমানোর জন্য যদি ফিক্সড ইনকাম-ভিত্তিক পরিকল্পনা করেন, তাহলে ধারাবাহিকভাবে রিটার্ন পেতে পারেন। তাতে পোর্টফোলিওর স্টেবিলিটিও বাড়বে, যদিও সামগ্রিকভাবে রিটার্ন তাতে কম হবে।

আপনার প্ল্যান অনুযায়ী ইনভেস্টমেন্ট যেভাবেই করুন না কেন, মনে রাখতে হবে কখনো যেন লিকুইডিটির অভাব না হয়। অতএব বেরিয়ে যাবার একটা দরজা সর্বদা খুলে রাখা উচিত। অর্থাৎ বিক্রি করে দেওয়ার উপায় যেন জানা থাকে, অসুবিধায় পড়লে সন্ধানে যেন সময় নষ্ট না হয়। সে ক্ষেত্রে পোর্টফোলিওতে রিয়েল এস্টেটের অংশটি কমিয়ে আনলে ভাল হয়, কারণ স্থাবর প্রপার্টি মার্কেটে সবসময় বিক্রির সুযোগ চটজলদি পাওয়া যায় না।

এই সূত্রে জেনে রাখতে হবে যে বিক্রির দৌলতে যদি ক্যাপিটাল গেনস হয়, তাহলে আয়করের নিয়মে আপনাকে লাভের উপর ট্যাক্স দিতে হবে। সেই জন্য ট্যাক্স ছাড়ের সুবিধা কিভাবে পাবেন, বা কতদূর পর্যন্ত পেতে পারেন, তা আগে থেকেই জেনে রাখুন, বিশেষত যদি রিটায়ারমেন্টের পর আপনি সিনিয়ার সিটিজেন হয়ে যান এবং সেই সুবাদে নির্দিষ্ট কর ছাড়ের সুযোগ পেতে চান।

আসলে ট্যাক্স-জনিত নিয়মকানুনের জ্ঞান আপনার অবসরের পরিকল্পনার এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, সেটিকে বর্জন করলে চলবে না। আপনার মোট রিটার্ন, মনে রাখুন, ট্যাক্স দেওয়ার পরেই কষতে হবে। তার আগে পোর্টফোলিও চালানোর খাতে (ব্রোকারেজ, কমিশন, লোড, ম্যানেজমেন্ট ফি ইত্যাদি) অন্যান্য খরচের হিসাবও তৈরি করতে হবে। খরচ এবং ট্যাক্স, এই দুই একত্র করে বাদ দিন। যা পড়ে থাকবে তাই আপনার নিট লাভ, তবে মূল্যবৃদ্ধির কথাটাও মাথায় রাখতে হবে কিন্তু।

অন্য বিষয়গুলি:

Retirement Plan Monthly Budget Income savings
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy