Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

কিডনির স্টোন গলাতে অল্প বিয়ার খারাপ নয়

কিডনিতে পাথর হওয়া আটকানোর উপায় আরও আছে। বলছেন কিডনি বিশেষজ্ঞ ডা. শিবাজি বসু। যোগাযোগ: ৯৮৩১০৯৮৭৩১প্র: বিয়ার খেলে শুনেছি কিডনিতে পাথর হয় না? উ: বিয়ার খেলে প্রস্রাব বেশি হয় বলে ছোট পাথর থাকলে বেরিয়ে যায়। তবে তার জন্য বিয়ারই খেতে হবে এমন নয়, বেশি জল খেলেও হবে।

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

প্র: বিয়ার খেলে শুনেছি কিডনিতে পাথর হয় না?

উ: বিয়ার খেলে প্রস্রাব বেশি হয় বলে ছোট পাথর থাকলে বেরিয়ে যায়। তবে তার জন্য বিয়ারই খেতে হবে এমন নয়, বেশি জল খেলেও হবে।

প্র: আজকাল তো আবার শুনছি বেশি জল খাওয়া খারাপ!

উ: বেশি মানে তো আর ৫-৬ লিটার নয়। গরম কালে তিন লিটার জল অবশ্যই খাবেন। খুব দৌড়ঝাঁপের কাজ হলে আরেকটু বাড়াতে হবে।

প্র: তিন লিটার জল! চা-কফি-কোল্ডড্রিঙ্কস সব মিলিয়ে হলে হবে না?

উ: না। কফি, কোল্ডড্রিঙ্কস বেশি খেলে বরং বিপদ বাড়বে। কোনও দিন বেশি খেয়ে ফেললে জল বেশি খেয়ে এ সবের খারাপ প্রভাব কাটাতে হবে।

প্র: সে কী! কিন্তু কফি ছাড়া যে ঘুম ছাড়ে না, ক্লান্তিও কাটে না!

উ: কফির ক্যাপেইন পাথর তৈরিতে সাহায্য করে। আবার বেশি কফি খেলে বার বার প্রস্রাব পায় বলে শরীরে জল কমে পাথর তৈরির আরও সুবিধে হয়। তবে পাথর হওয়ার প্রবণতা না থাকলে অত কড়াকড়ি নেই।

প্র: পাথর হওয়ার প্রবণতা বলতে?

উ: রক্তের সম্পর্কযুক্ত আত্মীয়দের কারও যদি এ রোগ থাকে বা আপনার আগে কখনও হয়, আপনার হওয়ার প্রবণতা আছে। এ ছাড়া গাউট বা প্যারাথাইরয়েড টিউমার থাকলে বা রক্তে ক্যালসিয়াম বেশি হলেও আশঙ্কা থাকে। আজকাল এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরেকটি নাম, ভুল জীবনযাপন।

প্র: কী রকম?

উ: অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড আসক্তি।

প্র: ফাস্ট ফুড তো খেতেই হবে। সারা দিন ঘরোয়া খাবার খাওয়া সম্ভব?

উ: অধিকাংশ ফাস্ট ফুডে যে সমস্ত রং, সংরক্ষণ ও অন্যান্য রাসায়নিক থাকে তা থেকে পাথর হতে পারে। গ্রিলড বা বয়েল্ড খাবারে সমস্যা কম। অন্য ফাস্ট ফুড মাঝেমধ্যে খেলেও প্রচুর জল খেলে বিপদ এড়ানো যায়।

প্র: ফাস্ট ফুডের সঙ্গে জল! কোল্ডড্রিঙ্কস খেলেই তো মজা বেশি।

উ: তাতে বিপদ দ্বিগুণ হবে। বিশেষত যদি পাথর হওয়ার প্রবণতা থাকে।

প্র: ফাস্ট ফুডের সঙ্গে মদ খেলে?

উ: তাহলে আর দেখতে হবে না।

প্র: মদ খাওয়াও বারণ?

উ: বিয়ার একটু আধটু খেতে পারেন। কিডনি স্টোনের দিক থেকে ভাবলে তাতে ভালই হবে। অন্য মদ খাওয়ার আগে-পরে প্রচুর জল ও সঙ্গে খাবার না খেলে বিপদ আছে।

প্র: মদের অনুপান হিসেবে বাদাম, কাবাব, এ সব তো খাওয়া হয়ই।

উ: আগে পাথর হয়ে থাকলে মদের সঙ্গে চিনেবাদাম খেলে দ্বিতীয় বার পাথর হওয়ার চান্স বেড়ে যাবে। বেশি মাছ-মাংস খেলেও বিপদ।

প্র: আর যাঁদের আগে পাথর হয়নি?

উ: তাঁরা খেতে পারেন। তবে ডায়েটিংয়ের খাতিরে নিয়মিত কার্বোহাইড্রেট কম খেয়ে প্রোটিন বেশি খেলে কিন্তু সমস্যা হলেও হতে পারে।

প্র: এ সব তো আজকাল সবাই খান। সবারই পাথর হচ্ছে?

উ: সবার হচ্ছে না। তবে আগের তুলনায় বেড়েছে। আর সবচেয়ে ভয়ের কথা, পাথর হওয়ার পর তা নিয়ে বসে থেকে তাঁরা বিপদ আরও বাড়াচ্ছেন।

প্র: পাথর নিয়ে বসে থাকা কি সম্ভব? ব্যথা হবে তো?

উ: পাথর যতক্ষণ কিডনিতে ততক্ষণ ব্যথা হয় না। ইউরেটারে নেমে এলে ব্যথা শুরু। মোটামুটি ১০-১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে এ ভাবে পাথর থেকে যায় দিনের পর দিন। কিডনি খারাপ হতে থাকে।

প্র: তা হলে?

উ: আজকাল অবশ্য এত সোনোগ্রাফি হয় যে রোগ ধরা পড়েই যায়।

প্র: ব্যথা না থাকলে কি পাথর বার করতে হয়?

উ: পাথর কত বড়, কোথায় আছে, কিডনির অবস্থা ইত্যাদি দেখে ডাক্তার সিদ্ধান্ত নেন। সব ঠিক থাকলে, পাথর ছোট হলে নিয়ম মানলেই কাজ হয়।

প্র: ছোট পাথর তো হোমিওপ্যাথি করলেও গলে যায়।

উ: তাতে পাথর বেরিয়ে গেলে ভাল। কিন্তু ব্যথা কমলেই যদি ধরে নেন পাথর গলে গেছে কিডনি খারাপ হওয়ার খুব চান্স।

প্র: ব্যথা কমা মানেই তো পাথর বেরিয়ে গেছে।

উ: সব সময় নয়। কিডনি ফুলে ঝিমিয়ে পড়লেও ব্যথা কমে।

প্র: তা হলে কী করতে হবে?

উ: ব্যথা কমলেও তিনমাস বাদে বাদে সোনোগ্রাফি করে কিডনির অবস্থা দেখে নিতে হবে। অনেক সময় কন্ট্রাস্ট সিটি স্ক্যানও করতে হয়। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্র: কী সিদ্ধান্ত? অপারেশন?

উ: সাধারণত প্রথম এক মাস ওষুধ দেওয়া হয়। তাতে ব্যথা না-কমলে বা কিডনি ফুললে পাথর বার করতে হয়।

প্র: অপারেশন করে?

উ: ১০০ জনের মধ্যে দুজনের মাত্র পেট কাটতে হয়। বাকিদের লিথোট্রিপসি, লেসার। এ সবই কাটাছেড়াহীন পদ্ধতি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy