ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
তিনি এলেন, বাজালেন এবং জয় করলেন। জয় করলেন অগণন দর্শকের হৃদয়। তিনি আমান আলি খান। বালিগঞ্জ দুর্গাপুজো সমিতির আশি বছর পূর্তি উপলক্ষে তিনি এসেছিলেন ম্যাডক্স স্কোয়ারে। তারপর পঞ্চমীর সেই সন্ধে ভেসে গিয়েছিল সুরের প্লাবনে। সেই প্লাবনে স্বপ্নমায়া সৃষ্টি হয়েছিল তাঁর আঙুলের স্পর্শে। শ্রোতৃমণ্ডলী সমাগমে তখন কানায় কানায় পূর্ণ সংঘপ্রাঙ্গণ।
আমান প্রথমে বাজালেন পুরবী ঠাটের অন্তর্গত রাগ পুরিয়া ধানেশ্রী। দীর্ঘক্ষণ আলাপ করলেন। শেষ করলেন যখন, সুরের মূর্ছনায় আবিষ্ট হয়েছেন শ্রোতৃমণ্ডলী। পুরবী ঠাট থেকে এ বার তিনি চলে গেলেন বিলাবল ঠাটে। তাঁর এ বারের কম্পোজিশন রাগ দুর্গা। এমনিতেই এই রাগ অসাধারণ সুরমাধুর্যে পূর্ণ। আমানের সরোদের ঝংকারে তা হয়ে উঠল অনন্যসাধারণ। দুর্গা রাগের মাধ্যমে মা দুর্গার বন্দনা করলেন তিনি। দুর্গা রাগের মায়াবী রেশ তখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি উপস্থিত দর্শকবৃন্দ। তাঁর সরোদে এ বার প্রাণের ছোঁয়া পেল রাগ গেশ। খাম্বাজ ঠাটের এই রাগ বাজাতে বাজাতেই তিনি চলে গেলেন একটা অন্য কম্পোজিশনে। তারপর রবীন্দ্রসঙ্গীতে ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে’। রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্ক ধরা পড়ল খাম্বাজের অনন্য প্রয়োগে এই সুরসৃষ্টির মাধ্যমে।
এখানেই শেষ হল অনুষ্ঠান। আবেগমথিত দর্শকদের আকাঙ্ক্ষা ছিল আরও প্রাপ্তির। আমান প্রমাণ করলেন, তিনি উজ্জ্বল স্বমহিমায়। এক ধ্রুপদী মননে ঋদ্ধ হয়েছেন তিনি, যা তাঁকে নিয়ে গিয়েছে এক আলাদা উচ্চতায়। তবলায় পণ্ডিত বিজয় ঘাটে যোগ্য সংগত করেছেন। তাঁর অসাধারণ বাদন পুরো অনুষ্ঠানটিতে যোগ করেছিল এক বিশেষ মাত্রা।
পলাশবাড়ির ট্র্যাজেডি
বাংলাদেশের প্রাচ্যনটের প্রযোজনা। দেখলেন মনসিজ মজুমদার
কালিন্দী ব্রাত্যজনের নাট্যোৎসবে বাংলাদেশের প্রাচ্যনটের ‘পলাশবাড়ির ট্র্যাজেডি’র (রচনা ও পরিঃ আজাদ আবুল কালাম) পিছনপটে প্রায় সারা সময় দেখা যায় একটি বাড়ি ভেঙে পড়ার দৃশ্যের নির্বাক ভিডিও ক্লিপিং। দৃশ্যটি কোনও বাস্তব দৃশ্যের ছবি না হলেও একটি মর্মান্তিক ঘটনার করুণ ব্যঞ্জনায় সমস্ত প্রযোজনার আবহ-দৃশ্য রচনা করে।
পলাশবাড়িতে একটি অশক্ত সস্তা নির্মাণের বহুতল বাড়িতে চলত বিদেশ থেকে বরাত পাওয়া জামা সেলাইয়ের কাজ। সেখানে সামান্য মজুরিতে কাজ করতো হতদরিদ্র যুবক যুবতীরা। হঠাৎ ওই বাড়ি ভেঙে পড়ায় প্রায় সকলেই মারা যায়। এই সব হতভাগ্যদের নিয়েই নাটক – যারা ওই তুচ্ছ মজুরির চাকরি পেয়ে জীবন শুরু করেছিল অনেক আশা আর স্বপ্ন নিয়ে। সুদূর গ্রামের মেয়ে তারাবান তাদের একজন। তারাবানকে বিয়ে দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলে তার গরিব বাপ-মা। কিন্তু বিবাহিত জীবনও টেকে না, শ্বশুরবাড়ি থেকে বিতাড়িত হয় সে। কিন্তু বাপের বাড়িতেও আশ্রয় নেই তার। শহরে এসে এবার মনের মানুষ খুঁজে পায় আর চাকরি পায় গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে। মা হতে চলে সে। নতুন ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে বাঁচে। কিন্তু সেই মরণ-রাত্রেই নাইট শিফটে তার ডিউটি পড়ে। নাটকের আখ্যানাংশ খুবই স্বল্প। তারাবান ছাড়া সব চরিত্রই জনতার মুখ, কারণ প্রযোজনার কেন্দ্রে কোনও ব্যক্তি নয় থাকে সব নারীপুরুষ যারা এই নির্মম ঘটনার শিকার। কেবল পলাশবাড়ির নয়, তৃতীয় বিশ্বের সব দরিদ্র দেশের ট্র্যাজেডি। তারাবানও এক বিশাল জন-অংশের মুখ, আবার সেই সঙ্গে দারিদ্র-সমাজ-ধর্মের নিগড়ে-বাঁধা সকল নারীর প্রতিনিধি। তারাবানের ভূমিকায় পরভিন পারুর অভিনয় তাই অনুচ্চ মাত্রার, ভাবাবেগে আলোড়িত নয় কিন্তু অভিঘাতে তীব্র। প্রচ্ছন্ন থাকলেও এই প্রযোজনার একটি প্রতিবাদী অভিমুখ অদৃশ্য থাকে না যখন পোশাক ব্যবসায়ের বিদেশি প্রতিনিধির সঙ্গে গোপন মোলাকাত হয় স্থানীয় ব্যবসায়ীর। দুপক্ষের উদগ্র মুনাফা-লাভেরই পরিণতি পলাশবাড়ির ট্র্যাজেডি।
তিন কবিকে নিয়ে
রবীন্দ্রসদনে নীলা মজুমদারের একক দেখলেন বিপ্লবকুমার ঘোষ
সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে ‘খেয়া’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে নীলা মজুমদার পরিবেশন করলেন রজনীকান্ত, অতুলপ্রসাদ ও দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গান। এ দিন প্রতিটি গান শুরুর আগে শিল্পী গানের পটভূমি বিশ্লেষণ করলেন। ফলে পরিবেশিত গানগুলি শ্রোতাদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। এ ছাড়াও কথা ও সুরের সঠিক মেলবন্ধনে গানগুলি শিল্পীর কণ্ঠে এক ভিন্ন মাত্রা পেয়ে যায়। এ দিনের অনুষ্ঠানের বাড়তি পাওনা ছিল শিল্পীর প্রতি শ্রোতাদের সম্মান প্রদর্শন। অনুষ্ঠান শুরুর আগে শ্রোতারা উঠে দাঁড়িয়ে এই প্রবীণ শিল্পীকে সম্মানিত করেন।
রজনীকান্তের গান দিয়ে শিল্পী অনুষ্ঠান শুরু করলেন। ইমনকল্যাণ রাগের ‘ঐ বধির যবনিকা’ গানটির পরিবেশন ছিল অতি মনোরম। পরের গান বেহাগে ‘আমি অকৃতী অধর্ম’। রজনীকান্তের ‘শারদাগমনে নগরবাসীজনে’ কীর্তনাঙ্গের এই গানটিতে খোলের সংগতটিও অপূর্ব। অতুলপ্রসাদের প্রতিটি গানই সুগীত। ‘জল বলে চল’, ‘আর কতকাল থাকবো বসে’, ‘যারা তোরে বাসলো ভাল’ ইত্যাদি গান। পাশ্চাত্য দেশে গিয়ে দীর্ঘকাল সেখানকার গান নিয়ে চর্চা করেছিলেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়। সেইজন্য তাঁর গানে রয়েছে পাশ্চাত্য সঙ্গীত ও ভারতীয় সঙ্গীতের অনবদ্য মিশ্রণ। সেই ধারা বজায় রেখে শিল্পী এদিন গেয়ে শোনালেন ভীষ্ম নাটকের ‘আমরা মলয় বাতাসে’। পরে শোনালেন শাজাহান নাটকের ‘আজি এসেছি’, নূরজাহান নাটকের ‘বেলা বয়ে যায়’। একই সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাগেশ্রী রাগের উপর ‘সকল ব্যথার ব্যথী’। আর শোনালেন দরবারি কানাড়ায় ‘তোমারেই ভালবেসেছি’। তিন কবিকে নিয়ে, তাঁদের গানের সম্ভার নিয়ে একগুচ্ছ গানের সুনির্বাচিত সংকলন শ্রোতাদের মুগ্ধ করে।
প্রশংসা প্রাপ্য আত্মকথনে ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ স
সুলগ্না বসু
ম্প্রতি পদাতিকের আয়োজনে সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় অভিনীত মনোলগ বা স্বগত কথন ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ এক অনবদ্য অভিজ্ঞতা। এটি সুজয়ের একক অভিনয়। সংবেদনশীলতা এবং মননশীলতার এক সার্থক সমন্বয়। ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ একটি মানুষের আত্মানুসন্ধান। মনের মহলের অলিতে-গলিতে এক অনায়াস চলন। হয়তো এক নব জন্মদিন উদযাপনের গভীর আকাঙ্ক্ষায়।
নাটকের সূচনা একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার কপি লেখক রনি দাসের বাড়ির ড্রয়িং রুমে। এক সন্ধায় সে ফিরে আসে তার সংস্থা এবং ক্লায়েন্টদের সম্পর্কে প্রবল হতাশাবোধ ও বিরক্তি নিয়ে। ক্রমশ অতীতচারণায় মগ্ন হতে থাকে সে। তার মনে পড়ে শৈশবের বেদনা ও যন্ত্রণার কথা। পরবর্ত়ীতে অপমান ও লজ্জার কথা। তারও পরে কী ভাবে তার জীবন পরিবর্তিত হল, যখন তার সঙ্গে দেখা হল লন্ডনে রজার ইভান্সের সঙ্গে। অভিনেত্রী সুদীপা বসুর নির্দেশনা, দীপায়ন গঙ্গোপাধ্যায়ের আবহ মনে রাখার মতো। প্রশংসা করতেই হয় সুজয়ের অভিনয় দক্ষতার।
কঠোর ও উদ্ধত চরিত্র
চৈতী ঘোষ
সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে, আধুনিক নৃত্যচর্চা ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রেরণায় পরিবেশিত হল একটি বিশেষ অনুষ্ঠান। যার প্রথমার্ধে মঞ্চস্থ হয় ফ্রেঞ্চ নাট্যকার পিয়ের কর্নের ‘দ্য সিড্’ নাটক অবলম্বনে রচিত নাটক ‘অতএব’। নির্দেশনায় ছিলেন দেবাশিস রায়চৌধুরী।
দ্বিতীয়ার্ধে পরিবেশিত হয় ‘নটীর পূজা’। উগ্র ব্রাক্ষ্মণ্যধর্মের প্রতিনিধি দেবদত্ত, রাজা বিম্বিসারকে সরিয়ে রাজকুমার অজাতশত্রুকে সিংহাসনে বসিয়ে নিজের ইচ্ছা চরিতার্থ করতে চায়। শুরু হয় রাষ্ট্র বিপ্লব।
অনতিকাল পরেই অজাতশত্রুর বোধোদয় হয়। প্রতিষ্ঠিত হয় চিরন্তন শান্তির বাণী, বুদ্ধের বাণী – ‘বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি। পতিতা নটী হয়ে ওঠে পূজারিনী বুদ্ধশিষ্যা। এক অনন্য অনুভূতি মনকে প্রভাবিত করে। শ্রুতি বন্দ্যোপাধ্যায় তার সুন্দর মুখজ অভিনয়ের মাধ্যমে ও মনিপুরি নৃত্যের কোমল নৃত্যাঙ্গিকে শ্রীমতী চরিত্রের এই রূপান্তরটিকে ফুটিয়ে তোলেন। যা এক কথায় অনবদ্য।
দেবদত্তের মতো কঠোর ও উদ্ধত চরিত্রটিকে যথাযথভাবে তুলে ধরলেন জয়ন্ত মুখোপাধ্যায় ও তার সহযোগী শিল্পীরা। চরিত্রানুযায়ী প্রত্যেকেই তাঁদের সুনাম বজায় রেখেছেন শুরু থেকে শেষ অবধি। এ ছাড়াও অজাতশত্রুর ভূমিকায় গুরু কলামন্ডলম্ ভেঙ্কিটও এককথায় অসাধারণ। তার চরিত্রের উত্তরণকে তিনি কথাকলি নৃত্যাঙ্গিকের মাধ্যমে এ দিন শ্রোতাদের সামনে উপস্থাপিত করলেন।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ড. সোমনাথ সিংহ যিনি মঞ্চে রাজা বিম্বিসারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তার সৌম্য শান্ত ভাবমূর্তি দর্শকদের মুগ্ধ করে।
আজ মন চেয়েছে
সম্প্রতি আইসিসিআর-এ অন্বেষার অনুষ্ঠানের শুরুতেই গাইলেন রুমা সিংহ। এ ছাড়াও ইন্দ্রাক্ষী ঘোষ বসু, কমলিকা চক্রবর্তী, অর্পিতা রায়ের গান ভাল লাগে। এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেবশঙ্কর হালদার, শ্রাবণী সেন। ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘এই তো জীবন’ অনবদ্য। সুছন্দা ঘোষের কণ্ঠে ‘পুরানো সেই দিনের কথা’, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্তের ‘শাওন রাতে যদি’, শমীক পালের ‘ভালবাসার আগুন জ্বালাও’, প্রবুদ্ধ রাহার ‘ঝড় উঠেছে বাউল বাতাস’, দীপ্তি চন্দ্রের ‘ঘুম ঘুম চাঁদ’, কাকলি দেবের ‘আজ মন চেয়েছে’, শৈবাল চৌধুরীর ‘ভোলা মন’, সুদীপ্তা বর্মনের কণ্ঠে ‘আজ গুন গুন’ অনুষ্ঠানে অন্য মাত্রা এনে দেয়। এ ছাড়াও গাইলেন সন্ধ্যাশ্রী দত্ত, সুতপা চৌধুরী, তানিয়া দাশ, নন্দিনী ভট্টাচার্য, অমিতেশ চন্দ, অরুন্ধতী চট্টোপাধ্যায়, বাবলি চক্রবর্তী প্রমুখ। পাঠে সুপ্রকাশ মুখোপাধ্যায়।
গানে-আড্ডায়
সম্প্রতি রোটারি সদনে অনুষ্ঠিত হল ‘দিশা’-র অনুষ্ঠান। অলক রায়চৌধুরী রবীন্দ্রনাথ এবং বিভিন্ন সঙ্গীত রচয়িতাদের হাসির গান পরিবেশন করেন। নৃত্যশিল্পী কৌশিক চক্রবর্তী শাস্ত্রীয় নৃত্যের নবরসের অভিব্যক্তিগুলি অভিনয়ের মাধ্যমে মেলে ধরলেন। প্রথম দিনের শেষ পর্যায়ে সমকালীন আধুনিক গান নিয়ে সৌম্য বসুর সঞ্চালনায় এক চমৎকার আড্ডা-গানে মেতে উঠেছিলেন উদীয়মান এক ঝাঁক শিল্পী। কিঞ্জল, অরুণাশিস, গৌরব ও স্নিগ্ধদেব। তবে এ দিনের অন্যতম বিষয় ছিল, শান্তনু বসুর ‘বাংলা চলচ্চিত্রে রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রয়োগ’। নির্দেশনায় ইন্দ্রাণী সেন।
সারথির ভাবনায়
সারথি’র আয়োজনে সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হল গান ও পাঠের অনুষ্ঠান। শুরুতেই পার্থ মুখোপাধ্যায় শোনালেন রবীন্দ্রনাথের মিলন ও পৃথিবী কবিতাটি। বর্ণালী সরকার ‘চিরদিনের দাগা’। এর পরে শ্রীমন্তী দাশগুপ্ত শোনালেন রবীন্দ্র-কবিতা ‘মরণ মিলন’।
এছাড়াও অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে সুন্দর পাঠ করলেন স্বাগতা পাল (প্রথম পূজা), সুনেত্রা ঘটক (বিজয়া দশমী), ইমন চক্রবর্তী, জয়ন্ত ঘোষ প্রমুখ। শমীক পাল, অলক রায়চৌধুরী, শোনালেন বেশ কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গুরু শিষ্য পরম্পরা
শিখা বসু
সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে ‘শ্রাবণী সেন মিউজিক আকাদেমি’র আয়োজিত অনুষ্ঠানের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল যেন গুরু শিষ্য পরম্পরা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই শিল্পী স্মরণ করলেন তাঁর বাবার কথা, মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা আর দিদির সঙ্গে মধুর সম্পর্ক। শ’দেড়েক ছাত্রছাত্রী, কখনও একক, কখনও সমবেত। প্রতিটি গান সুগীত। প্রত্যেক গানের মধ্যেই যেন শ্রাবণীর গায়কির মেজাজ। সুর-তাল-লয় সবেতেই পরিপূর্ণ। একক গানগুলির মধ্যে বিদিশার ‘জগৎ জুড়ে’, শ্রবণার ‘ছায়া ঘনাইছে’, জয়তীর ‘উতল ধারা’ অপূর্ব। সমবেত গানগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘এ শুধু অলস মায়া’, ‘গহন কুসুম’ প্রভৃতি।
শ্রাবণী গাইলেন শেষে। শ্রোতারা যেন তারই অপেক্ষায় ছিলেন। তাঁর উদাত্ত কণ্ঠে ‘মোর সন্ধ্যায় তুমি সুন্দর বেশে’ সঠিক নির্বাচন। শিল্পী নিজেই জানালেন যে এই গানটি তিনি নির্বাচন করেছেন কারণ আজ তাঁর জন্মদিন। শেষ গানও তাই ‘বন্ধু রহ রহ সাথে’।
স্মরণে-বরণে
বিশিষ্ট কবি রণজিৎ কুমার সেনের জন্মদিবসটি শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করল ‘গানের ভুবন’ সংস্থা। বর্ষা-সংগীত-কবিতা ও স্মৃতিচারণার মধ্য দিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানালেন সংযুক্তা ভাদুড়ি, অশোক ঘোষ, চন্দ্রা মহালনবিশ, আশিস ঘোষ, অব্যয় চট্টোপাধ্যায়, তপতী আচার্য, সুচিন সিংহ, রুনু ঘোষ, তপোব্রত ব্রক্ষ্মচারী, শৈবাল চক্রবর্তী। শেষে গাইলেন কবি-কন্যা দীপান্বিতা সেন। যন্ত্রসঙ্গীতে ছিলেন স্বপন আচার্য, উদয় হালদার।
একটি মৃত্যু, প্রশ্নও
‘৪৬ গণনাট্য স্ট্রিট’ নাটকে দেখলেন পিনাকী চৌধুরী
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল হাতেখড়ি প্রযোজিত নাটক ‘৪৬ গণনাট্য স্ট্রিট’। এক তরুণ নাট্যকারের মৃত্যুতে শ্মশানে সমবেত হয়েছেন কিছু নাট্যমোদী মানুষ। যার মধ্যে অন্যতম নাট্যকারের পরিচিত বন্ধু ও অভিনেত্রী পল্লবী। হঠাৎ যেন সবাই মায়াবী কনসার্টে বিভোর হয়ে পড়েন। অরুণেশ এবং পল্লবীর কথোপকথনে ধরা পড়ে প্রায় পঞ্চাশ বছরের নাট্যক্রমের মধ্য দিয়ে থিয়েটারের যে আপেক্ষিক বিবর্তন ঘটেছে, তার কিছু টুকরো দৃশ্য। গ্রুপ থিয়েটারের ভবিষ্যৎ কী? উঠে এসেছে তারও কিছু খণ্ড চিত্র।
অবধারিতভাবে নাটকে উঠে এসেছে রাজনীতির কথাও। পল্লবীর ভূমিকায় কমলিকা বন্দ্যোপাধ্যায় সাবলীল, ভাল লাগে অরুণেশের ভূমিকায় হিমাদ্রি শেখর দে-র অভিনয়। নাটক হিমাদ্রি শেখর দে। হিরণ মিত্র’র মঞ্চ বেশ অভিনব। সুরজিৎ এবং শুভেন্দু মাইতির সঙ্গীত এ নাটকের বড় সম্পদ।
নির্দেশনায় দেবাশিস ঘোষ দস্তিদার।
যখন কবিতাও প্রাণ ফিরে পায়
সম্প্রতি ঝুম চৌধুরীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। উদ্বোধনী সঙ্গীত গাইলেন শ্রাবণী সেন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই ঝুম চৌধুরীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেন। আগামী দিনে বাংলা কবিতা আরও প্রসারিত হবে এমনই আশা রাখলেন। এই সংকলনে ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠে ছিল দশটি কবিতা। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘ভোর’, ‘বৃদ্ধাশ্রম’, ‘চিঠি’। আবহ সঙ্গীতে ছিলেন কল্যাণ সেন বরাট। তবে বলতেই হয়, ঝুম চৌধুরীর ‘প্রাঙ্গণ’ সংকলনের ‘মনের মানুষ’, ‘চাতক’, ‘প্রেমিক’ কবিতাগুলি শ্রোতাদের মন ভরিয়ে দেয়।
অনুভবের গভীরতায়
সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে রবীন্দ্রসঙ্গীত ও আধুনিক গান শোনালেন পম্পা রায় বসু। বর্ণময় উচ্চারণ ও অনুভবের গভীরতায় তাঁর প্রতিটি গান মর্মস্পর্শী। ‘আজ সব দরজা’, ‘এই মম জোছনায়’, ‘সাগর ডাকে’ উল্লেখযোগ্য গান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy