প্রতীকী ছবি।
বিনিয়োগ করতে হবে কিন্তু এক সঙ্গে মাথায় নেই সুযোগগুলো। কেন করবেন তাও হয়ত জানেন। কিন্তু হাতে ওই তালিকাটা না থাকায় সমস্যায়। আসুন দেখে নেওয়া যাক আপনার হাতে কী কী রাস্তা রয়েছে। তারপর না হয় ভাববেন ঠিক কোথায় রাখবেন কষ্ট করে আয় করা টাকা।
ক) পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড
আপনি কি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করতে চাইছেন? সে ক্ষেত্রে পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড বা পিপিএআর নিঃসন্দেহে সবচেয়ে নিরাপদ। আর এতে বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, প্রাপ্ত সুদের জন্য আয়কর দিতে হয় না। ব্যাঙ্কে পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খুলে তাতে টাকা রাখলে জমা টাকা ১৫ বছরের জন্য লক হয়ে যায়। সেই টাকার উপরে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ দেয় ব্যাঙ্ক। রিটার্নের পরিমাণে সন্তুষ্ট হলে আপনি বাড়তি পাঁচ বছরের জন্যও ওই টাকা পিপিএফে রেখে দিতে পারেন। এই ব্যবস্থায় একমাত্র অসুবিধার জায়গাটি হল, ছ’বছর পূর্ণ হওয়ার আগে পর্যন্ত ওই টাকা তোলা যায় না। তবে জরুরি প্রয়োজনে পিপিএফে জমা টাকার উপরে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে পারেন। তবে সুদের হার সময়ে সময়ে বদলে যায়, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশে।
খ) ইক্যুইটি শেয়ারস
এতে বিনিয়োগ করতে গেলে আপনাকে শেয়ার বাজারে যেতে হবে। ব্রোকারের মাধ্যমে তুলতে হবে কোম্পানি শেয়ার। ব্যাঙ্কে যে ভাবে অ্যাকাউন্ট খোলেন সেই ভাবেই খুলতে হবে ডিপজিটরি অ্যাকাউন্ট। সেই অ্যাকাউন্টেই আপনার শেয়ার জমা পড়বে। প্রচলিত ধারণা বলে, ইক্যুইটি শেয়ারে টাকা লগ্নিতে অন্য বেশির ভাগ বিনিয়োগের তুলনায় বেশি রিটার্ন পেতে পারেন। কিন্তু মাথায় রাখুন, এই বেশি রিটার্ন বাড়তি ঝুঁকির সঙ্গে সমানুপাতিক। ফলে যত বেশি রিটার্ন, ঝুঁকিও ততটাই বেশি থাকবে। আর একটা কথা। তাৎক্ষণিক লাভের জন্য শেয়ার কেনাবেচার রাস্তায় না হাঁটাই ভাল।
গ) নতুন শেয়ার বা ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং (আইপিও)
কোনও কোম্পানি যখন বাজারে নতুন শেয়ার ছাড়ে তাকে ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং বলে। এ ক্ষেত্রে শেয়ারের দামও কম থাকে। এ সময়টায় বিনিয়োগকারীরা তাই সম্ভাবনাময় সংস্থার শেয়ার কিনে রাখেন দাম বেড়ে যাওয়ার আগে। নতুন শেয়ার কেনার কিন্তু ঝুঁকি তুলনামূলক ভাবে বেশি কারণ সেই শেয়ার নিয়ে বাজারের ভবিষ্যত প্রতিক্রিয়া কী হবে বাজি কিন্তু তার উপরই ধরেন বিনিয়োগকারীরা। পুরনো শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে সুবিধা হল বাজারের এই শেয়ার নিয়ে ভাবনাটা মোটামুটি জানাই থাকে। তাই ঝুঁকির চরিত্রটাও জানা থাকে।
ঘ) মিউচুয়াল ফান্ড
আপনার সবাই জানেন মিউচুয়াল ফান্ড কী। এ নিয়ে বিশদে অন্যত্র আলোচনা করাও আছে। বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে মিউচুয়াল ফান্ড এখন বেশ জনপ্রিয়। লাভজনক লগ্নিও বটে। মিউচুয়াল ফান্ড আমাদের হয়ে শেয়ার আর ঋণপত্রে বিনিয়োগ করে থাকে। মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা ঢালার সুবিধা হল এই রকম-
অটোম্যাটিক ডাইভার্সিফিকেশন:
আপনার লগ্নি ঝুঁকির অনুপাতে ভাগাভাগি করে নানান ভাবে বিনিয়োগ করে। তাই আপনার চাপ থাকে না প্রতিটি বিনিয়োগের উপর নজর রাখার। শুধু আপনার ফান্ডটির ওপর নজর রাখলেই হয়। (এই নিয়েও অবশ্য বিস্তারিত আলোচনা করা রয়েছে অন্যত্র।) আপনার বিনিয়োগের ওঠা-পড়া নিয়ন্ত্রণে থাকে আর আয়ও তুলনামূলক ভাবে ভাল।
ইন্টেলিজেন্ট ইনভেস্টিং:
মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন অভিজ্ঞ ফান্ড ম্যানেজারেরা। এই নিয়ে পড়াশোনা, তথ্য জোগাড় ও বিশ্লেষণ তাঁদের ফান্ডের টাকা সুষ্ঠু ভাবে বিনিয়োগে সাহায্য করে। আর তার ফলে বিনিয়োগকারীদেরও দুশ্চিন্তা বা ক্ষতির আশঙ্কা কাটে অনেকটাই।
বিনিয়োগকারী হিসেবে আপনি মিউচুয়াল ফান্ডের স্কিমগুলোর যত খুশি সংখ্যক ইউনিট কিনতে পারেন চলতি বাজারদর বা নেট অ্যাসেট ভ্যালুর (ন্যাভ) ভিত্তিতে। বাজারের কল্যাণে ন্যাভের মান বাড়লে ওই ইউনিট বিক্রি করে লাভ করতে পারবেন। বেশির ভাগ মিউচুয়াল বিনিয়োগের মেয়াদের কোনও নিম্নসীমা নেই। সে কারণেই এর জনপ্রিয়তাও বেশি, ঝুঁকির পরিমাণও মাঝারি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy