প্রতীকী ছবি।
এর আগে কয়েকটি প্রতিবেদনে আমরা আলোচনা করেছি দেশের সীমানার বাইরে বিনিয়োগ ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নিয়ে। আসুন এ বার দেখে নেওয়া যাক একটি বিশেষ ঝুঁকি।
বিদেশে বিনিয়োগের প্রথম ঝুঁকি অবশ্যই সেই দেশের রাজনৈতিক অবস্থা। ভাবুন তো, আপনি আফগানিস্তানকে বেছে নিলেন বিনিয়োগের গন্তব্য হিসাবে! নিলেন নয়, পড়ুন নিয়েছিলেন। উদাহরণ হিসাবেই ভাবুন। যদি সেই বিনিয়োগ সম্ভব হত এবং আপনি তা করে থাকতেন, তাহলে আপনার গোটা বিনিয়োগের টাকার পুরোটাই জলে।
তাই বিদেশের বাজারের লাভ তুলতে শুধু যে সেখানকার বাজার দেখে বিনিয়োগ করলেই লাভ হবে তা নয়। রাজনৈতিক অবস্থা এবং সেই দেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কিন্তু একটা বড় বিবেচনা ঝুঁকির হিসাবে।
ভারতের সঙ্গে সেই দেশের সম্পর্ক কী রকম তাও কিন্তু একটা বড় বিবেচনার বিষয়। আজ হয়তো সেই দেশের বাজারে বিনিয়োগ করার সুযোগ আছে। সেই দেশের বাজারও ভাল করছে। কিন্তু দেখা গেল সেই দেশটি ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে এমন একটি অবস্থান নিল যে আপনার বিনিয়োগ ফিরিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনার উপরেই একটা বড় প্রশ্নচিহ্ন এসে গেল।
এর সঙ্গে আছে সেই দেশের বাজারের চরিত্র। কোনও দেশের নিজস্ব বাজারই এত বড় যে বহির্বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেলেও সেই দেশের অর্থনীতি গুটিয়ে গেলেও ভেঙে পড়বে না। আবার এমন দেশও থাকতে পারে যার নিজের বাজারের পরিসর খুব ছোট। কিন্তু রফতানির বাজার এত বড় যে রফতানি বন্ধ হয়ে গেলে সেই দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়তে পারে। যেমন তাইওয়ান। তাইওয়ানের জাতীয় উৎপাদনের ৭০ শতাংশই আসে রফতানি থেকে।
এ বার তাইওয়ানকে চিন নিজের বলে দাবি করছে। অথচ তাইওয়ানের আর্থিক বৃদ্ধির হার অব্যাহত। ২০২১ সালেও কোভিডের অত্যাচার সামলে তাইওয়ানের আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল ঈর্ষণীয়। তাই বিনিয়োগের গন্তব্য হিসাবে তাইওয়ানকে ভাবনায় রাখা যেতেই পারে। কিন্তু একই সঙ্গে চিনের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে কাল কী হবে তা নিয়েও একটা বড় অনিশ্চয়তা থেকে যাচ্ছে। এ বার আপনি লাভের সুযোগ আর এই ঝুঁকি কী ভাবে সামলাবেন তা কিন্তু সম্পূর্ণই আপনার উপর।
পাশাপাশি আরও একটা ঝুঁকি মাথায় রাখতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার কথাই ধরা যাক। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আমাদের বাজারের উঠা-পড়ার (কোরিলেশন) তালমিল খুব ঘনিষ্ঠ। তাই অনেকেই বলেন দক্ষিণ কোরিয়ায় বিনিয়োগ নিয়ে একটু ভাবতে। পাশাপাশি এটাও ঠিক যে দক্ষিণ কোরিয়ার বেশ কয়েকটি শিল্প এখন বিশ্ব দাপিয়ে ফিরছে। তাই শুধু দেশ না দেখে আমরা শিল্পক্ষেত্রের দিকেও নজর দিতে পারি।
তাইওয়ান এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে শুধুই উদাহরণ হিসাবে দেখতে হবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উপদেশ হিসাবে নয়। মাথায় রাখবেন, সহজ করে বোঝানোর অনেক অসুবিধাও থাকে। কিন্তু ঝুঁকির আন্দাজ বা ধারণা তৈরি করার জন্যই এই উদাহরণের অবতারণা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy