প্রতীকী ছবি।
এ দেশ গ্রীষ্মপ্রধান। সূর্যের আলোর কোনও অভাব নেই। যা কিনা ভিটামিন-ডি-র অন্যতম উৎস। তবু এই ভিটামিন-ডি-র অভাবে ভোগেন প্রায় সত্তর শতাংশ ভারতীয়। বিষয়টি নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। তাঁরা বলছেন, এটি সঠিক মাত্রায় শরীরে উপস্থিত থাকলে, অনেকটাই হয়তো কমানো যেত করোনা-সংক্রমণ।
সম্প্রতি ‘এফইবিএস’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় ইজরায়েলের গবেষক ইউজিন মারজন জানিয়েছেন, তাঁরা প্রায় ৭৮০৭ জন ব্যক্তির করোনা পরীক্ষা করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১০ শতাংশ, অর্থাৎ ৭৮২ জন করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ওই ৭৮২ জনের শরীরে ভিটামিন-ডি-র মাত্রাতিরিক্ত ঘাটতি রয়েছে। তুলনামূলক ভাবে, যাঁরা করোনা নেগেটিভ, তাঁদের শরীরে ভিটামিন ডি-র পরিমাণ অনেকটাই বেশি। টেক্সাসের ডালাসে কমপ্লিট মেড কেয়ার ক্লিনিকে হওয়া এ ধরনের একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, শরীরে ভিটামিন ডি-র পরিমাণ কম থাকা এবং করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ইউরোপের যে দেশের নাগরিকদের শরীরে ভিটামিন ডি-এর পরিমাণ ভীষণ কম, সে সব দেশে করোনায় মৃত্যুর হার বেশি। গত ছ’মাসে বিদেশে এ ধাঁচের অন্তত ১৫টি গবেষণা হলেও, ভারতে এমন কোনও গবেষণাই হয়নি বলে দাবি করলেন জনস্বাস্থ্য পুষ্টিবিদ শুভশ্রী রায়। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘দেশের ৬৬ শতাংশের বেশি মানুষ ভিটামিন ডি-এর অভাবে ভুগছেন। কিন্তু লক্ষাধিক ভারতীয় করোনা সংক্রমণে মারা গেলেও আমাদের কাছে কোনও তথ্য নেই, এঁদের মধ্যে কত জনের শরীরে ভিটামিন ডি-র অভাব ছিল। তা জানা গেলে, করোনার মোকাবিলা করা অনেক সহজ হত।’’
পুষ্টিতত্ত্ববিদ্ রেশমি রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ভিটামিন ডি শরীরে পর্যাপ্ত মাত্রায় থাকলে, সাধারণ সর্দিকাশি কম হয়। যাঁদের শরীরে ভিটামিন ডি ভাল মাত্রায় রয়েছে, তাঁরা কম আক্রান্ত হচ্ছেন। অথবা সংক্রমণ তত গুরুতর আকার নিচ্ছে না। তাই বিষয়টি নিয়ে সত্যি ভাবা উচিত।’’ ভিটামিন-ডি বাড়ানোর কিছু উপায়ও বাতলেছেন তিনি। যেমন, সূর্যের আলোতে হাঁটা, সুষম খাবার খাওয়া। তিনি বলেন, ‘‘বড় মাছ, ডিমের হলুদ অংশ, মাশরুম, কড লিভার অয়েল-এর বড়ি খেলে ভিটামিন ডি-র মাত্রা শরীরে ঠিক থাকে।’’
দেশে আক্রান্ত
সূত্র: ওয়ার্ল্ডোমিটার্স
৬০,৮৭,৪৫৪
সোমবারের করোনা বুলেটিন।
সূত্র: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক
৬০,৭৪,৭০২
মৃত ৯৫,৫৪২
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত
৮২,১৭০
অ্যাক্টিভ রোগী
৯,৬২,৬৪০
২৪ ঘণ্টায় মৃত
১০৩৯
২৪ ঘণ্টায় সুস্থ
৭৪,৮৯৩
মোট সুস্থ
৫০,১৬,৫২০
শুভশ্রীর বক্তব্য, যে মুহূর্তে জানা গিয়েছে, ভিটামিন-ডি অভাবের সঙ্গে করোনা-সংক্রমণের যোগ রয়েছে, তার পর থেকেই বহু দেশ সংক্রমণ রোখা ও চিকিৎসা প্রোটোকলে পরিবর্তন এনেছে। অভিযোগ, এ দেশে সে ধরনের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক অবশ্য জানিয়েছে, গত দু’মাস ধরে দেশের সমস্ত কেন্দ্রীয় হাসপাতালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, করোনা-সংক্রমণে মৃত ব্যক্তি কোনও জটিল অসুখ বা অন্য কোনও কারণে ভুগছিলেন কি না, তা লিপিবদ্ধ করা হোক।
পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, শরীরের অন্য ভিটামিনগুলোর মতোই গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ডি। কিন্তু এর বাড়তি গুরুত্বের কারণ হল, শরীরের যে কোনও সংক্রমণ ঠেকানো ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এর বড় ভূমিকা রয়েছে। শুভশ্রীর কথায়, ‘‘কোভিড-১৯ থেকে রোগী সুস্থ হয়ে উঠলেও, তার প্রভাব থেকে যাচ্ছে ফুসফুসে। কারও ক্ষেত্রে ফুসফুসে ক্ষত তৈরি হচ্ছে। কারও ফুসফুসে জল জমছে।’’ এ ধরনের ফুসফুসের সংক্রমণ রোখার প্রশ্নে ভিটামিন ডি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শ্বাসনালীর সংক্রমণ রোখার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এটি। এ ছাড়া ভিটামিন ডি শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এমসের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক নীরজ নিশ্চলের পরামর্শ— ‘‘ভিটামিন-ডি গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খান। তবে যে খাদ্যগুলি ভিটামিন ডি-র উৎস, যেমন, ডিম, দুধ, মাশরুম, অ্যালমন্ড, সামুদ্রিক মাছ, কড লিভার অয়েল, সে সব খাওয়া যেতেই পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy