প্রতীকী ছবি।
মুসলিম যুবক ফৈয়াজ় খাবার আনছেন দেখে জ়োম্যাটো-র অর্ডার বাতিল করে দিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের জবলপুরের বাসিন্দা অমিত শুক্ল। আজ শুক্লের থেকে মুচলেকা চেয়েছে জবলপুর পুলিশ। তিনি আর ধর্মীয় বিদ্বেষ আর ছড়াবেন না— এই মর্মে মুচলেকা দিতে হবে তাঁকে। পুলিশ সুপার অমিত সিংহ বলেছেন, ‘‘আমরা শুক্লের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছি। তাঁকে নজরে রাখা হচ্ছে।’’ এসপি জানান, সামাজিক ও ধর্মীয় সংহতি নষ্ট হবে, এমন কোনও কাজ যাতে শুক্ল না-করেন, তার জন্য তাঁর কাছে নোটিস পাঠিয়ে মুচলেকা চাওয়া হয়েছে।
‘অ-হিন্দু’ ডেলিভারি বয়ের থেকে খাবার নেবেন না বলে অর্ডার বাতিল করার পরে মোবাইলের সেই স্ক্রিনশট নিজের টুইটার ওয়ালে দিয়েছিলেন শুক্ল। জ়োম্যাটো তাঁকে জবাব দেয়, ‘‘খাবারের কোনও ধর্ম নেই। খাবারই ধর্ম’’। যা নিয়ে গত কাল দিনভর চলে বিতর্ক। যাঁকে নিয়ে এই বিতর্কের সূত্রপাত, সেই ফৈয়াজ় বলেছেন, ‘‘এই ঘটনায় আমি আহত। কিন্তু কী করব... আমরা গরিব মানুষ। আমাদের এই রকম ঘটনার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়।’’
গত কাল জ়োম্যাটো-র জবাবের তারিফ করেছিলেন অনেকেই। আজ কিন্তু দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছেন নেটিজ়েনরা। অনেকে বলতে থাকেন, খাবারের কোনও ধর্ম নেই বলে যদি জ়োম্যাটো সত্যিই বিশ্বাস করে, তবে কেন হালাল করা মাংস না-পাঠানোর জন্য এক উপভোক্তার কাছে ক্ষমা চেয়েছিল সংস্থাটি? আর কেনই বা যে সমস্ত রেস্তরাঁয় হালাল মাংস পাওয়া যায়, সেগুলিকে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে তাদের মোবাইল অ্যাপে? এই যুক্তি তুলে কেউ কেউ বলেন, ধর্ম নিয়ে দু’রকম অবস্থান নেওয়ার জন্য অ্যাপটি ‘আন-ইনস্টল’ করেছেন তাঁরা।
এমনিতে পরস্পরের প্রতিযোগী হলেও ‘অ-হিন্দু’ ডেলিভারি বয় নিয়ে বিতর্কে জ়োম্যাটো-র পাশে দাঁড়িয়েছে অনলাইনে খাবার সরবরাহকারী একটি জনপ্রিয় সংস্থা ‘উবর ইটস’। টুইটারে সংস্থাটি লিখেছে, ‘আমরা তোমাদের সঙ্গে রয়েছি।’ এই টুইটের পরে ‘বয়কট উবর ইটস’ হ্যাশট্যাগে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। এক জন লিখেছেন, ‘‘ফোন থেকে মুছে দিয়েছি দু’টি অ্যাপই। একটি নির্দিষ্ট ধর্মের জন্য তথাকথিত সহিষ্ণুতা দেখানোর এটাই ফল।’’
জ়োম্যাটো অবশ্য এর পরেও পিছিয়ে আসেনি। হালাল-বিতর্কে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে একটি খোলা চিঠি লিখেছে তারা। বলেছে, ‘‘হ্যাঁ, খাবারের ধর্ম নেই। মানুষ নিজে ঠিক করেন, তাঁরা কী খাবেন বা রান্না করবেন। সে তিনি ধার্মিক হোন বা না-হোন। আমরা সব ধর্মকে সম্মান করি। তাই সম্ভাব্য সব রকম তথ্য দিই এটাই নিশ্চিত করার জন্য, যাতে আপনি আপনার পছন্দের খাবারটি পান। যেমন, জৈন খাবার, ভিগান খাবার বা নবরাত্রি থালির জন্যও ‘ট্যাগ’ (রেস্তরাঁ চিহ্নিত করা) রয়েছে আমাদের।’’
জ়োম্যাটোর বক্তব্য, হালাল মাংসের রেস্তরাঁগুলিকে এ ভাবে চিহ্নিত করা হয় রেস্তরাঁগুলি তা চায় বলেই। রেস্তরাঁগুলিকে হালাল মাংসের শংসাপত্র দেয় একটি সর্বভারতীয় সংস্থা। জ়োম্যাটো শুধু সেই শংসাপত্রটুকু দেখতে চায়। একটি রেস্তরাঁ কত রকমের খাবার দিতে পারে, সেটুকু তুলে ধরাটাই সরবরাহকারী হিসেবে জ়োম্যাটোর দায়িত্ব। ‘ঝটকা’ পদ্ধতিতে কাটা মাংসের শংসাপত্র দেওয়ার কোনও সর্বভারতীয় সংস্থা নেই। তবু উপভোক্তারা চাইলে সেই ‘ট্যাগের’ও ব্যবস্থা করা হবে।
তবে জ়োম্যাটোর পাশে এখনও রয়েছেন অনেকে। কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের টুইট, ‘‘আমি এত দিন এই অ্যাপটি দিয়ে খাবার অর্ডার করিনি। এ বার অবশ্যই করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy