প্রতীকী ছবি
নতুন বছরে কী করা উচিত বিনিয়োগকারীদের? প্রশ্নটা খুব আকর্ষণীয় হলেও এক কথায় আমার উত্তর – আলাদা কিছুই নয়! হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন আপনি। ২০২৩ সালে বিনিয়োগকারীদের আলাদা করে করণীয় কিছুই নেই। কেন?
নতুন বছর, এক নিয়ম
কোভিড উত্তর ২০২২ ছিল চ্যালেঞ্জের। আর গত বছর বিনিয়োগকারীদের কাছে আমাদের যা পরামর্শ ছিল চলতি বছরেও তার থেকে আমরা নড়ছি না। মাথায় রাখুন এখনও যদি বিনিয়োগ শুরু না করে থাকেন, এটাই কিন্তু সময়। এক্ষুনি বিনিয়োগ শুরু করুন। বিনিয়োগের জগতে প্রবেশ করার কোনও সঠিক সময় নেই। আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদি এবং স্বল্পমেয়াদি আর্থিক লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে চান তা হলে অবশ্যই বিনিয়োগের বাজারে এবার পা রাখুন।
আর যদি ইতিমধ্যেই বিনিয়োগ করা শুরু করে থাকেন, তা হলে একবার লগ্নির ঝুলিতে চোখ রাখুন। দেখে নিন আপনার লগ্নি ঠিক রাস্তায় হাঁটছে কিনা। এবং আপনার লক্ষ্য পূরণের জন্য যথেষ্ট টাকা পাচ্ছেন কিনা।
প্রতিটি মানুষের নিজস্ব স্বপ্ন ও লক্ষ্য রয়েছে। আর আজকের দিনে দাঁড়িয়ে নিজের স্বপ্ন আর লক্ষ্য পূরণ করতে হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে টাকা থাকা জরুরি। আমাদের সমস্ত স্বপ্নের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আর্থিক বাধ্যবাধকতা। উদাহরণ হিসাবে ধরুন আপনি হিমালয়ের কোলে বসে ধ্যান করতে চান। খুব ভাল কথা। কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর জন্য এবং থাকার জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকার প্রয়োজন। এমনকি পরোপকারী কোনও লক্ষ্য পূরণের নেপথ্যেও টাকার অঙ্ক থাকবেই কিন্তু।
আমাদের পরামর্শ, ধাপে ধাপে সব কিছু ঠিক করুন। প্রথমে নিজের লক্ষ্য স্থির করুন। প্রতিটি লক্ষ্য পূরণের জন্য কত টাকা লাগবে তা যোগ করে তালিকা তৈরি করুন। ভাল আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ নিন। এতে আপনার বিনিয়োগের যাত্রা আরও মসৃণ হবে এবং আর্থিক দুশ্চিন্তাও অনেকটা কমবে।
লক্ষ্য থাকুক স্বাস্থ্যে
শহরের প্রতিটি কোনায় জিম দেখতে পাই আমরা। কারণ স্বাস্থ্য ঠিক রাখার সচেতনতা বাড়ছে। একেবারে ফিট থাকতে এবং ম্যারাথন দৌড়তে কে না চায়! তবে শারীরিক শক্তি কিন্তু ম্যারাথনের কেবল একটি দিকমাত্র। অন্য দিকটি হল মানসিক দৃঢ়তা এবং ভাল করার সংকল্প। এমন অনেক প্রশিক্ষক আছেন যাঁরা আপনাকে দৌড়নোর জন্য প্রশিক্ষণ দেবেন কিন্তু মানসিক দিকটির উপরও ফোকাস করবেন এরকম প্রশিক্ষক খুব কমই পাবেন। এই এই অংশটি আমার কাছে শারীরিক সুস্থতার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতে এই বিষয়টি নিয়ে এখনও ছুঁৎমার্গ রয়ে গিয়েছে। যদিও ধীরে ধীরে পরিস্থিতির খানিকটা বদল ঘটেছে। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে মানুষ উদ্বেগ ও হতাশা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলতে দ্বিধা বোধ করেন না। মানসিক স্বাস্থ্য প্রসঙ্গে আমরা খুব কম গুরুত্ব দিয়েছি যা আজকের মানসিক চাপের মাত্রা বেশ খানিকটা বাড়িয়ে তুলেছে। আর এটি শারীরিক স্বাস্থ্যের তুলনায় অনেক বেশি জরুরি।
২০২১ -এর অক্টোবরে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা থেকে জানা যায়, বিশ্বজুড়ে বেশিরভাগ পেশাদারদের তুলনায় ভারতীয় পেশাদাররা দুশ্চিন্তায় বেশি ভোগেন। এবং উত্তরদাতাদের মধ্যে প্রায় ৪৪ শতাংশ ভারতীয় জানিয়েছেন তাঁরা আর্থিকভাবে লড়াই করছেন। তাঁরা মনে করেন মাসিক খরচ এবংসন্তানের শিক্ষা এবং বিয়ের জন্য দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য পূরণের জন্য পর্যাপ্ত টাকা নেই তাঁদের হাতে। সুতরাং আপনার অর্থব্যবস্থা সঠিকভাবে পরিচালনা করা জরুরি। আর ঠিক এই কারণেই আপনার একজন আর্থিক উপদেষ্টার প্রয়োজন যিনি এই মূহুর্তে আপনার আর্থিক হাল ধরতে সঠিক পরামর্শ দিতে পারেন। দুশ্চিন্তা কম হলে মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে যা আপনার সামগ্রিক সুস্থতা ডেকে আনে।
উপসংহার
প্রিয় পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যে আমি ঠিক এই সুযোগটাকে সম্পদ শ্রেণী, মিউচুয়াল ফান্ড, আন্তর্জাতিক স্টক সম্পর্কে ভারী আলোচনা করে আপনাদের বিব্রত করতে চাই না। আপনাকে এই ধরনের পরামর্শ দেওয়ার জন্য বহু মানুষ রয়েছেন। কিন্তু বিনিয়োগের গুরুত্ব এবং একটি ভাল আর্থিক পরিকল্পনা একজনের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে তা আপনার কাছে তুলে ধরাই মূল উদ্দেশ্য আমার।
দুশ্চিন্তার সব থেকে বড় উৎস হল টাকা। আমাদের লক্ষ্য নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা থাকে আমাদের। এবং একজন নির্ভরযোগ্য গাইড বিপর্যস্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে সাহায্য করতে পারেন। আর এই বিষয়টি দুশ্চিন্তা কমিয়ে ভবিষ্যতের জন্য আর্থিক দিক দিয়ে আমাদের আত্মবিশ্বাস খানিকটা বাড়িয়ে তোলে।
মনে রাখবেন, বাজার কিন্তু সব সময় অস্থির। এবং এটাই স্বাভাবিক। শীর্ষে থাকা একটি তহবিল আজ বা আগামীকাল সেরা হতে পারে। তবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই কিন্তু। তাই আর্থিক পরিকল্পনা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং, প্রিয় পাঠক ২০২৩ –এ আপনার আর্থিক স্বাস্থ্যের দিকে মনোযোগ দিন এবং নিজের মানসিক স্বাস্থ্যকেও উপেক্ষা করবেন না।
আপনার আর্থিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য এই পাঁচটি বিষয় খেয়াল রাখুন:
১। আপনার চাহিদা, ইচ্ছে এবং স্বপ্ন সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকুক
২। প্রতিটি আর্থিক লক্ষ্যের জন্য আলাদা আলাদা পরিকল্পনা রাখুন
৩। তাড়াতাড়ি বিনিয়োগ শুরু করুন। এবং নিয়মিত বিনিয়োগ করুন
৪। অ্যাসেট অ্যালোকেশান অনুসরণ করুন এবং ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকুন৫। বিনিয়োগের সময় আবেগ দূরে রাখুন
প্রতিবেদক কো-ফাউন্ডার অ্যান্ড সিইও, এপসিলন মানি মার্ট। বক্তব্য নিজস্ব।
বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাধান খুঁজতে সঞ্চয় নিয়ে আমাদের প্রশ্ন পাঠান — takatalk2023@abpdigital.in এই ঠিকানায় বা হোয়াটস অ্যাপ করুন এই নম্বরে — ৮৫৮৩৮৫৮৫৫২আপনার আয়, খরচ এবং সঞ্চয় জানাতে ভুলবেন না। পরিচয় গোপন রাখতে চাইলে অবশ্যই জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy