এক ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে সবাই। যেখানে সমস্ত সমাজটাই ক্রেতা হয়ে গেছে। বাড়-বাড়ন্ত স্পনসরশিপের। অন্য দিকে সময় সুযোগ বুঝে নিজের আবেগকে বেঁচতে পারলেই কেল্লাফতে। যাতে লাভবান হতে পারেন আমি, আপনি কিংবা সুযোগসন্ধানী মানুষেরা। ভোগবাদী সমাজে সবাই আজ পণ্য। বিক্রি হয় ভালবাসা। স্পনসর হয় বিয়ের এমনকী ভাবী সন্তানেরও। এমনই এক বিষয়কে কেন্দ্র করে – মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের নাটক অবলম্বনে, কলকাতা ইউটোপিয়ান-এর প্রযোজনায় সম্প্রতি মঞ্চস্থ হল নাটক ‘অক্টোপাস লিমিটেড’। নির্দেশনায় বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। নতুনত্ব চোখে পড়ল ডিজাইনিং-এ, মঞ্চায়নের কৌশলে। এখানেই পরিচালকের সার্থকতা।
এ নাটকে ফ্যান্টাসির মোড়কে উঠে আসে সামাজিক জটিলতা, অর্থনৈতিক সংকট। পরিহাস করা হয় স্পনসরশিপের জাল ছড়ানো সময়কে। একটি ছেলে ও মেয়ের বিয়েকে কেন্দ্র করে এক স্পনসরশিপ এজেন্টের খেলার মাধ্যমে উঠে আসে সম্পূর্ণ চিত্রটা।
এক প্রেমিক-যুগল পার্কে এসে বসে। গল্প করে, বাদাম ভাজা খেয়ে সময় অতিবাহিত করে। স্বপ্নের জাল বোনে। কিন্তু সে সব স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার আর্থিক সঙ্গতি তাদের নেই। কারণ যুবকটি বেকার। তবু স্বপ্নের ডানা মেলতে ক্ষতি কি! লেকের ধারে বসে তারা বেশ ভাবতে পারে সমুদ্রের ধারে পৌঁছে গেছে। লেকের জলে দেখতে পায় বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে। আর সে ঢেউয়ের ঝাপটায় ভেসে আসছে প্রচুর ঝিনুক। মেয়েটি মহানন্দে সেগুলি কুড়িয়ে নিচ্ছে। এ দৃশ্যে একটি দড়িকে প্রেমিক যুগলের ঢেউয়ের মতো নাড়ানো, সঙ্গে উপযুক্ত আলোর ব্যবহারে সুন্দর মুহূর্ত তৈরি হয়। এরকম আরও হাজার রকম খেলায় তারা মেতে থাকে। যেমন- ছেলেটি পার্কের বেঞ্চে বসেই বেশ স্বপ্ন দেখতে পারে, পড়ে থাকা পার্স কুড়িয়ে পাঁচ হাজার টাকা পেয়েছে। আর মেয়েটি কুড়িয়ে পেয়েছে একটি সোনার হার। এ নিছকই কল্পনা, অবাস্তব। তবুও এই মিছে মিছে খেলার মধ্যেই জীবনের অপূর্ণ ইচ্ছেগুলোকে ছুঁয়ে দেখার বাসনা। এর মধ্যে দিয়েই উঠে আসে করুণ যন্ত্রণা, অসহায়তা।
এই প্রেমিক যুগলের সঙ্গেই পার্কের বেঞ্চে বসে থাকতে দেখা যায় এক ভদ্রলোককে (এজেন্ট)। প্রায় নীরবে বসে থাকা এই সুযোগসন্ধানী মানুষটি ওদের জানায় তাদের খেলাটা কিন্তু মিথ্যে নয়, বাস্তব।
এই ব্যক্তি অক্টোপাস কোম্পানির এজেন্ট। যিনি সুযোগ বুঝে পাঁচ বছরের স্পনসরড বিবাহিত জীবনের টোপ দেয় ছেলে-মেয়েটিকে। বিয়ের দিনে একে একে এসে হাজির হয় অন্যান্য কোম্পানির এজেন্টরাও। সুযোগ বুঝে বর-কনে নিলামে চড়ে। অক্টোপাস কোম্পানির এজেন্টের চরিত্রে শান্তনু নাথ অনবদ্য। ছেলে ও মেয়েটির চরিত্রে দীপ চক্রবর্তী এবং সঙ্গীতা দত্তের অভিনয়ও মন ছুঁয়ে যায়। এছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে ছিলেন অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়, সুদীপ বিশ্বাস, সুস্মিতা ভট্টাচার্য, সাহিল খান প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy