সুড়ঙ্গে আটকে সুজিত। ছবি: সেন্থিলকুমারের টুইটার থেকে
শুক্রবার থেকে ৯০ ফুট সুড়ঙ্গে আটকে দু’বছরের সুজিত উইলসন। রবিবার রাত থেকে সাড়া নেই। কিন্তু উদ্ধারকারী দলের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, আরও ১০-১২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে উদ্ধার করতে। কারণ ভূগর্ভে মাটির পাথুরে প্রকৃতির জন্য সমান্তরাল সুড়ঙ্গ খুঁড়তে দেরি হচ্ছে। তার পরে আড়াআড়ি সুড়ঙ্গ খুঁড়ে শিশুর কাছে পৌঁছবেন উদ্ধারকারীরা। অন্য দিকে শিশুটির জন্য চলছে দেশ জুড়ে প্রার্থনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও শিশুটিকে সুস্থ ভাবে উদ্ধারের প্রার্থনা করেছেন। কথা বলেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টা খেলতে খেলতে একটি সুড়ঙ্গে পড়ে যায় সুজিত। পরিবারের লোকজন রাতেই সেটা বুঝতে পেরে খবর পাঠান পুলিশ ও দমকলে। তার পর থেকেই নিরন্তর কাজ করে চলেছেন উদ্ধারকারীরা। উদ্ধারকারী দলে রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, দমকল, পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ঘটনাস্থলে রয়েছেন প্রশাসনের আধিকারিকরাও। তামিলনাড়ুর ত্রাণ কমিশনার রাধাকৃষ্ণন এদিন দুপুরে বলেন, ‘‘পাথুরে জমি হওয়ায় নতুন সুড়ঙ্গ খুঁড়তে দেরি হচ্ছে। উদ্ধারে আরও ১২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। ৪০ ফুট সুড়ঙ্গ খোঁড়া হয়েছে আরও অন্তত ৫০ ফুট সুড়ঙ্গ তৈরির পর আড়াআড়ি ভাবে সুড়ঙ্গপথ তৈরির কাজ শুরু হবে। ক্যামেরার সাহায্যে শিশুটির শারীরিক অবস্থা মনিটর করা হচ্ছে।’’
এর মধ্যেই তামিলনাড়ুর বিভিন্ন মন্দিরে শিশুটির উদ্ধারের কামনায় পুজো-অর্চনা চলছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলছে প্রার্থনা। শিশুটিকে যাতে সুস্থ ভাবে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া যায়, রবিবারই সেই প্রার্থনা করেছেন রাহুল গাঁধী থেকে রজনীকান্ত, কমল হাসান-সহ প্রচুর সাধারণ মানুষ। সোমবার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর টুইট। নরেন্দ্র মোদী লিখেছেন, ‘সাহসী সুজিত উইলসনের জন্য আমার প্রার্থনা রইল। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। সুজিতকে উদ্ধারের সব রকম চেষ্টা চলছে। সুজিত যাতে নিরাপদে থাকে, তার সব রকম চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন: এক ঘণ্টার অপারেশন বাগদাদি শেষ সুড়ঙ্গের প্রান্তে, কী ভাবে চলল মার্কিন সেনার অভিযান
অন্য দিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই উদ্ধারে দেরির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, খবর দেওয়ার ৯ ঘণ্টা পরে কাজ শুরু করেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। আবার নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সমান্তরাল সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সিদ্ধান্ত নিতে আরও অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। তাই উদ্ধারে এত দেরি হয়েছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী ও পনিরসিলভম, অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেছন, খবর পাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই এমন বিশেষজ্ঞ বাহিনীকে পাঠানো হয়, যাঁরা ঘণ্টায় পাঁচ মিটার সুড়ঙ্গ খুড়তে সক্ষম।
যদিও ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, আসলে এই ধরনের বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনও ‘অপারেশনাল প্রসিডিওর’ বা পদ্ধতি তৈরি হয়নি। কেন্দ্র নাকি রাজ্য— কাদের দায়িত্ব, তা-ও স্পষ্ট নয়।ফলে এ সব ক্ষেত্রে এই সমন্বয়ের কাজ সারতেই অনেক দেরি হয়ে যায়।
প্রথম দিকে অবশ্য হাতে দড়ির ফাঁস লাগিয়ে, কাপড়ের থলিতে নীচে ফেলে, সাকশন পদ্ধতি প্রয়োগ করে উপরে তুলে আনার চেষ্টা করেন উদ্ধারকারীরা। ওই গর্তের পাশে পুরো এলাকা খুঁড়েও গভীরে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ওই ভাবে খুঁড়ে ৯০ ফুট নীচে পৌঁছনো অসম্ভব বুঝেই শেষ পর্যন্ত ওই সুড়ঙ্গের পাশে সমান্তরাল একটি সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই কাজ চলছে। একই সঙ্গে শিশুটিকে সুস্থ রাখার জন্য খাবার, অক্সিজেনও পাঠানো হয়েছে ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে।
আরও পডু়ন: কী পরিস্থিতি কাশ্মীরের, খতিয়ে দেখতে যাচ্ছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দল
এর মধ্যেই সুড়ঙ্গের গভীরতা নিয়ে নানা কথা ঘুরছে এলাকার মানুষের মুখে। কেউ বলছেন সুড়ঙ্গটি ৬০০ ফুট গভীর, কারও মতে সেটি তারও বেশি। কেউ কেউ আবার ১০০০ ফুট গভীরতার কথাও বলছেন। তবে শিশুটি ৯০ ফুট গভীরে আটকে রয়েছে, তার থেকেও নীচে নেমে যাওয়া আটকাতে পেরেছেন উদ্ধারকারীরা। এক্ষেত্রে ‘এয়ার লক’ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy