সম্প্রতি রবীন্দ্র সদন প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত হল জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী ইমন চক্রবর্তীর প্রথম একক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটির শিরোনাম— ‘এই আসরে ইমন’। অনুষ্ঠানের সূচনালগ্নে সঞ্চালক রেশমী এবং শৌভিক দে-র ঘোষণায় যদিও ছিল ‘পঞ্চকবির গান’, কিন্তু সে দিন শিল্পীর কণ্ঠে পরিবেশিত হল তিন কবির গান ছাড়াও বিভিন্ন ধারার বাংলা গান।
দীর্ঘ ও বৈচিত্রপূর্ণ অনুষ্ঠানসূচির শুভারম্ভ হয় শিল্পীর পরিবেশিত পাঁচটি রবীন্দ্রসঙ্গীতের মধ্য দিয়ে। যন্ত্রসঙ্গীতের আধিক্য এবং শব্দ প্রক্ষেপণের অসহযোগিতা প্রথম দু’টি গানে ব্যাঘাত সৃষ্টি করলেও বাকি গানগুলি সুগীত। ‘আরো আঘাত সইবে’ উল্লেখযোগ্য পরিবেশনা। পরবর্তী দু’টি গান কাজী নজরুল ইসলামের ‘মোর ঘুমঘোরে’ এবং দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’।
দ্বিতীয় গানে মঞ্চের অন্যান্য সহযোগী শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠের সহযোগিতা ছাড়াও প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত সমস্ত দর্শক-শ্রোতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল মনে রাখার মতো। অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে এবং তা চলাকালীন মাঝেমধ্যেই শিল্পী সঙ্গীত ও সংস্কৃতি জগতের গুণিজনদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন।
শিল্পীর পরবর্তী নিবেদন স্বর্ণযুগের প্রখ্যাত মহিলা শিল্পীদের গাওয়া পাঁচটি বাংলা গান। আন্তরিক পরিবেশনা। এর পরেই একজন সহ-শিল্পীকে সঙ্গে নিয়ে শিল্পী পরিবেশন করেন সলিল চৌধুরী রচিত ও পরিবেশিত গণসঙ্গীত ‘গুরু গুরু ডম্বরু’। পরিবেশনাটি ছিল অত্যন্ত মনোগ্রাহী।
এর পরে শিল্পীর কণ্ঠে পরিবেশিত হয় তাঁর অত্যন্ত প্রিয় লোকসঙ্গীত। লালন সাঁইয়ের একটি গান, বিহু এবং গরবা। প্রতিটি গানেই শিল্পীর সাবলীলতা লক্ষণীয়। লোকসঙ্গীতের রেশ ধরেই পরিবেশিত হয় বাংলার আর একটি ধারার গান—কীর্তন।
‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র একটি বিশেষ গানের মধ্য দিয়ে সে দিনের অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি হয়। এর মাঝেই শ্রোতাদের অনুরোধে শিল্পী ইমন পরিবেশন করে শোনান বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর কণ্ঠে গীত দু’টি জনপ্রিয় গান।
অনুষ্ঠানের একটি পর্যায়ে ছিল বিপ্লব দাশগুপ্তের সঙ্গে অভিনীত একটি শ্রুতিনাটক, যার মধ্য দিয়ে শিল্পীর অভিনয়-প্রতিভারও আভাস পাওয়া যায়।
প্রতিটি পরিবেশনাতেই শিল্পীর যথাযথ অভিব্যক্তির প্রকাশ ঘটে। এ ছাড়াও কোনও কোনও গানে সীমিত নৃত্যভঙ্গিমা অনুষ্ঠানটিকে বৈচিত্রপূর্ণ করে তুলতে সাহায্য করে। মঞ্চে উপবিষ্ট এগারো জন সহযোগী গুণী যন্ত্রশিল্পীর সহযোগিতা ছিল যথাযথ। বিভিন্ন ধারার গান এবং অভিনয়ের মাধ্যমে শিল্পী তাঁর বহুমুখী প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন। সমগ্র অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেছিল ‘পিকাসো এবং ইমন চক্রবর্তী প্রোডাকশন’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy