মণিকান্দন, পৃথা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।
ছিলেন দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী। আর এখন রীতিমতো দুধ, ঘি, গোবর, গোমূত্র বিক্রি করে মাসে কয়েক লাখ টাকা কামাচ্ছেন চেন্নাইয়ের এক দম্পতি। না, তাঁরা তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার চাকরি ছাড়েননি। চাকরির পাশাপাশি শখ থেকে শুরু হওয়া গো-পালন এখন মাসে প্রায় আড়াই লাখ টাকা আয়ের পথ করে দিয়েছে তাঁদের। আর এর শুরুটা হয়েছিল বাড়ির গ্যারাজ থেকে।
চেন্নাইয়ের পৃথা এবং মণিকান্দনের এই গো-পালনের শখ শুরু হয় ২০১৭ সালে। সেই সময় জাল্লিকাট্টু নিয়ে তামিলনাড়ুতে আন্দোলন শুরু হয়। তার আগে বা সেই সময়েও পৃথাদের গরু পোষার কোনও পরিকল্পনাও ছিল না। তিনি ও তাঁর স্বামী মাণিকান্দনের কৃষির বিষয়ে কিছু আগ্রহ ছিল। কিন্তু জাল্লিকাট্টুর সময় তাঁরা দেশি গরুর প্রজাতি নিয়ে বেশ আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এমনকি তাঁরা ইরোডে নামে একটি জায়গাতেও পৌঁছে যান ‘কংগিয়াম কলাই’ নামের একটি দেশি প্রজাতির গরু দেখতে। সেখানে তাঁরা দ্বিতীয় বার না ভেবে একটি কংগিয়াম কলাই গাই গরু কিনেও ফেলেন। আর সেটিকে আদমবক্কমে তাঁদের প্রায় ৫০০ বর্গ ফুটের গ্যারেজে রাখেন ।
প্রথমে তাঁদের গরুর পরিচর্যা, খাবার, ওষুধ ইত্যাদি সম্পর্কে কোনও ধারণা ছিল না। তাই তাঁরা সুযোগ পেলেই কাছাকাছি বিভিন্ন গোশালায় চলে যেতেন। সেখানে তাঁরা এই সব বিষয় শেখার চেষ্টা করতেন। শুধু তাই নয়, তাঁরা জীবনে যা করার কথা কখনও ভাবেননি গোশালায় গিয়ে হাতেনাতে সেই সব কাজ করেছেন। পরে তাঁদের মনে হয়েছে, গরুর দেখভাল করা একটি কুকুর বা বিড়াল পোষার মতোই বিষয়।
একটি গরুর দেখভালের বিষয়টি তাঁদের রপ্ত হয়ে যাওয়ার পর তাঁরা আরও গরু কেনার কথা ভাবেন। সেই সঙ্গে গরু দেখভালের জন্য কিছু লোক নিয়োগও করেন তাঁরা। এবার তাঁরা ছোটখাটো অথচ পুরোদস্তুর একটি দুগ্ধ খামার বা ডেয়ারি ফার্মের দিকে এগোতে থাকেন। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে তাঁরা পড়াশোনা এবং এ বিষয়ে অভিজ্ঞ মানুষদের সঙ্গে মতের আদান প্রদান চালিয়ে যান।
পৃথা জানিয়েছেন, তাঁদের জীবন তখন থেকে গরুদের চার পাশেই আবর্তিত হতে থাকে। এমনকি তাঁরা ছুটির দিনগুলিতেও নানা গোশালায় যেতেন। আর শুধু সপ্তাহ শেষের ছুটির দিনেই নয়, বড় ছুটিতে তাঁরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের গোশালায় যেতে শুরু করেন। এমনকি তাঁরা গো পালন নিয়ে প্রশিক্ষণও নেন। মণিকান্দন পুণেতে এবং পৃথা কর্নাটকের একটি জায়গায় এই প্রশিক্ষণ নেন। সেখানে তাঁরা শিখেছেন কী ভাবে গোবর, গোমূত্র থেকে নানান সামগ্রী তৈরি করতে হয়। এ ছাড়াও দুধ থেকে পনির, ঘি তৈরি তো আছেই।
আরও পড়ুন: লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সময় গায়ে আগুন লাগিয়ে দিল প্রাক্তন স্বামী, মৃত ভ্লগার
আরও পড়ুন: অনাথ হাতির দল বেঁধে যত্ন, মন ভরিয়ে দেওয়া ভিডিয়ো
পৃথাদের এই ব্যবসার কোনও নাম, সাইনবোর্ড কিছুই নেই। তাঁরা এখন দুধ, ঘি, পঞ্চগব্য, বিভূতি, পোকামাকড় দূর করার জিনিস, অর্গানিক ফ্লোর ক্লিনার, সাবান সহ প্রায় ২৫ রকম সামগ্রী উৎপাদন করেন। আর এই সব সামগ্রী তাঁরা কোনও দোকানে বা এজেন্টের মাধ্যমে বিক্রি করেন না। ক্রেতারা সরাসরি তাঁদের উৎপাদন কিনে নিয়ে যান। এক লিটার দুধ পৃথারা বিক্রি করেন ১০০ টাকায়। দুধের দাম প্রসঙ্গে পৃথার বক্তব্য, গুণমানের জন্যই এই দাম রাখা হয়েছে। আর তাঁদের ক্রেতারাও নাকি বাড়ির বাচ্চাদের এই দুধ ছাড়া বাজার থেকে কেনা কোনও দুধ খাওয়ান না। পৃথারা দিনে ৮০ লিটার দুধ বিক্রি করেন। সব কিছু মিলিয়ে তাঁদের মাসে প্রায় আড়াই লাখ টাকা আয় হয় এই গোশালা থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy