Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Ram Vilas Paswan

রামবিলাসের জীবনাবসান

পড়াশোনা শেষের পরে সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়ে পুলিশের ডিএসপি হতে চলা রামবিলাস প্রথম বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন বিশ্বনাথপ্রতাপ সিংহের সরকারে।

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২০ ০৫:০৬
Share: Save:

রাজনৈতিক পট পরিবর্তন তিনি নাকি আঁচ করতে পারতেন। সেই মতো যে দল বা জোট ক্ষমতায় আসতে চলেছে, তার সঙ্গে আগেভাগেই সমঝোতা করে ফেলতেন। না-হলে ভোটের পরেও ক্ষমতাসীন জোটের হাত ধরতে তাঁর সমস্যা হত না। কারণ, সকলের সঙ্গেই তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক মধুর ছিল। দেশের রাজনীতিতে তাই রামবিলাস পাসোয়ানের নাম ছিল ‘হাওয়া মোরগ’।

বিহার রাজনীতির অন্যতম প্রধান মুখ রামবিলাস আজ প্রয়াত হলেন। কেন্দ্রীয় খাদ্য, গণবণ্টন ও উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী, লোক জনশক্তি পার্টির প্রতিষ্ঠাতা বেশ কিছু দিন ধরেই দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত সপ্তাহে ৭৪ বছর বয়সি রামবিলাসের হৃদ্যন্ত্রের অস্ত্রোপচার হয়। আজ রাতে তাঁর ছেলে চিরাগ বাবার মৃত্যুর খবর জানান।

সামনেই বিহার নির্বাচন। ফের নীতীশ কুমারের জোটের সঙ্গে লালু প্রসাদের আরজেডি-র জোটের লড়াই। বিহারের রাজনীতিতে লালু-নীতীশের প্রায় একই সঙ্গে উঠে এসেছিলেন এই দলিত নেতা। জয়প্রকাশ নারায়ণের অনুগামী রামবিলাসকে জরুরি অবস্থার সময়ে ইন্দিরা গাঁধী সরকার জেলে পুরেছিল।

আরও পড়ুন: টিকা রাখতে খোঁজ কোল্ড স্টোরেজের​

দু’বছর জেলে থাকার পরে মুক্তি পেয়েই ১৯৭৭-এ প্রথম বার লোকসভায় জিতে আসেন তিনি। প্রথম বার বিহারের বিধায়ক হয়েছিলেন সংযুক্ত সোশ্যালিস্ট পার্টির সদস্য হিসেবে। তার পরে লোক দল, জনতা পার্টি হয়ে ২০০০ সালে নিজের লোক জনশক্তি পার্টি তৈরি করেন।

আরও পড়ুন: মোদীকে নিশালা রাহুলের​

পড়াশোনা শেষের পরে সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়ে পুলিশের ডিএসপি হতে চলা রামবিলাস প্রথম বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন বিশ্বনাথপ্রতাপ সিংহের সরকারে। তার পরে এইচ ডি দেবগৌড়া, ইন্দ্রকুমার গুজরাল, অটলবিহারী বাজপেয়ী, মনমোহন সিংহ, নরেন্দ্র মোদী— মোট ছ’জন প্রধানমন্ত্রীর সরকারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন। আট বার লোকসভায় জিতে এসেছেন। রামবিলাসের মৃত্যুর পরে মোদী বলেছেন, ‘‘এক জন বন্ধু ও গুরুত্বপূর্ণ সহকর্মীকে হারালাম।’’ ইউপিএ সরকারের মন্ত্রী এবং দিল্লির জনপথে সনিয়া গাঁধীর ঠিক পাশের বাংলোর দীর্ঘদিনের বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে গাঁধী পরিবারের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা বলেন, ‘‘মায়ের প্রতিবেশী হিসেবে ওঁর পরিবারের সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল।’’ ত্রিপুরার প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী এবং বিধায়ক বাদল চৌধুরী বলেছেন কুমারঘাট থেকে আগরতলা পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণে রামবিলাসের ভূমিকার কথা। তাঁর প্রয়াণে আগামিকাল জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

আরও পড়ুন:দলিত-মুসলিম ভোট ভাগ করতে নয়া জোট​

শেষবেলায় পুত্র চিরাগের হাতে দলের দায়িত্ব তুলে দেন রামবিলাস। কেন্দ্রে এনডিএ জোটে থাকলেও, বিহারে নীতীশ কুমারের সরকারের বিরুদ্ধে হাওয়া তৈরি হয়েছে আঁচ করে রামবিলাসের দল বিহারের এনডিএ জোট ছেড়েছে। বিহারের ভোটের ফলাফলই বলবে, রামবিলাসের শেষ অনুমানও ঠিক ছিল কি না!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE