Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Jamia Milia Islamia University

জামিয়ার লাইব্রেরিতে ঢুকে পুলিশের এলোপাথাড়ি লাঠি, সেই ঘটনার ভিডিয়ো এ বার প্রকাশ্যে এল

দু’মাস আগে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্বিবিদ্যালয়ে ঢুকে পুলিশ তাণ্ডব চালিয়েছিল বলে অভিযোগ।

জামিয়ার লাইব্রেরিতে লাঠি নিয়ে চড়াও পুলিশ। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।

জামিয়ার লাইব্রেরিতে লাঠি নিয়ে চড়াও পুলিশ। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্যাব।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:৪৮
Share: Save:

এক জায়গায় এক সঙ্গে গোল হয়ে বসে রয়েছেন অনেকে। আবার বই-খাতা খুলে একাই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ। এমন অবস্থায় লাইব্রেরির মধ্যে উর্দিধারীদের দেখে হুলস্থুল পড়ে গেল চারিদিকে। মাথা বাঁচাতে টেবিলের নীচে আশ্রয় নিলেন কেউ। কেউ আবার সেঁটে গেলেন দেওয়ালে। তবে তাতেও রেহাই মিলল না। কখনও মাথায়, তো কখনও আবার পিঠে এসে পড়ল লাঠির বাড়ি। হাত তুলে মাথা বাঁচাতে গেলে সেই হাতেই এসে পড়ল এলোপাথাড়ি লাঠির ঘা।

দু’মাস আগে দিল্লিজামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি তাণ্ডবের এমনই ভিডিয়ো এ বার সামনে এল। যদিও এই ভিডিয়োর সত্যাসত্য আনন্দবাজার যাচাই করে দেখেনি। তবে তাতে লাইব্রেরিতে ঢুকে কার্যত একতরফা তাণ্ডব চালাতে দেখা গেল দিল্লি পুলিশকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীদের নিয়ে গঠিত জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় ৪৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়োটি প্রকাশ করা হয়েছে। লাইব্রেরির সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে সেটি বার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাতে শুধু মারধরই নয়, লাঠি উঁচিয়ে পড়ুয়াদের শাসানিও দিতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে।

জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ‘‘এই সিসিটিভি ফুটেজ পড়ুয়াদের উপর পুলিশি নৃশংসতার প্রমাণ। এতে প্রমাণিত হয়, কীভাবে রাষ্ট্রের পোষা সন্ত্রাসবাদীরা লাইব্রেরিতে ঢুকে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া পড়ুয়াদের উপর নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছে।’’ ভিডিয়োটি সামনে আসার পর নতুন করে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অপরাধ দমন শাখা জামিয়া কাণ্ডের তদন্ত করছে। ভিডিয়োটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

এই ভিডিয়োই সামনে এসেছে।

আরও পড়ুন: কেজরীর শপথে আজ শিক্ষক, চিকিৎসক, পড়ুয়ারা অতিথি​

ভিডিয়োটি সামনে আসার পর দিল্লি পুলিশের নিন্দায় সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। টুইটারে প্রিয়ঙ্কা লেখেন, ‘‘দেখুন দিল্লি পুলিশ কীভাবে পড়ুয়াদের মারধর করছে। একজন হাতে বই তুলে দেখাচ্ছে, তার পরেও তার উপর এলোপাথাড়ি লাঠি চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। অর্থাৎ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দিল্লি পুলিশের আধিকারিকরা মিথ্যা বলেছিলেন যে, লাইব্রেরিতে ঢুকে কাউকে মারধর করেননি ওঁরা। এই ভিডিয়ো সামনে আসার পরও জামিয়ার ঘটনায় কারোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করা হলেই, এই সরকারের অভিসন্ধি সকলের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’

প্রিয়ঙ্কার টুইট।

আরও পড়ুন: করোনায় মৃত্যু ফ্রান্সে, এই প্রথম ইউরোপে, সংক্রমণ রুখতে নোটবন্দি চিনে​

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র বিরুদ্ধে আন্দোলন চলাকালীন গত ১৫ ডিসেম্বর তুমুল বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে দক্ষিণ দিল্লির জামিয়া এবং ওখলা এলাকা। শতাধিক মোটর বাইক, অন্তত তিনটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। পুলিশ গেলে তাদের সঙ্গেও ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সেই বিক্ষোভের আঁচ কমতেই জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পডু়য়াদের বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ করেন, শুধু লাঠিপেটা করাই নয়, গুলিও চালিয়েছিল পুলিশ। লাইব্রেরিতে ঢুকে মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে এসেছিল দিল্লি পুলিশ। গুলি চালানোর কথাও শুরুতে মানতে চায়নি তারা। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় এক পুলিশ অফিসারকে গুলি চালাতে দেখা গেলে, শেষমেশ অভিযোগ মেনে নেয় দিল্লি পুলিশ। বলা হয়, যে ভাবে ঘিরে ধরে পাথর ছোড়া হচ্ছিল তাঁদের দিকে, তাতে গুলি না-ছুড়ে উপায় ছিল না। তবে বিক্ষোভকারীদের ভয় দেখাতে শূন্যে গুলি ছোড়া হয়েছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy