Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Firoze Khan

আগে পড়াতে দিন, দেখবেন আন্দোলনের দরকার হবে না, বলছেন বিএইচইউ-তে পড়াতে যাওয়া শিক্ষক

২০১৮ সালে জয়পুর ইনস্টিটিউট থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি পান ফিরোজ। নিজের বিভাগে একাই মুসলমান ছাত্র ছিলেন ফিরোজ। গত ৬ নভেম্বর তিনি বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির নিয়োগপত্র পান ই-মেলে। দেশের অন্যতম সেরা সংস্থায় পড়ানোর সুযোগ।

সংস্কৃত শিক্ষক ফিরোজ খান।

সংস্কৃত শিক্ষক ফিরোজ খান।

নিজস্ব প্রতিবেদন
লখনউ শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৯ ২১:৫৫
Share: Save:

বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যাঁর নিয়োগ আটকে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্রেরা, তাঁদের কাছে কী ভাষায় নিজের আবেদন তুলে ধরলেন সংস্কৃতের শিক্ষক ফিরোজ খান? বললেন, ‘‘আমায় একটা সুযোগ দিন না। তখন বুঝবেন এই আন্দোলনের কোনও প্রয়োজন নেই।’’

২০১৮ সালে জয়পুর ইনস্টিটিউট থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি পান ফিরোজ। নিজের বিভাগে একাই মুসলমান ছাত্র ছিলেন ফিরোজ। গত ৬ নভেম্বর তিনি বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির নিয়োগপত্র পান ই-মেলে। দেশের অন্যতম সেরা সংস্থায় পড়ানোর সুযোগ। চওড়া হাসি ফুটেছিল ফিরোজের মুখে, সেই হাসি অবশ্য ম্লান হয়ে যায় পরের দিনই। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। বিক্ষোভকারীরা বলতে থাকেন, মাদ্রাসায় যেমন এক জন হিন্দু শিক্ষক পড়াতে পারেন না, তেমনই এক জন মুসলিমও পড়াতে পারবেন না গুরুকুলে।

তবে এই তীব্র বিরোধিতা অবশ্য টলাতে পারছে না ফিরোজের বিশ্বাস আর আস্থাকে। ডিজিটাল সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য কুইন্ট’-কে ফিরোজ বলছেন, ‘‘হতেই পারে, আমি এই ছাত্রদের ভাবনাচিন্তাই বদলে দিলাম। আমি জানি না কী ভাবে, কিন্তু দেখা যাক না! ওরা আমায় জানুক, চিনুক, তখন হয়তো ওদের মনটাই বদলে যাবে।’’

২৯ বছর বয়সি ফিরোজের বাড়ি রাজস্থানের বাগরুতে। দাদু সংস্কৃত কলেজে ভর্তি করে দিয়েছিলেন ক্লাস টু-তে পড়ার সময়ে। তাঁর বাবাও এক জন সংস্কৃতজ্ঞ, নিজের গ্রামের একটি গোশালায় তিনি ভজন গাইতেন নিয়মিত। ফিরোজের এই বিড়ম্বনায় যারপরনাই চিন্তিত গোটা পরিবার। সকলেই তাঁকে বলছেন, সব ছেড়ে গ্রামে ফিরে যেতে। তবে ফিরোজ শেষ দেখতে চান, ফিরতে চান না গ্রামে। কারণ তিনি ছাত্রজীবনের শুরুতেই স্বপ্ন দেখেছিলেন, এই প্রতিষ্ঠানে এক দিন পড়াবেন।

আরও পড়ুন:আপেলের কেজি যখন ৬০ টাকা, পেঁয়াজ তখন ৮০, ঢেঁড়শ-টোম্যাটো-বেগুন বিকোচ্ছে ৭০-এ!
আরও পড়ুন:জেএনইউ-তে বিবেকানন্দের মূর্তির অবমাননা, প্রতিবাদে কলকাতায় মশাল মিছিল বিজেপি নেতাদের

এ বছরেরই অগস্টে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত তাঁকে সংস্কৃত যুব প্রতিভা পুরস্কার দিয়েছেন। দিন কয়েক আগে দূরদর্শনে সংস্কৃত গানও গেয়েছেন তিনি। নিজের দক্ষতার প্রতি অগাধ আস্থাই তাঁকে প্রেরণা দিচ্ছে আপাতত।

অন্য দিকে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের তরফে দাবি করা হচ্ছে, ফিরোজের নিয়োগ প্রক্রিয়াটিই স্বচ্ছ নয়। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপি-র ছাত্রনেতা অভয় সিংহ আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘ওঁর ধর্ম নিয়ে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু ওঁকে যাঁরা নিয়োগ করেছেন, তাঁরা ওঁর পুরনো শিক্ষক। আমরা জবাব চাই, কেন তালিকায় থাকা অন্যদের বাদ দিয়ে ওঁকেই বেছে নেওয়া হল।’’ অভয়ের আরও দাবি, এই সংস্কৃত বিভাগটিতে এক জন হিন্দু শিক্ষক পড়াবেন এমনটাই চালু রীতি। তাই তাঁরা এই প্রতিবাদ করেছেন। যদিও, কর্তৃপক্ষ স্বচ্ছতার প্রমাণ দিতে পারলে ফিরোজ খানকে বিরোধিতার মুখে পড়তে হবে না বলেই দাবি ওই নেতার।

অন্য বিষয়গুলি:

BHU ABVP Firoze Khan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy