প্রতীকী ছবি।
আজকাল আর তেমন সমস্যাই হয় না গাড়ি কিংবা মোটর সাইকেল কিনতে । ব্যাঙ্কগুলো তো হাঁ করে বসেই আছে ধার দেওয়ার জন্য। শুধু আয় মিলিয়ে টাকা শোধ করার অঙ্কটা মিলে গেলেই কেল্লা ফতে। চালাও পানসি বেলঘড়িয়া! কিন্তু আপনার ক্ষেত্রেও কি তাই? মানছি যে আজকের দুনিয়ায় সময় বড় দামি। বাস বা ট্যাক্সিও ঠিক ঠিক মেলে না। তাই নিজের বাহন থাকার যা সুবিধা তার কোনও তুলনাই হয় না!
কথা হচ্ছে, কী কিনবেন? মোটর সাইকেল নাকি গাড়ি? যেটাই কিনুন, কী ধরনের কিনবেন? ভেবছেন কী? ভাবুন। না হলে এমন একটা কিছু কিনে বসলেন যার ইএমআই হয়তো দিয়ে দিলেন, কিন্তু তা চালাতে পকেট হাল্কা হয়ে যাচ্ছে। অথবা সেই গাড়ি আসলে যে জীবনযাত্রার উপযোগী তার সঙ্গে আপনার ফারাক আকাশ আর পাতালের।
পরিবারের সঙ্গে থাকলে গাড়ির দিকে ঝোঁকাই ভাল। কিন্তু অঙ্কে না মিললে তবেই মোটর সাইকেল। আপাতত এটা ধরেই চলুক এই আলোচনা।
গাড়ি খোঁজার টুকিটাকি
গাড়ি কেনার আগে খুব মন দিয়ে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজুন
কেন কিনতে চাইছেন এই গাড়ি?
পরিবারে সদস্য কত জন?
জ্বালানি ডিজেল না পেট্রল?
দিনপ্রতি কত কিলোমিটার গাড়ি চড়বেন?
নিজে চালাবেন না ড্রাইভার দিয়ে?
গাড়ি রাখতে গ্যারাজ আছে তো? কেমন তার উচ্চতা?
গাড়ি কেনার আগে এসব ভেবে নেওয়া জরুরি। ডিজেল কিনলেন। কেউ আপনাকে বলেছে যে মাইলেজ বেশি। কিন্তু শোনেননি যে দেখভালের খরচ বেশি। চালাবেন সপ্তাহে একদিন অথবা দিনে পাঁচ কিলোমিটার। তাহলে কিন্তু সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবতে হবে। আর তাছাড়া ডিজেল আর পেট্রলের দামের ফারাক কিন্তু আর অত বেশি নেই।
বাড়িতে গ্যারেজ আছে, কিন্তু যে গাড়ি কিনলেন তা সেই গ্যারেজে ঢুকল না। তখন? যেখানে থাকেন সেখানে নিত্য ব্যবহারে গাড়ি ব্যবহার করবেন। ছুটিতে ঘুরতে দূরে গেলে নিজের গাড়ি নেওয়ার কথা ভাবছেন না, তাহলে ছোট গাড়িই ভাল নয় কি? রাস্তায় পার্ক করার সমস্যাটিও ভাবুন। এই সব কিছু মাথায় রেখে তবেই কিন্তু গাড়ি কেনার রাস্তায় হাঁটতে হবে।
২০:৪:১০ এর অঙ্ক
গাড়ি কেনার জন্য আজকাল সবাই ব্যাঙ্কের কাছেই যায়। আপনিও গিয়ে দেখলেন ইএমআই যা চাইছে তাতে আপনার চটজলদি হিসাব অনুসারে অঙ্কটা এমন কিছু বড় নয়। কিন্তু ভাবলেন না যে গাড়ি কেনার পর তা চালানোরও একটা খরচ আছে।
২০: গাড়ি কিন্তু গেলে ব্যাঙ্ক পুরো টাকাটা নাও দিতে পারে। বলতেই পারে ২০ শতাংশ আপনি মেটান। বাকিটা ব্যাঙ্ক দেবে। মাথায় রাখবেন ধার করে ঘি খাওয়াটা ততটা খারাপ নয়। কিন্তু যতটা পারেন তা কম খাওয়াই স্বাস্থ্য আর রেস্তর পক্ষে ভাল। তাই যতটা পারেন গাড়ির দাম নিজের পকেট থেকেই মিটিয়ে দিয়ে বাকিটা ধার করুন।
৪: গাড়ি কিন্তু বাড়ি নয়। পাঁচ-সাত বছরের বেশি গাড়ি নিয়মিত চালিয়ে না রাখাই ভাল। তাই ইএমআই চার বছরের মধ্যেই শোধ করে দেওয়া ভাল। অনেকেই সাত বছরে মাসিক কিস্তি কম পড়ছে বলে সাত বছরের ঋণ নিয়ে নেন। কিন্তু মাথায় রাখবেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির দেখভালের খরচও বাড়বে। তাই ধার শোধ করে, না হয় পাঁচ বছরের মাথায় গাড়ি পাল্টে নেবেন। তাতে নতুন গাড়িও হবে আর পুরনো গাড়ি বিক্রির টাকায় ডাউনপেমন্টও হয়ে যাবে।
১০: মাথায় রাখতে হবে, গাড়ি কেনাই শেষ কথা নয়। আপনার কিন্তু অন্য খরচও আছে। আছে সঞ্চয়ের দায়ও। তাই আপনার নিট আয়ের ১০ শতাংশের উপর যাতে ইএমআই না যায় সেটা দেখা কিন্তু জরুরি।
শেষে একটাই কথা। এই নিয়ম কিন্তু একটা গড় হিসাব থেকে করা। পরিস্থিতি এমন হতেই পারে যে গাড়ি না কিনলে আপনার চলছেই না। যেখানে থাকেন এবং পরিবারের যা বহর তাতে এই অঙ্ককে একটু টেনেই চলতে হবে। তাহলে হাঁটতেই হবে সেই রাস্তায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy