বৈষ্ণব পদাবলী, কীর্তন আর রবীন্দ্রনাথ - এই তিনটি বিষয়কে একসূত্রে গ্রথিত করে রবীন্দ্রসদনে ‘পরান বধুয়া সনে’ শীর্ষক এক নৃত্য-গীতি আলেখ্য উপস্থাপন করল ব্রতী। ভাবনার বিষয়বস্তু রাধাকৃষ্ণের লীলা যা প্রেমের চিরাচরিত উদাহরণরূপে বিরাজমান। অপালা বসু (সেন)-র ভাবনায় এই বিষয়কে অবলম্বন করেছেন প্রায় চার ঘন্টার অনুষ্ঠানটিতে। উল্লেখযোগ্য বিশেষত্ব হল বিন্যাসে বিশেষ করে গানের অংশগুলি সুন্দর করে মিলিয়ে দেবার কারণে, কোনও সময়েই তা বিচ্ছিন্ন বলে মনে হয়নি।
রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলার যে অধ্যায়গুলিকে অপালা ধরবার চেষ্টা করেছেন রবীন্দ্রসঙ্গীতের মাধ্যমে, সেগুলি বাদ দিলে গোবিন্দদাস, চণ্ডীদাস, বিদ্যাপতি প্রমুখ পদকর্তাদের রচিত দশটি কীর্ত্তন সংযোজিত হয়েছিল এই নিবেদনে। রূপায়ণে নাচ -গান-আবৃত্তি একসুরে বাঁধা থাকলেও পাঠের ক্ষেত্রে একটু তাড়াহুড়ো হয়ে গেছে। কৌশিক সেন, মধুমিতা বসু ও সুরজিৎ ঘোষ তাঁদের নিজস্ব উচ্চারণ ও কণ্ঠস্বরের দ্বারা পাঠের কর্তব্যভার সম্পন্ন করেছেন। সুলগ্না রায়, দীপাঞ্জন দত্ত, বিনতা চক্রবর্তী, কাবেরী সিং প্রত্যেকেই নিজ নিজ নৃত্যধারার মাধ্যমে সুন্দর নাচলেও প্রত্যেকেই বিচ্ছিন্নভাবে নৃত্য প্রদর্শন করেছেন।
সঙ্গীতে যাঁরা অংশগ্রহণ করেছেন তাঁরা সকলেই অপালার ছাত্রছাত্রী। তাঁরা যেমন রবীন্দ্রসঙ্গীতগুলি গেয়েছেন, তেমনি দক্ষতার সঙ্গে পদাবলী কীর্তনগুলি গেয়ে তাতে প্রাণসঞ্চার করেছেন। এঁদের মধ্যে আরাত্রিকা ভট্টাচার্যর কণ্ঠের বিস্তার চমৎকার। বিনম্র পাত্র ও প্রিয়াঙ্গী লাহিড়ীও নিবেদনে দক্ষ। রবীন্দ্রসঙ্গীতে ও কীর্তনে ইমন চক্রবর্তী মুগ্ধ করেছেন। রবীন্দ্রসঙ্গীতে আরও যাদের ভাল লেগেছে তারা হলেন অনুভা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিরূপ দত্ত, শ্রেয়া ঘোষ, অরিন্দম দাশগুপ্ত। অপালা নিজে গেয়েছেন ‘হৃদয়বাসনা পূর্ণ হল’ গানটি।
ভাবে-অনুভবে
সম্প্রতি ‘ভাবে-অনুভবে’ মঞ্চস্থ করল ‘বাইশে শ্রাবণ-রবীন্দ্র স্মরণ’ শীর্ষক সুন্দর অনুষ্ঠান। প্রথম শিল্পী শ্যামল ভট্টাচার্য শোনালেন দরদ দিয়ে কয়েকটি রবীন্দ্রগান। তাঁর কণ্ঠ, উচ্চারণভঙ্গি এবং রাবীন্দ্রিকভাব প্রতিফলিত হল ‘তুমি কি কেবলই ছবি’, ‘জীবন মরণের সীমানা ছাড়ায়ে’ গানগুলিতে, শ্রোতাদের মনে থাকবে অনেক দিন। তানিয়া দাশ গাইলেন ‘ধায় যেন মোর’ যা অত্যন্ত শ্রুতিমধুর। সুছন্দা ঘোষের গাওয়া ‘তোমার কাছে এ বর মাগি’ শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে। এ দিন ভাল গাইলেন তৃষিত চৌধুরী, আইরিণ, অর্পিতা, তনুশ্রী ও আনন্দ।
নাচের অংশে আলোকপর্ণা গুহ অনুষ্ঠানটিকে অন্য মাত্রা দিলেন। গার্গী নিয়োগী ও দীপ্তাংশু পালের নাচ যথাযথ। পাঠে প্রণতি ঠাকুর, ঊর্মি ভট্টাচার্য ও শঙ্কর রায় চৌধুরী প্রশংসনীয়। যন্ত্রানুষঙ্গে অনবদ্য ছিলেন পণ্ডিত বিপ্লব মণ্ডল, সুব্রত (বাবু) মুখোপাধ্যায় ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy