Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Bonds

Bonds: ঝুঁকি চড়া, মুনাফাও আকাশছোঁয়া, ঋণপত্রের ক্যারিশমা অনেক

বন্ডে বিনিয়োগ যে একেবারে ঝুঁকিশূন্য তা কিন্তু নয়। কারণ, বন্ডের বাজারদর সাধারণত ব্যাঙ্ক সুদের উল্টো দিকে হাঁটে।

তন্ময় দাস
শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১০:৪৬
Share: Save:
০১ ১০
যে বিনিয়োগকারী চড়া রিটার্নের আশায় স্টক এক্সচেঞ্জে উঁকি দেন, ঋণপত্রে লগ্নি করে সেই পরিমাণ মুনাফা কিন্তু ঘরে তোলা শক্ত। কিন্তু তেমনই সংস্থার দেউলিয়া ঘোষণা কিংবা দেশের অর্থনীতি রসাতলে যাওয়ার মতো কিছু না ঘটলে, রাতারাতি নাটকীয় পতনের আশঙ্কাও সেখানে বেশ কম। তাই ঝুঁকির আগুনে হাত না পুড়িয়েও যাঁরা ভাল রিটার্ন পেতে আগ্রহী, বন্ডের বাজার তাঁদের পক্ষে মন্দ নয়।

যে বিনিয়োগকারী চড়া রিটার্নের আশায় স্টক এক্সচেঞ্জে উঁকি দেন, ঋণপত্রে লগ্নি করে সেই পরিমাণ মুনাফা কিন্তু ঘরে তোলা শক্ত। কিন্তু তেমনই সংস্থার দেউলিয়া ঘোষণা কিংবা দেশের অর্থনীতি রসাতলে যাওয়ার মতো কিছু না ঘটলে, রাতারাতি নাটকীয় পতনের আশঙ্কাও সেখানে বেশ কম। তাই ঝুঁকির আগুনে হাত না পুড়িয়েও যাঁরা ভাল রিটার্ন পেতে আগ্রহী, বন্ডের বাজার তাঁদের পক্ষে মন্দ নয়।

০২ ১০
তবে বন্ডে বিনিয়োগ যে একেবারে ঝুঁকিশূন্য তা কিন্তু নয়। কারণ, বন্ডের বাজারদর সাধারণত ব্যাঙ্ক সুদের উল্টো দিকে হাঁটে। ব্যাঙ্ক জমায় সুদ কমলে বন্ডের দর বাড়ে। আর সুদ বাড়লে তার দাম কমে। যার ফলে সেকেন্ডারি মার্কেটে ঋণপত্রের দাম কমে যাওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়।

তবে বন্ডে বিনিয়োগ যে একেবারে ঝুঁকিশূন্য তা কিন্তু নয়। কারণ, বন্ডের বাজারদর সাধারণত ব্যাঙ্ক সুদের উল্টো দিকে হাঁটে। ব্যাঙ্ক জমায় সুদ কমলে বন্ডের দর বাড়ে। আর সুদ বাড়লে তার দাম কমে। যার ফলে সেকেন্ডারি মার্কেটে ঋণপত্রের দাম কমে যাওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়।

০৩ ১০
এ ছাড়া কোনও কারণে সংস্থা বা সরকারের আর্থিক অবস্থা সঙ্গীন হলে লগ্নির টাকা ফেরত না পাওয়ার ঝুঁকিও থেকে যায়। বন্ডই হোক বা শেয়ার, কষ্টের রোজগারের উপর একটু ভাল রিটার্নের আশায় তা বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ করে মানুষ। তাই ঋণপত্রে টাকা ঢালার আগে তা থেকে আখেরে কতটা রিটার্ন পাওয়া যাবে তা বিশদে জেনে নেওয়া ভাল।

এ ছাড়া কোনও কারণে সংস্থা বা সরকারের আর্থিক অবস্থা সঙ্গীন হলে লগ্নির টাকা ফেরত না পাওয়ার ঝুঁকিও থেকে যায়। বন্ডই হোক বা শেয়ার, কষ্টের রোজগারের উপর একটু ভাল রিটার্নের আশায় তা বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ করে মানুষ। তাই ঋণপত্রে টাকা ঢালার আগে তা থেকে আখেরে কতটা রিটার্ন পাওয়া যাবে তা বিশদে জেনে নেওয়া ভাল।

০৪ ১০
ঋণপত্রে রিটার্নের কথা উঠলেই একটা শব্দ প্রায়শই ব্যবহার হয়। তা হল ‘ইল্ড’। কিন্তু ইল্ড কী, সেই সম্পর্কে অনেকেই অবগত নন। ইল্ডের অর্থ হল প্রাপ্য ‘সুদ’। বন্ডের বাজারে যা কুপন হিসেবে পরিচিত। একটু সহজ করে বললে, ১০০ টাকা দামের বন্ড বছরে ১০ টাকা সুদ দিলে তার কুপন হবে ১০%।

ঋণপত্রে রিটার্নের কথা উঠলেই একটা শব্দ প্রায়শই ব্যবহার হয়। তা হল ‘ইল্ড’। কিন্তু ইল্ড কী, সেই সম্পর্কে অনেকেই অবগত নন। ইল্ডের অর্থ হল প্রাপ্য ‘সুদ’। বন্ডের বাজারে যা কুপন হিসেবে পরিচিত। একটু সহজ করে বললে, ১০০ টাকা দামের বন্ড বছরে ১০ টাকা সুদ দিলে তার কুপন হবে ১০%।

০৫ ১০
সাধারণত এই হার সম্পূর্ণ মেয়াদের জন্য একই থাকে। এ ছাড়াও ওই কুপন না তুললে তা ফের বন্ডেই বিনিয়োগ হয়। ফলে সেটা কুপনের উপরে পাওয়া সুদ। তার মানে, প্রথম বছরে কুপন হিসেবে পাওয়া ওই ১০ টাকার উপরেও দ্বিতীয় বছরে তার ১০% (১ টাকা) সুদ পাবেন আপনি। বাজারে বন্ডের দর ওঠানামা করে। ফলে ১০০ টাকায় কেনা বন্ড ১১০ টাকায় বেচতে পারলে তা থেকেও ১০ টাকা মুনাফা ঘরে তোলা সম্ভব। মোট এই তিন ধরনের প্রাপ্তি মিলিয়ে যে মুনাফা হাতে পাবেন তা আপনার মোট বিনিয়োগের অনুপাতে কতখানি, সহজ কথায় তা-ই হল ওই বন্ডের ইল্ড।

সাধারণত এই হার সম্পূর্ণ মেয়াদের জন্য একই থাকে। এ ছাড়াও ওই কুপন না তুললে তা ফের বন্ডেই বিনিয়োগ হয়। ফলে সেটা কুপনের উপরে পাওয়া সুদ। তার মানে, প্রথম বছরে কুপন হিসেবে পাওয়া ওই ১০ টাকার উপরেও দ্বিতীয় বছরে তার ১০% (১ টাকা) সুদ পাবেন আপনি। বাজারে বন্ডের দর ওঠানামা করে। ফলে ১০০ টাকায় কেনা বন্ড ১১০ টাকায় বেচতে পারলে তা থেকেও ১০ টাকা মুনাফা ঘরে তোলা সম্ভব। মোট এই তিন ধরনের প্রাপ্তি মিলিয়ে যে মুনাফা হাতে পাবেন তা আপনার মোট বিনিয়োগের অনুপাতে কতখানি, সহজ কথায় তা-ই হল ওই বন্ডের ইল্ড।

০৬ ১০
ইল্ড হিসেব করার বেশ কয়েকটি পদ্ধতি আছে। একটি হল কারেন্ট ইল্ড। এই ইল্ডে হিসেব করা হয় যে এই মুহূর্তে কোনও বন্ড থেকে কেমন ইল্ড পাচ্ছেন। যে হেতু হিসাবটি এই মুহূর্তের, তার মানে বন্ডটি এখনও আপনার হাতে আছে। ফলে তা বেচে মুনাফার মুখ দেখার সম্ভাবনা এখানে নেই। বন্ডের কুপন ফের লগ্নি হওয়ার দরুণ প্রাপ্য সুদও এখানে হিসাব করা হয় না। তাই এখানে শুধু বন্ড থেকে যে মোট সুদ পাচ্ছেন, তা বন্ডের বর্তমান দামের যত শতাংশ, তা-ই হল কারেন্ট ইল্ড।

ইল্ড হিসেব করার বেশ কয়েকটি পদ্ধতি আছে। একটি হল কারেন্ট ইল্ড। এই ইল্ডে হিসেব করা হয় যে এই মুহূর্তে কোনও বন্ড থেকে কেমন ইল্ড পাচ্ছেন। যে হেতু হিসাবটি এই মুহূর্তের, তার মানে বন্ডটি এখনও আপনার হাতে আছে। ফলে তা বেচে মুনাফার মুখ দেখার সম্ভাবনা এখানে নেই। বন্ডের কুপন ফের লগ্নি হওয়ার দরুণ প্রাপ্য সুদও এখানে হিসাব করা হয় না। তাই এখানে শুধু বন্ড থেকে যে মোট সুদ পাচ্ছেন, তা বন্ডের বর্তমান দামের যত শতাংশ, তা-ই হল কারেন্ট ইল্ড।

০৭ ১০
এ বার আসা যাক ‘ইল্ড টু ম্যাচিওরিটি’র প্রসঙ্গে। এ ক্ষেত্রে দেখা হয় গ্রাহক মেয়াদের পুরো সময় বন্ডটি না ছেড়ে দিয়ে ধরে রাখলে, কেমন ইল্ড পেতে পারেন। ধরা যাক, বন্ডের দাম ১০০ টাকা। কুপন ১০। মেয়াদ দু’বছর। মনে করুন ইস্যু হওয়ার কিছুক্ষণ বা এক দিন পরেই ৯০ টাকায় সেই বন্ড কিনেছেন আপনি। এবং তা ধরে রাখছেন দু’বছর। সে ক্ষেত্রে প্রথম বছরের শেষে পাওয়া ১০ টাকা কুপনও ফের সেখানে লগ্নি হবে। ফলে মেয়াদ ফুরোলে মোট পাওয়া যাবে (১০০+১০+১১) = ১২১ টাকা।

এ বার আসা যাক ‘ইল্ড টু ম্যাচিওরিটি’র প্রসঙ্গে। এ ক্ষেত্রে দেখা হয় গ্রাহক মেয়াদের পুরো সময় বন্ডটি না ছেড়ে দিয়ে ধরে রাখলে, কেমন ইল্ড পেতে পারেন। ধরা যাক, বন্ডের দাম ১০০ টাকা। কুপন ১০। মেয়াদ দু’বছর। মনে করুন ইস্যু হওয়ার কিছুক্ষণ বা এক দিন পরেই ৯০ টাকায় সেই বন্ড কিনেছেন আপনি। এবং তা ধরে রাখছেন দু’বছর। সে ক্ষেত্রে প্রথম বছরের শেষে পাওয়া ১০ টাকা কুপনও ফের সেখানে লগ্নি হবে। ফলে মেয়াদ ফুরোলে মোট পাওয়া যাবে (১০০+১০+১১) = ১২১ টাকা।

০৮ ১০
এ ছাড়াও রয়েছে রিয়েলাইজড ইল্ড। অনেক সময়েই গ্রাহক পুরো মেয়াদ বন্ড ধরে রাখেন না। ভাল দর পেলে তা বেচে দেন। ফলে সেই সময় পর্যন্ত পাওয়া কুপন, ওই কুপন থেকে প্রাপ্ত সুদ এবং বন্ড বেচে হওয়া মুনাফা এই তিন ক্ষেত্র থেকে পাওয়া মোট টাকা তাঁর বিনিয়োগের কত শতাংশ, তা-ই হল রিয়েলাইজড ইল্ড। যে দরে আপনি বাজার থেকে বন্ড কিনছেন, তা কম হলে ইল্ড-ও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা। ফলে বন্ডের দর আর ইল্ড সাধারণত একে অন্যের উল্টো দিকে হাঁটে। অর্থাৎ, দাম বেশি মানে বন্ডের ইল্ড কম। আর দাম কম মানে ইল্ড বেশি।

এ ছাড়াও রয়েছে রিয়েলাইজড ইল্ড। অনেক সময়েই গ্রাহক পুরো মেয়াদ বন্ড ধরে রাখেন না। ভাল দর পেলে তা বেচে দেন। ফলে সেই সময় পর্যন্ত পাওয়া কুপন, ওই কুপন থেকে প্রাপ্ত সুদ এবং বন্ড বেচে হওয়া মুনাফা এই তিন ক্ষেত্র থেকে পাওয়া মোট টাকা তাঁর বিনিয়োগের কত শতাংশ, তা-ই হল রিয়েলাইজড ইল্ড। যে দরে আপনি বাজার থেকে বন্ড কিনছেন, তা কম হলে ইল্ড-ও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা। ফলে বন্ডের দর আর ইল্ড সাধারণত একে অন্যের উল্টো দিকে হাঁটে। অর্থাৎ, দাম বেশি মানে বন্ডের ইল্ড কম। আর দাম কম মানে ইল্ড বেশি।

০৯ ১০
তবে সব কিছুর মধ্যে এ সমস্ত ক্ষেত্রে কতটা ঝুঁকি রয়েছে তা দেখে নেওয়া উচিত। কারণ বন্ডে টাকা ঢালা মানে কাউকে না কাউকে আপনি ধার দিচ্ছেন। ফলে ওই ধারের টাকা পরে ফেরত পাওয়ার ঝুঁকি কতখানি, তা অবশ্যই শুরুতে দেখে নিতে হবে।

তবে সব কিছুর মধ্যে এ সমস্ত ক্ষেত্রে কতটা ঝুঁকি রয়েছে তা দেখে নেওয়া উচিত। কারণ বন্ডে টাকা ঢালা মানে কাউকে না কাউকে আপনি ধার দিচ্ছেন। ফলে ওই ধারের টাকা পরে ফেরত পাওয়ার ঝুঁকি কতখানি, তা অবশ্যই শুরুতে দেখে নিতে হবে।

১০ ১০
এ ছাড়াও আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বন্ডে বিনিয়োগের আগে ভাল করে দেখে নিন তার ক্রেডিট রেটিং কেমন। সাধারণত এএএ রেটিং মানে তা সব থেকে বেশি সুরক্ষিত। আবার ডি মানে টাকা ফেরত না পাওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু বেশ চড়া। তবে সংস্থাভেদে এই সব কিছুর হেরফের হতে পারে। মনে রাখবেন যে কোনও বিনিয়োগে রিটার্ন বাজার নির্ভর। তাই সমস্ত কিছু দেখে নিয়ে তবেই বিনিয়োগ করা উচিত।

এ ছাড়াও আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বন্ডে বিনিয়োগের আগে ভাল করে দেখে নিন তার ক্রেডিট রেটিং কেমন। সাধারণত এএএ রেটিং মানে তা সব থেকে বেশি সুরক্ষিত। আবার ডি মানে টাকা ফেরত না পাওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু বেশ চড়া। তবে সংস্থাভেদে এই সব কিছুর হেরফের হতে পারে। মনে রাখবেন যে কোনও বিনিয়োগে রিটার্ন বাজার নির্ভর। তাই সমস্ত কিছু দেখে নিয়ে তবেই বিনিয়োগ করা উচিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy