গলছে বরফ। —ফাইল চিত্র
নিউ ইয়র্ক থেকে সাংহাই— উপকূলবর্তী শহরগুলো নিয়মিত বন্যার কবলে পড়বে। উত্তর মেরু ও নিকটবর্তী এলাকায় বরফ গলন ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এর পরে হিমালয় ও দক্ষিণ মেরুতেও হিমবাহ ও বরফের স্তর অত্যন্ত দ্রুত হারে গলে যাবে। সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় মাছের ভাণ্ডার কমবে দ্রুত হারে, ফলে খাদ্য সঙ্কট অবশ্যম্ভাবী। গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমনের এ ধরনেরই প্রত্যক্ষ প্রভাব টের পাওয়া যাবে অদূর ভবিষ্যতে। বুধবার পেশ করা রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিবেশ সংক্রান্ত প্যানেলের সাম্প্রতিক রিপোর্টে এই অশনিসঙ্কেত রয়েছে।
গত অক্টোবরে রাষ্ট্রপুঞ্জের এই প্যানেলের প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছিল, বিশ্ব উষ্ণায়ন রুখতে বড় জোর ২০৩০ পর্যন্ত সময় পাওয়া যাবে। তার পরে ৩৬টি দেশ থেকে একশো জনেরও বেশি বিজ্ঞানীকে নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়। গত কয়েক মাসে দু’টি রিপোর্ট পেশ করেছেন তাঁরা। আজ রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু সংক্রান্ত শীর্ষবৈঠকে তৃতীয় তথা চূড়ান্ত রিপোর্টটি পেশ করা হয়েছে।
পরিবেশ প্যানেলের ভাইস চেয়ারপার্সন কো ব্যারেটের কথায়, ‘‘এই রিপোর্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই প্রথম পরিবেশবিজ্ঞানীরা পৃথিবীর প্রত্যন্ত প্রান্তে পৌঁছে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তাঁরা হিমালয়েও গিয়ে কাজ করেছেন, আবার মেরু অঞ্চলেও গিয়েছেন। এবং তাঁরা দেখেছেন যে, এই সব প্রত্যন্ত এলাকাতেও জলবায়ু পরিবর্তনের স্পষ্ট নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।’’
পরিবেশবিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমান হারেই যদি কার্বন গ্যাস নির্গমন চলতে থাকে, তা হলে ২১০০ সালের মধ্যে সমুদ্রের জলস্তর তিন ফুটেরও বেশি বেড়ে যাবে। ফলে উপকূলবর্তী এলাকায়, যেখানে আগে একশো বছরে এক বার বন্যা হত, সেখানে প্রতি বছরেই বন্যা হবে। বিপদে পড়বেন এই সব উপকূলবর্তী এলাকায় বসবাসকারী ৬৮ কোটি মানুষ।
পৃথিবীতে যে কয়েকটি বরফের চাদরে (আইস শিট)ঢাকা অঞ্চল রয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম গ্রিনল্যান্ড। যেটি ইতিমধ্যেই গলতে শুরু করেছে। গ্রিনল্যান্ডের বরফের চাদর যদি বেশি মাত্রায় গলে যায়, তা হলে চারপাশের জলস্তর কুড়ি ফুটেরও বেশি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বরফ গলছে দুই মেরুতেও। উত্তর মেরু অঞ্চলে বরফ গলনের হার সব থেকে বেশি। পরিবেশবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই বরফ গলন প্রক্রিয়া আর থামানো সম্ভব নয়। ‘‘এর ফলে আগামী দু’শো বছরে সামুদ্রিক জলস্তর কয়েক মিটার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে,’’ দাবি ইউনিভার্সিটি অব আলাস্কার অধ্যাপক রেজিন হকের।
ইটালিতে মঁ ব্লঁ পর্বতমালার একটি হিমবাহ যে কোনও সময়ে ভেঙে যেতে পারে এই আশঙ্কায় সেখানকার সব জনবসতি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আঞ্চলিক প্রশাসন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে গলতে শুরু করেছে প্লানপিনসিউ নামের এই হিমবাহটি। প্রতি দিন ২০-২৫ ইঞ্চি সরে আসছে সেটি। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যে কোনও মুহূর্তে পাহাড় থেকে ধসে পড়বে এই বরফের নদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy