বিজেপির সীমাবদ্ধতা ও খামতিগুলির কথা মাথায় রেখে, লোকসভা ভোটের মুখে এ বার সঙ্ঘের ছাতাটিকে আরও বড় করে মেলে ধরতে চাইছেন মোহন ভাগবত। গত কালই স্বাধীনতা সংগ্রামে কংগ্রেসের ভূমিকার কথা মেনে নিয়েছেন। এ বার তিনি জানালেন, আরএসএসের সদস্য হলেই বিজেপি করতে হবে এমন কোনও গণ্ডি টানা নেই!
আরএসএস ও বিজেপি একই মুদ্রার দু’পিঠ— প্রচলিত এই ধারণাটি থেকেই কার্যত বার করে আনতে চাইছেন সঙ্ঘ-প্রধান মোহন ভাগবত! যাতে আখেরে লাভটি হয় বিজেপিরই। দিল্লিতে সঙ্ঘ পরিবারের ডাকে তিন দিনের আলোচনসভার আজ ছিল দ্বিতীয় দিন। আজ তিনি দাবি করেন, সঙ্ঘের সদস্যরা কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন, সেটা তাঁদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তা নিয়ে সঙ্ঘ কোনও দিন প্রভাব খাটায় না। যে দল জাতীয় স্বার্থে কাজ করছে, সঙ্ঘ শুধু সেই দলের পাশে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকে। হিন্দুত্ব ও দেশাত্মবোধ প্রশ্নে ভাগবতের ব্যাখ্যা, ‘‘অনেকে মনে করেন এ দেশের বিশেষ একটি জাতীয় দল (বিজেপি)-কে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সঙ্ঘ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকে। কারণ সেই দলে সঙ্ঘের অনেক পদাধিকারী রয়েছেন। কিন্তু বাস্তব তা নয়।’’ এর পরেই ভাগবতের মন্তব্য, ‘‘সঙ্ঘ কখনওই কোনও সদস্যকে কোনও দলের হয়ে সরাসরি কাজ করতে বলে না। সঙ্ঘ রাজনীতি দেখে না। দেখে কেবল জাতীয় স্বার্থ। যারা জাতীয় স্বার্থ মেনে কাজ করছে সঙ্ঘ শুধু তাদের সমর্থনের কথা বলে।’’
বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। সংখ্যালঘু সমাজের পাশাপাশি দলিত, নিম্নবর্গ, পিছিয়ে থাকা সমাজের মানুষেরা ক্রমশ বিজেপি থেকে মুখ ফেরাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ভাগবত দলের গণ্ডি ছাপিয়ে হিন্দুত্বের বড় ছাতাটি মেলে ধরতে চাইছেন বিজেপির প্রতি বিমুখদের দিকেও। পিছিয়ে থাকা শ্রেণিকে বার্তা দিতে সকল শ্রেণির উন্নয়নে জোর দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন ভাগবত। অস্পৃশ্যতার জন্য উচ্চবর্ণকে দায়ী করে বলেন, ‘‘হিন্দুত্বের নামে যা চলছে তা আর যা-ই হোক হিন্দুত্ব নয়।’’
এরই পাশাপাশি দেশের মুসলিম সমাজকেও ভাগবত বার্তা দেন ভারতীয়ত্বের প্রশ্নে। হিন্দুত্বের মঞ্চ থেকে ভাগবত বলেন, ‘‘হিন্দু রাষ্ট্র মানেই তাতে মুসলিম থাকবে না, এমন রাষ্ট্র সঙ্ঘ চায় না। তফাত তো শুধু উপাসনার পদ্ধতিতে। সকলকেই হিন্দু হতে হবে, এমন নয়। তবে সকলকে ভারতীয় হতে হবে। আমাদের মধ্যে বৈচিত্র্য থাকবে। কিন্তু বিভেদ থাকবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy