Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

‘প্রয়োজনে নায়িকাকে খোলামেলা দৃশ্য করতে হতেই পারে!’

মনে করেন, নায়িকাদের কোনও ইমেজ থাকতে নেই। ২০১৭-য় নিজেকে পাল্টে ফেলবেন। প্রেম, বিয়ে, কেরিয়ার নিয়ে খোলামেলা আড্ডায় পাওলি। সামনে স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায় পত্রিকা: রাইমার বিয়েটা কবে হচ্ছে? পাওলি (গালে হাত দিয়ে): হঠাৎ রাইমা কেন? (একটু থেমে ভ্রু তুলে) ওহ, বুঝেছি, বুঝেছি। ও বলেছিল ওর বিয়ে হয়ে গেলে আমায় বিয়ে করতে, তাই তো?

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

পত্রিকা: রাইমার বিয়েটা কবে হচ্ছে?

পাওলি (গালে হাত দিয়ে): হঠাৎ রাইমা কেন? (একটু থেমে ভ্রু তুলে) ওহ, বুঝেছি, বুঝেছি। ও বলেছিল ওর বিয়ে হয়ে গেলে আমায় বিয়ে করতে, তাই তো? তবে শুনুন, দু’জনের বিয়ের আগে আমাদের একটা ব্যাচেলার্স পার্টি করার প্ল্যান আছে, তখন নিশ্চয়ই ‘পত্রিকা’-কে জানাব...আচ্ছা, ইন্টারভিউটা কি শুধু আমার বিয়ে নিয়ে?

পত্রিকা: বিয়ের দিন কেবলই পিছিয়ে যাচ্ছে তো…

পাওলি: আরে! অভিনেত্রীদের বিয়ে, সম্পর্ক, বাড়ি, গাড়ি নিয়ে আর কত কচকচানি হবে বলুন তো?

পত্রিকা: কিন্তু কাজের কথায় যদি আসি, তো বলি, ইদানীং কমার্শিয়াল ছবিতে আপনাকে তেমন একটা কিন্তু দেখা যাচ্ছে না...

পাওলি (একটু যেন রেগে): দাঁড়ান, দা়ঁড়ান। সেই এক ক্লিশে ব্যাপার। কমার্শিয়াল ছবি আবার কী! নাচ-গানের ছবি মানেই কমার্শিয়াল এই ধারণাটা বস্তাপচা। যেমন ধরুন, ‘বেলাশেষে’ও আমার কাছে কমার্শিয়াল ছবি। যা দর্শককে টানে, তাই-ই কমার্শিয়াল। আর আমি যে ধরনের কাজ করছি সেটা যদি কমার্শিয়াল না হতো, তা হলে পাওলিকে লোকে ডেকে ডেকে মাচায় নিয়ে যেত না...। আর ফর ইওর কাইন্ড ইনফরমেশন.... সামনে দুটো বাংলা ছবি, এ ছাড়া একটা বাংলাদেশের ছবি। আর কোচিতে যাচ্ছি তামিল ছবি করতে।

পত্রিকা: কিন্তু অনেকে বলেন, অভিনেত্রী পাওলি মানেই নারীর ল়ড়াই, নয়তো প্রেম...

পাওলি (চোখ বড় করে): কী বলছেন! আমি প্রত্যেকবার নিজেকে ভেঙেছি। আর শুধু নারীকেন্দ্রিক ছবিতে সব কিছু পেলব, মধুর হবে এমনটা আশাই’বা করা হচ্ছে কেন?...সে এলাই (চার অধ্যায়) হোক, খেয়াই (নাটকের মতো) হোক, কিংবা অন্তরা (ক্ষত)...প্রত্যেকের জার্নিতেই, প্রেম আছে, অপ্রেমও আছে...। আর শুনুন, তার মানেই যে প্রত্যেকবার আমাকে গোল টিপ আর শাড়ি পরে আসতে হবে, এমনটা তো নয়। দু’হাজার সতেরোয় আমি সম্পূর্ণ অন্য একটা লুক আনতে চলেছি, যে ‘লুক’-এ আগে আমাকে কেউ দেখেননি।

পত্রিকা: তা’হলে ‘দেবী’? এটা তো দেবদাসেরই গল্প!

পাওলি: দেবদাস একজন মেয়ে এটা কি কোনও দিনও হয়েছে? হয়নি। ১৯১৭-র ৩০ জুন ‘দেবদাস’ উপন্যাস প্রকাশিত হয়। আজ অবধি যে ক’টা ‘দেবদাস’ হয়েছে, তার প্রত্যেকটাই কিন্তু নায়ক-প্রধান। আমার মনে হয়েছিল, দেবদাস যদি মহিলা হয়, কেমন হয়? এখানে পরিচালক ঋকের সঙ্গে আমার ভাবনাটা মিলে যায়। এ ভাবেই ‘দেবী’ তৈরি হল। আর দেখুন ‘দেবী’র টিজার বা ট্রেলর... ফিডব্যাক লাখের ওপর ছা়ড়িয়ে গেছে। তার মানে লোকের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারি আসছে ছবিটা।

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল; স্টাইলিস্ট: দিশা ঠক্কর
মেকআপ: প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
হেয়ার: শ্যামলী দাস

পত্রিকা: ট্রেলর-এ দেখা যাচ্ছে, আপনার জিভে চার্লি চ্যাপলিন!

পাওলি (গ্রিন টি-র কাপ হাতে গুছিয়ে বসে): শুনুন, এখানে ‘দেবদাস’ গল্পটা হুবহু এক রেখে চরিত্রগুলো আজকের সময়ে বদলে দেওয়া হয়েছে। চুনীবাবুর নাম এখানে নাদিয়া পেট্রোভা (এলিনা কাজান)। নাদিয়া মেয়ে এবং ড্রাগস দুটোই পাচার করে। সে আবার একজন যৌনকর্মীও। চন্দ্রমুখী-র নাম এখানে চার্লি (সাতাফ ফিগার)। যে কিনা জিগোলো। পারো হল প্রতীক (শুভ মুখোপাধ্যায়)। আগে সবাই বলত প্রেমে ‘দেবদাস’ হয়ে গেছে। ছবিটা দেখে লোকে বলবে, ‘দেবী’ হয়ে গেছে। দেবী এখানে কিন্তু মিয়োনো চরিত্র নয়, খুব বোল্ড। তবে প্রেমে পাগল!

পত্রিকা: এখানেই তো অনেকের অভিযাগ, পাওলি মানেই সম্পর্কের রসায়ন, প্রেমের জন্য হা-পিত্যেশ...

পাওলি: না তা নয়। তার আগে বলি, ‘কালবেলা’ থেকে ‘ক্ষত’, সম্পর্কের গল্পই যদি বলেন... এ ভাবেও যদি আমাকে একজন অভিনেত্রী হিসেবে লোকে মনে রাখে, তো ক্ষতি কী! আর ‘দেবী’র গল্প জুড়ে আছে আজকের মেয়েদের জীবন, তাদের স্ট্রাগল। সেই কারণেই বোধ হয় দেখতে পাচ্ছি, বিদেশের বাঙালি, নর্থ-ইস্টের বাঙালিরা, এমনকী অবাঙালিরাও রি-অ্যাক্ট করছেন।

পত্রিকা: নর্থ-ইস্টের বাঙালিদের ভাল লাগাটাও কিন্তু স্বাভাবিক। হাজার হোক পাওলির শ্বশুরবাড়ির লোক তারা...

পাওলি: ঘুরেফিরে সেই আবার বিয়ে আর শ্বশুরবাড়ি!

পত্রিকা: ওক্কে, একটু ব্রেক দিলাম। এ বার বলুন, কাকাবাবু করলেন না কেন?

পাওলি (থামিয়ে দিয়ে): সৃজিত তো ‘রাজকাহিনী’র জন্যও আমায় বলেছিল। কিন্তু তখন ডেট ম্যাচ করেনি। কিন্তু ‘জুলফিকার’ করার সময় সৃজিত আর আমি দু’জনেই বুঝে যাই কাকাবাবুতে আমার করার মতো তেমন চরিত্র ছিল না। সৃজিত তো এটাও বলেছিল যে, ‘তোকে প্রপারলি ইউজ করতে চাই।’ তাই ঠিক করলাম অন্য কোনও কাজ করব ওর সঙ্গে। এ নিয়ে কিন্তু অন্য গন্ধ খুঁজবেন না। আর সত্যি কথা বলতে কী, আমি যে পরিচালকের সঙ্গে কাজ করি, তার সঙ্গে একটা ‘বন্ডিং’ তৈরি হয়ে যায়।

পত্রিকা: বন্ডিং! সেটা অর্জুন কী ভাবে নেয়?

পাওলি (অবাক হয়ে): কাজের কথায় অর্জুন কী করে এল আবার?

পত্রিকা: পরিষ্কার করে বলি। আপনি ‘ছত্রাক’-এ সাহসী দৃশ্য করেছেন। আবার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘ক্ষত’য় খোলামেলা সিন। আপনার বয়ফ্রেন্ড অর্জুন কোনও রি-অ্যাক্ট করেননি বলছেন?

পাওলি (একটু বিরক্ত): এ সব নিয়ে কোনও কথাই হয়নি। অর্জুনের ম্যাচিউরিটি লেবেল আমার থেকে অনেক বেশি। আর অভিনয় করতে গেলে চরিত্রের প্রয়োজনে নায়িকাকে খোলামেলা দৃশ্য করতে হতেই পারে!

পত্রিকা: অর্জুন তো আপনার থেকে ছোট?

পাওলি: হ্যাঁ। পাঁচ বছরের। আমরা মিউজিক, ফুড, লাইফ দিয়ে দু’জনে জুড়ে আছি। সেটা অত আলগা নয়। সম্পর্কটা নায়িকার সঙ্গে এক পুরুষের নয়। এক মহিলা আর পুরুষের... প্রেম হঠাৎ হয়ে যায়... থেকে যায়...

পত্রিকা: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কি হঠাৎ প্রেম!

পাওলি: কী যা-তা বলছেন! এ সব স্রেফ গালগল্প।

পত্রিকা: ‘ক্ষত’র অমন অন্তরঙ্গ দৃশ্যর পরেও ‘গালগল্প’ বলবেন!

পাওলি: বুম্বাদার সঙ্গে অনেক দিন ধরে কাজ করছি, একটা ‘ইটারনাল বন্ডিং’ হয়ে গেছে। খুব শ্রদ্ধা করি। এটা প্রেম নয়, প্রফেশনালিজম! তবে আপনি যখন আমার আর বুম্বাদার বিষয় নিয়ে কথা বলছেন তখন আমাদের জুটি কিন্তু হিট!

পত্রিকা: কিন্তু বিয়েতে এত দেরি? শাশুড়ি না মা, বিয়ের জন্য চাপটা কোথা থেকে আসে?

পাওলি: আমার শ্বশুরবাড়ি বিন্দাস! আর আমার মা অনেক দিন ধরেই বিয়ে করার কথা বলে। পাত্তা দিই না। প্লিজ প্রসঙ্গটা পাল্টান না!

পত্রিকা: সাক্ষাৎকারটা কি পাওলির শর্ত মেনে হবে!

পাওলি (হা হা হা): আসলে আমি এখন কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে চাই, প্লিজ সেগুলো একটু বলি?

পত্রিকা: বলুন।

পাওলি: অরিন্দমদা (শীল) ইন্টারেস্টিং কাজ করছে। ওর সঙ্গে শিগগিরিই কাজ করব। ওর প্রথম ছবিতেই করতাম, কিন্তু ‘অঙ্কুর অরোরা মার্ডার কেস’ ছবিটার সঙ্গে ডেট ক্ল্যাশ করল। কৌশিকদা (গঙ্গোপাধ্যায়), শিবু (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়)-র সঙ্গেও কাজ করতে চাই।

পত্রিকা: একটা পুরনো কথা বলি?

পাওলি: এই যে বললেন পাওলির শর্তে সাক্ষাৎকার নয়...

পত্রিকা: শিলাদিত্যর কথা মনে পড়ে...

পাওলি (হঠাৎ একটু চুপ): প্যাট চলে যাওয়াটা খুব বাজে। খুব খুব খারাপ আমার জন্য। এটকুই বলতে পারি। আর আপনি পুরনো কথা বলছিলেন তো, একটা নতুন কথা বলি।

পত্রিকা: কী?

পাওলি: ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তর জন্মদিনের পার্টিতে কিছু দিন আগে কেজি (কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়) হঠাৎ একজনকে দেখে বলল, ‘প্যাট-এর মতো লাগছে না?’ তখন চূর্ণীদি, গার্গীদি বসেছিল। ওরা আমাকে দেখেই বলল, ‘স্যরি, স্যরি।’ আমি বরং বললাম, ‘কেন? তোমরা অস্বস্তিতে পড়ছ কেন? এত বছর বাদেও যে তোমরা ওর কথা বলছ, তার থেকেই মনে হয়, ইন্ডাস্ট্রিতে অ্যাজ অ্যান অ্যাক্টর, কোথাও ওর জায়গাটা এখনও আছে। আমি পর্দায় যতই ‘বোল্ড’ হই, আমার আশপাশের মানুষ, তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিন্তু আমি একটু সেকেলেই থেকে গেছি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy