বাইরে চড়া রোদ। মুখের ভিতরটাও বারবার কী রকম শুকনো হয়ে যাচ্ছে। অফিসে কাজ করতে-করতে ঝিমুনি আসছে ক্রমাগত। ট্রেনে-বাসে যাতায়াতের সময় আবার অল্প-অল্প মাথাও ঘুরছে। কাঠফাটা গরমে এই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে অনেকেরই। পাত্তা দেন না বেশির ভাগ মানুষ। নিয়মিত এই সব লক্ষণকে পাত্তা না দেওয়ার ফল কিন্তু ভুগতে হতেই পারে। কারণ, এ সবই হয়তো হচ্ছে ডিহাইড্রেশনের কারণে। নিয়মিত যা চলতে থাকলে রক্তচাপ কমে গিয়ে সমস্যা বা আচমকা সংজ্ঞা হারানোর মতো বিপত্তিতে পড়তে হতে পারে।
ডিহাইড্রেশন কেন
আমাদের শরীরে বেশির ভাগটাই জলীয় অংশ। দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ থেকে খাবার হজম, সমস্ত কিছুতেই এই জলীয় অংশের ভূমিকা থাকে। নিঃশ্বাস, ঘাম, প্রস্রাবের মতো নানা শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় প্রতিনিয়ত যে জল বেরিয়ে যায়, তা পূরণ হয় খাদ্য-পানীয়ের মাধ্যমে শরীরে যাওয়া জলে। যখন শরীরে এই জলের জোগান কম পড়ে, ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়। গরমে অতিরিক্ত ঘামের ফলে শরীর থেকে প্রচুর জল বেরিয়ে যায়। সেই তুলনায় পানীয় শরীরে কম গেলেই সমস্যা শুরু হয়।
শুধু কি গরমেই?
গরমে শরীরে জলের প্রয়োজন বেশি হয়। কিন্তু সে দিকে খেয়াল না রাখার ফলে ডিহাইড্রেশনের শিকার হন অনেকেই। কিন্তু শুধু গরমের কারণেই এমনটা হয়, তা ঠিক নয়। জ্বর, ডায়েরিয়া বা কোনও কারণে বারবার বমি হলেও ডিহাইড্রেশন হতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত ব্যায়াম করলেও শরীরে জলের অভাব দেখা দিতে পারে। তা পূরণে নজর না দিলেই মুশকিল। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে বারবার প্রস্রাবের ফলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কয়েক ধরনের খাবারও শরীরে জলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
কী ভাবে বুঝবেন
ডিহাইড্রেশন হলে গলা শুকিয়ে যেতে থাকে অনবরত। তেষ্টা পায় ঘনঘন। প্রস্রাব কমে যায়। ক্লান্তি চেপে বসে শরীরে। শুকনো হয়ে যায় ত্বক। ঝিমুনি, সামান্য কারণেই বিরক্তির মতো কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। মাত্রাতিরিক্ত ডিহাইড্রেশনের ক্ষেত্রে সংজ্ঞা হারানো, বুক ধড়ফড়, দ্রুত শ্বাস, নিম্ন রক্তচাপের মতো নানা সমস্যা হয়। এই রকম পরিস্থিতি তৈরি হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
রেহাইয়ের উপায়
প্রাথমিক কর্তব্য, শরীরে যাতে জলের জোগান না কমে, সে দিকে খেয়াল রাখা। তাই জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ দেখা দিলে নুন-চিনির জল খাওয়া প্রয়োজন। দিনে কয়েক বার তা খেলে শরীর অনেকটাই ঠিক থাকবে। এ ছাড়া মুখে বরফের টুকরো রাখলেও অনেকটা স্বস্তি মেলে। কেউ মারাত্মক ডিহাইড্রেশনে আক্রান্ত হলে মুখে বারবার জলের ঝাপটা দিলে ও ভিজে তোয়ালে শরীরে জড়িয়ে রাখলেও খানিকটা সুস্থ বোধ হয়।
কী খাব, কী খাব না
ডিহাইড্রেশনের ফলে শুধু জল নয়, শরীরে খনিজ পদার্থেরও অভাব তৈরি হয়। তাই ঘোল বা লস্যি এবং ডাবের জলের মতো পানীয় উপযুক্ত। এ ছাড়া ইলেক্ট্রোলাইট রয়েছে এমন স্পোর্টস ড্রিঙ্কসেও ভাল কাজ হয়। ডিহাইড্রেশনে পটাশিয়ামের যে অভাব হয়, কলা তা খানিকটা পূরণ করতে পারে।
অতিরিক্ত কফি পান শরীরে জলের অভাব তৈরি করে। ভাজাভুজি খাবার বেশি খেলেও ডিহাইড্রেশন হয়। বিশেষত গরমে এগুলি তাই এড়িয়ে চলাই বাঞ্ছনীয়।
মডেল: পত্রালী
মেকআপ: অভিজিৎ পাল
পোশাক: লাইফস্টাইল, কোয়েস্ট মল লোকেশন: হোয়াটস আপ কাফে
ছবি: শুভদীপ ধর
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy