প্রতীকী ছবি
মাইক্রো ক্যাপ স্টকে কি বড় মাপের লগ্নি করা উচিত? এই প্রশ্নটা এখন বাজারে ঘুরছে, বিশেষত কিছু মাইক্রো ক্যাপ শেয়ারের ভাল রকম দাম বাড়ার কারণেই। আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার জন্য জেনে নেওয়া যাক মাইক্রো ক্যাপ সম্বন্ধে কিছু কথা। মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের হিসাবে লার্জ ক্যাপ (প্রথম থেকেএকশ), মিড ক্যাপ (১০১ তম থেকে ২৫০ তম) এবং স্মল ক্যাপ (২৫১ তম এবং তাঁর পর যেগুলি আসে) – এইতিন প্রধান শ্রেণীভাগের বিষয়ে বিনিয়োগকারীরা জানেন। সাধারণত যে স্টকের র্যাঙ্কিং ৫০০ থেকে শুরু,তাদেরই মাইক্রোক্যাপ হিসাবে গণ্য করা হয়। এখানে মনে করিয়ে দিই, - “মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন”শেয়ার বাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি। চলতি শেয়ারের চলতি বাজার দরের সঙ্গে সেই সংস্থার যত শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীর হাতে আছে (আউটস্টান্ডিং) যদি গুণ করা হয়, তা হলে আমরা সোজা কথায় যা পাই তা হাল সব এক থাকা অবস্থায় বাজারে সংস্থার মোট শেয়ারের দাম মার্কেট ক্যাপ পাওয়া যায়। আমাদের দেশে অগ্রণী কোম্পানিগুলির একটি বড় অংশই লার্জক্যাপ শ্রেণীর। সব থেকে বৃহৎ সংস্থাগুলির মধ্যে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, টিসিএস, ইনফোসিস, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, আইটিসি, আইসিআইসিআইব্যাঙ্ক ইত্যাদির নাম করা যায়।
বাজারের সাম্প্রতিক প্রবণতা দেখে মনে হচ্ছে মাইক্রো ক্যাপের বিনিয়োগে আগামী দিনে লাভের সম্ভাবনা প্রবল। হালে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্তত এ কথা মনে করার সঙ্গত কারণ আছে। উদাহরণ হিসাবে নিফটি মাইক্রো ক্যাপ ২৫০ ইনডেক্সের সারা বছরের ওঠা-পড়া দেখা যাক। এই সূচকটির ৫২ সপ্তাহের হাই(সর্বাধিক) ছিল ১১,৬৯৩.১০ পয়েন্ট। ২১ ফেব্রুয়ারি, ’২৩ বাজার বন্ধ হওয়ার সময় তা ছিল ১০,৬৩৮.৭০ পয়েন্ট। এই বিরাট ফারাক বেশির ভাগ নামী বা জনপ্রিয় ইন্ডেক্সেই দেখা যায় নি গত এক বছরে। এটা কিন্তু একটা বড় সুযোগ হিসাবে দেখা যেতে পারে। আমরা আগেই আলোচনা করেছি, শেয়ার বাজারের ওঠা-পড়া আসলে বিনিয়োগ থেকে লাভ তোলার জন্য ভাল। এই ওঠা-পড়ার উপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে সিপয়ের যুক্তি। বিভিন্ন দামে বিভিন্ন সময়ে বিনিয়োগ করে সার্বিক বিনিয়োগের মূল্য বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ নেওয়াই সিপয়ের যুক্তি। একই যুক্তি এখানেও খাটে। বাজারে সূচকের নাগরদোলায় এখন তা নিচের দিকে বলে মনে করা হচ্ছে যে এই জাতীয় শেয়ার নির্ভর ফান্ডেও বিনিয়োগ করার এটাই উৎকৃষ্ট সময়।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতির বিচারে এও বলা যায় যে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্র থেকে ভাল মাইক্রোক্যাপ স্টক উঠে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। টেকনোলজি, কেমিক্যালস, ফার্মাসিউটিক্যালস, ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ইত্যাদিতে কিছু নাম জনপ্রিয়তা পাবে বলে বিনিয়োগকারীরা বিশ্বাস করেন। ব্রোকারদের মতেএই সমস্ত ক্ষেত্রে বাছাই করা সংস্থাগুলি ভাল ফল দেখাবে আগামী দিনে। লাভের হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেনতুন বিনিয়োগও হবে এই সব স্টকে। লগ্নিকারীদের জন্য মাইক্রোক্যাপ তাই স্ট্র্যাটেজিক বা কৌশলগত কারণে সঞ্চয়ের ঝুলিতে আরও জায়গা করে নেবে ভবিষ্যতে।
তবে লগ্নিকারীরা তা যেন জেনে বুঝেই এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার ঝুঁকি নেন। মাইক্রো ক্যাপে যেমন লাভের সম্ভাবনা আছে তেমনই ঝুঁকির পাল্লাও বেশ ভারি। তাই ঝুঁকি সম্বন্ধে সম্পূর্ণ সজাগ থাকাই উচিত হবে ইনভেস্টরদের। এর মূল কারণ হচ্ছে বাজারে এই ধরনের শেয়ারের চাহিদা খুব বিস্তৃত নাও হতে পারে।তাই মাইক্রোক্যাপে লগ্নি করতে চাইলে, তিনি যেন লিক্যুইডিটি সংক্রান্ত ঝুঁকি বিষয়ে সজাগ থাকেন। সরাসরি না করতে চাইলে ফান্ডের মাধ্যমে করা যেতে পারে। তবে মাইক্রোক্যাপে লগ্নি করে এমন ফান্ডের সংখ্যাও কম। এই ধরনের ফান্ডে এসআইপির মাধ্যমে বিনিয়োগের পরামর্শ দিচ্ছেন উপদেষ্টারা।সাধারণভাবে ইক্যুইটি পোর্টফোলিওর ১৫-২০ শতাংশ মাইক্রোক্যাপে লগ্নি করা যেতে পারে বলে তাঁরা জানাচ্ছেন। অবশ্য এই সম্বন্ধে বিনিয়োগকারীর ‘রিস্ক অ্যাপেটাইট’ – অর্থাৎ ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা – কী ধরনের, তাও বুঝে নিতে হবে।
প্রতিবেদক সঞ্চয় উপদেষ্টা। বক্তব্য নিজস্ব।
বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাধান খুঁজতে সঞ্চয় নিয়ে আমাদের প্রশ্ন পাঠান — takatalk2023@abpdigital.in এই ঠিকানায় বা হোয়াটস অ্যাপ করুন এই নম্বরে — ৮৫৮৩৮৫৮৫৫২আপনার আয়, খরচ এবং সঞ্চয় জানাতে ভুলবেন না। পরিচয় গোপন রাখতে চাইলে অবশ্যই জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy