মুজফ্ফরপুরের কেজরীবাল হাসপাতালে এনসেফ্যালাইটিস আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা চলছে। ছবি: এএফপি
এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে সাঁড়াশি চাপে বিহার সরকার। মারণ রোগ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সাত দিনের মধ্যে বিহার সরকারকেএ বিষয়ে হলফনামা দাখিল করার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। অন্য দিকে কেন্দ্রীয় ও বিহার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গাফিলতির মামলা গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মুজফ্ফরপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালত। একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘এটা চলতে দেওয়া যায় না। এর উত্তর চাই’। যদিও নীতীশ কুমার সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং এখন এনসেফ্যালাইটিস নিয়ন্ত্রণে।
গত প্রায় এক মাস ধরে মূলত মুজফ্ফরপুর-সহ বিহারের বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ আকার নিয়েছে এনসেফ্যালাইটিস। শতাধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। যদিও বেসরকারি মতে সংখ্যাটা দেড় শতাধিক। এই প্রেক্ষিতেই একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন জনৈক মনোহর প্রতাপ এবং এস আজমণি। তাঁদের অভিযোগ, বিহার সরকার যে সব পদক্ষেপ করেছে, তা পর্যাপ্ত নয় এবং রোগ ছড়িয়ে পড়া আটকাতেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দুই মামলাকারীর দাবি ছিল, শীর্ষ আদালতের উচিত, এই রোগ যাতে মহামারির আকার না নেয়, তা দেখতে বিহার সরকারকে উপযুক্ত নির্দেশিকা দিক সুপ্রিম কোর্ট।
সোমবার মামলার শুনানি হয় বিচারপিত সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি বি আর গবাই-এর বেঞ্চে। শুনানিতে বিহার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এনসেফ্যালাইটিস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তার জন্য এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। নীতীশ কুমার সরকারের আইনজীবীরা হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য ১০ দিনের সময় চান।
কিন্তু দুই বিচারপতি জানিয়ে দেন, এই অবস্থা চলতে পারে না। এনসেফ্যালাইটিস নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের তরফে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আক্রান্ত শিশুদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা হচ্ছে কি না, তারা প্রয়োজন মতো ওষুধপত্র পাচ্ছে কি না, হাসপাতালগুলিতে উপযুক্ত পরিকাঠামো রয়েছ কি না— সে সব বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। ১০ দিন পর ফের মামলার শুনানি।
আরও পডু়ন: অখিলেশ ‘মুসলিম বিরোধী’! নয়া তোপ দেগে একলা চলার পথেই মায়াবতী
আরও পডু়ন: মেয়াদ শেষের আগেই ইস্তফা দিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর
অন্য দিকে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল বিহারের মুজফ্ফরপুরের আদালতেও। সেই মামলায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন এবং বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পান্ডের বিরুদ্ধে গাফিলতির মামলা দায়ের হয়। এনসেফ্যালাইটিস রুখতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী পর্যাপ্ত পদক্ষেপ করেননি বলে অভিযোগ তোলা হয়েছিল ওই মামলায়। সেই মামলাও সোমবার গ্রহণ করেছেন মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতের বিচারক সূর্যকান্ত তিওয়ারি। দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।
এর আগে রাজ্যসভাতেও বিষয়টি ওঠে। সিপিআই-এর রাজ্যসভার সাংসদ বিনয় বিশ্বম বিষয়টি উত্থাপন করে দাবি করেন, এনসেফ্যালাইটিসে অন্তত ১৩০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বিহারে। কিন্তু চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই। অপুষ্টি এবং অপরিশোধিত পানীয় জলের কারণেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করে বিনয়ের দাবি ছিল, বিহারে দ্রুত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে এবং মৃত শিশুদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সংসদের সেই ঘটনার পর এ বার সুপ্রিম কোর্টেও এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে চাপে পড়ল নীতীশ কুমার সরকার।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy