পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফ্ফরাবাদ থেকে স্বামীর হাত ধরে কুপওয়ারা জেলায় এসেছিলেন তিনি। সেটা ২০১০ সাল। তার পর থেকে দীর্ঘ আট বছর জম্মু ও কাশ্মীরেরই বাসিন্দা আরিফা বেগম। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি নির্বাচিত হন খুমরিয়াল-বি গ্রামের সরপঞ্চের পদে।
‘‘এলাকার মানুষের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করব’’— আনন্দবাজারকে বলছিলেন আরিফা। বছর পঁয়ত্রিশের আরিফা ও তাঁর স্বামী গুলাম মহম্মদ মিরের তিন সন্তান। খুমরিয়াল-বি গ্রামেরই ছেলে মির। নব্বইয়ের দশকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন মাথাচাড়া দেওয়ার পরে জড়িয়ে পড়েন তিনিও। ২০০১ সালে অস্ত্র-প্রশিক্ষণ নিতে পাড়ি দেন পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে। মিরের মতো অনেকেই পরবর্তী কালে রাইফেল ছেড়ে সংসার পেতেছেন নিয়ন্ত্রণরেখার ও-পারে। বিয়ে-থা করে রয়ে গিয়েছেন। মির বিয়ে করেন মুজফ্ফরাবাদের পালনদারি গ্রামের মেয়ে আরিফাকে। সেখানেই ছিলেন দশ বছর।
২০১০ সালে কাশ্মীরি জঙ্গিদের পুনর্বাসন প্রকল্প ঘোষণা করে ভারত। অস্ত্র-প্রশিক্ষণ নিতে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে যাওয়া যুবকদের মূলস্রোতে ফেরার ডাক দেওয়া হয়। সঙ্গে বলা হয়, এঁরা যদি কেউ পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের বা পাকিস্তানের নাগরিককে বিয়ে করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে স্ত্রী-সন্তানদের ভারতে এসে বসবাস করার প্রয়োজনীয় শংসাপত্রও দেবে সরকার।
আরও পড়ুন: দরকার নেই কাশ্মীর, দেশের চারটি প্রদেশ সামলাক পাকিস্তান: আফ্রিদি
আরও পড়ুন: ই-পাঠশালায় ছবি-বিভ্রাটের ফাঁদে সুমিত থেকে পার্থও
এই ডাকেই সাড়া দিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে নেপাল হয়ে গ্রামে ফেরেন মির। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছিলেন আরিফা। এ বারের পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হওয়া পরে ‘পঞ্চ’ (অর্ধেক গ্রামের প্রধান) এবং ‘সরপঞ্চ’ (গ্রামপ্রধান)— দু’টি পদেই লড়বেন বলে ঠিক করেন তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না তাঁর বিরুদ্ধে। আরিফা জানান, পাকিস্তান থেকে যে মহিলারা স্বামীর সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরে এসেছেন, তাঁদের অধিকারের জন্য লড়াই করবেন তিনি। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর থেকেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয় তাঁকে। তবু ভয় মিরের। স্ত্রীর ছবিও তুলতে দিলেন না। আত্মবিশ্বাসী আরিফা বলেন, ‘‘নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে আমার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy