Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বাড়ির কাছে আরশিনগর

রবীন্দ্রসদনে শ্রীকান্ত ও সহজিয়াহৃদয়ের গভীরে, গোপন নির্জনতায় যে রহস্যময়তা রয়েছে তা বিভিন্ন আঙ্গিকে প্রতিফলিত হয়েছে বাংলার মরমিয়া সাধন সংগীতে এবং রবীন্দ্রগানে। চেতন-অচেতন, সাকার-নিরাকারের ভাগবত ব্যাখ্যা বিন্যাস, উপলব্ধি ও গান নিয়ে সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হল ‘টেগোর অ্যান্ড দ্য মিস্টিক সঙ্গস্ অব বেঙ্গল’। পরিবেশনায় ছিলেন শ্রীকান্ত আচার্য এবং সহজিয়া লোকগানের দল।

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৫ ০০:০৩
Share: Save:

হৃদয়ের গভীরে, গোপন নির্জনতায় যে রহস্যময়তা রয়েছে তা বিভিন্ন আঙ্গিকে প্রতিফলিত হয়েছে বাংলার মরমিয়া সাধন সংগীতে এবং রবীন্দ্রগানে। চেতন-অচেতন, সাকার-নিরাকারের ভাগবত ব্যাখ্যা বিন্যাস, উপলব্ধি ও গান নিয়ে সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হল ‘টেগোর অ্যান্ড দ্য মিস্টিক সঙ্গস্ অব বেঙ্গল’। পরিবেশনায় ছিলেন শ্রীকান্ত আচার্য এবং সহজিয়া লোকগানের দল। তাঁরা যথাক্রমে গাইলেন – ‘বাড়ির কাছে আরশিনগর’, ‘কান পেতে রই’, ‘অধর দরবেশ’, ‘মাঝে মাঝে তব দেখা পাই’, ‘প্রাণের মানুষ’ গানগুলি। সেই পরিবেশনে মিলে মিশে ছিল রবীন্দ্রনাথের গান, ভবাপাগলা, লালনসাঁই থেকে মারফতি। গানের তত্ত্ব ও অন্তর্নিহিত ভাবের সহজ ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন সহজিয়ার দেব। রবীন্দ্রগানে এই তত্ত্বের প্রভাব নিয়ে গানও শোনালেন শ্রীকান্ত। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে শ্রীকান্ত এবং দেব-এর যৌথ নিবেদন ছিল ‘দেখেছি রূপসাগরে মনের মানুষ’ এবং ‘ভেঙে মোর ঘরের চাবি’। অপূর্ব উপস্থাপনা।
অনুষ্ঠানটির আয়োজনে ছিল হৃদকমল।

রাগে ও অনুরাগে

রাগে অনুরাগে অতুলপ্রসাদ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটিতে ছিলেন রাগে নবনীতা চট্টোপাধ্যায় ও অনুরাগে ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকে জানেন অতুলপ্রসাদ সেনের বাংলা গান লক্ষ্ণৌতে তাঁর বসবাসকালীন অনেক ঠুমরি গানের-ই ভাঙা রূপ। তাই অতুলপ্রসাদের গানে সেই লক্ষ্ণৌ ঠুমরি গায়কী-কেই পাওয়া যায়। যা এখনও সমান জনপ্রিয়। অতীতে প্রবীণ শিল্পী মঞ্জু গুপ্ত, রেনুকা দাশগুপ্ত, সন্তোষ সেনগুপ্ত, পাহাড়ী সান্যালের গায়কীতে তার প্রমাণ মেলে। ঠুমরির ছোট ছোট মুড়কি সেটি রাগপ্রধান গায়কী ছাড়া সম্ভব নয়। যা শোনা যায় অতুলপ্রসাদের গানে।

অনুষ্ঠানে দুই শিল্পীর সমঝোতা ছিল অতি সুন্দর। ঋদ্ধি সূক্ষ্ম দক্ষতায় রাগে, ঠুমরি গায়নে নবনীতা চট্টোপাধ্যায়। অতুলপ্রসাদের গানে ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়। নবনীতার ‘কোন সলি গায়ে শ্যাম’ বা ‘বাঁতাউ না সইয়া’ এই সন্ধ্যার শ্রেষ্ঠ নিবেদন। ঋদ্ধি গাইলেন ‘শ্রাবণ ঝুলাতে’ কাজরীর ঢঙে। বেশ নতুনত্ব আছে গানে।

গানে ও কথায়

সোনারতরী কলাকেন্দ্রের আয়োজনে বিড়লা অ্যাকাডেমির অনুষ্ঠানে শুরুতেই সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায় শোনালেন ‘যে রাতে মোর’। মৌসুমি কর্মকার গাইলেন ‘নীল অঞ্জন ঘন’। সুন্দর গায়কী। এছাড়াও অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন সুছন্দা ঘোষ, সুতপা হালদার ‘আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার’, দীপ্তি চন্দ্র ‘আজ শ্রাবণের পূর্ণিমাতে’ প্রমুখ।

আবৃত্তির অনুষ্ঠানে দেবাশিস মিত্র শোনালেন রবীন্দ্রনাথের ‘স্মরণ’ কবিতাটি। তানিয়া মিত্র শোনালেন ‘কৃষ্ণকলি’। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন মহুয়া দাশ, সোমা ঘোষ, দেবাশিস হালদার প্রমুখ।

শেষ পর্বে যাঁরা গাইলেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ইন্দ্রাক্ষী ঘোষ বসু, গিনিমালা দে, সীমলি মণ্ডল, রঞ্জিকা রায়, শর্বরী মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।

সংযোজনায় ছিলেন নিমাই মণ্ডল।

গানের ধ্রুবতারা

সম্প্রতি শিশির মঞ্চে রূপমঞ্জরীর অনুষ্ঠানে বনশ্রী সেনগুপ্তের গাওয়া ‘জীবন খাতার প্রতি পাতায়’ গানটি মন ভরিয়ে দেয়। সুস্মিতা গোস্বামীর ‘সুরের আকাশে’ গানটি এ দিন অন্য মাত্রা এনে দেয়। স্বপন সোম ও দেবারতি সোমের দ্বৈত কণ্ঠে ‘কে প্রথম কাছে এসেছি’ সঠিক নির্বাচন। চন্দ্রাবলি রুদ্র দত্তের ‘শুধু ভালবাসা’, অগ্নিভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘লাল নীল সবুজের’, সুছন্দা ঘোষের ‘আজি ঝরঝর’ গানগুলি শ্রোতাদের মন ভরিয়ে দেয়। নবীনদের মধ্যে মধুমিতা নন্দীর ‘আমার যে সব’, দেবরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আমি পথ ভোলা’ মন্দ নয়। অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন রমাপ্রসাদ দেব, রাজা রায়, নন্দিনী ভট্টাচার্য, তনুশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। তবে শেষে তানিয়া দাশ ও রাজর্ষি রায়ের পরিচালনায় ‘কচ ও দেবযানী’ নৃত্যনাট্যটি প্রশংসিত হয়। নৃত্যে ছিলেন দীপ্তাংশু পাল ও গার্গী নিয়োগী।

চেনা খুনি

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল অঙ্কুর প্রযোজিত শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘রক্তের দাগ’। একুশ বছরের ছেলে সত্যকাম ব্যোমকেশের কাছে এসে অনুরোধ করে যে, তার যদি হঠাৎ মৃত্যু হয়, তাহলে সেই তদন্ত যেন ব্যোমকেশ করেন। এর জন্য তাঁকে সে অগ্রিম এক হাজার টাকাও দিয়ে যায়। সত্যকাম বখাটে ছেলে। তার মৃত্যু হয় বন্দুকের গুলিতে। ব্যোমকেশ তদন্ত করে দেখলেন সত্যকামের জন্মরহস্য বড় অদ্ভূত। বাস্তবে উপপতি তার পিতা নন। দেখা যায়, উপপতি সত্যকামকে হত্যা করেছে।

ব্যোমকেশের ভূমিকায় সায়ন্তন রায় এবং অজিতের ভূমিকায় শান্তনু ঘোষ যথাযথ। সত্যকামের ভূমিকায় সন্দীপ ভট্টাচার্যের অভিনয় সাবলীল। উপপতির (ঈশান মজুমদার) অভিনয় গতানুগতিক। নাট্যরূপ পরিচালনা শুভদীপ চক্রবর্তী।

শ্রুতি উৎসব

সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে আবৃত্তি পরিষদের অনুষ্ঠানে প্রথম পর্বে ছিল বিভিন্ন শিল্পীর কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা পাঠ। দ্বিতীয় পর্বে ছিল নন্দন সিংহের অথর্ব বেদের শ্লোক। অপূর্ব উচ্চারণ। পরে অবশ্য বিভিন্ন কবির কবিতা পাঠও করলেন তিনি। এ ছাড়াও অন্যান্য শিল্পীদের পাঠ ছিল বেশ শ্রুতি মধুর ও মনোরম। শেষে ছিলেন ঈশিতা দাশ অধিকারী। তিনি বেশ কয়েকটি কবিতা শোনালেন। আবহে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়।

পূর্ণ হল প্রত্যাশা

সম্প্রতি গ্যালারি গোল্ড-এ অনুষ্ঠিত হল কুহেলীর ‘শাওন গগনে’ গীতি-আলেখ্য। শুরুতেই ছিল কাজল সুর এবং উষসী সেনগুপ্তের কোলাজ ‘টাপুর টুপুর’। পরে চন্দন চক্রবর্তী রবীন্দ্রকবিতা ‘আজি বর্ষা’ পাঠ করলেন। পরে ‘শাওন গগনে’ শ্রোতাদের কাছে বেশ উপভোগ্য হয়ে ওঠে। শিল্পীরা ছিলেন কাজল সুর, উষসী সেনগুপ্ত, শর্মিষ্ঠা দত্তপাঠক। কাজল পাঠ করলেন ‘বর্ষা’। মনের মানুষকে কাছে পাওয়ার তীব্র আকুতি। পরে সুছন্দা ঘোষের ‘কিছু বলব বলে’ সেই প্রত্যাশা পূর্ণ করে। শর্মিষ্ঠার ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’ অন্য মাত্রা এনে দেয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy