প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনা— ফাইল চিত্র।
লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে ভারত এবং চিনা সেনার কোর কমান্ডার স্তরের অষ্টম দফার বৈঠকেও কোনও সামাধানসূত্রের সন্ধান মেলেনি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই একমাত্র পথ বলে মনে করছে দু’পক্ষ।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) চুসুল লাগোয়া মলডোতে শুক্রবার কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠক হয়। রবিবার এই বৈঠকের বিষয়ে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘দু’পক্ষই এলএসি প্রসঙ্গে বিস্তারিত ভাবে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। এ ধরনের গঠনমূলক আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে’।
শুক্রবারের বৈঠকে প্রথম বার ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ১৪ নম্বর কোরের নয়া কমান্ডার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি জি কে মেনন। এর আগে সাত বার এই বৈঠকে ১৪ নম্বর কোরের কমান্ডার পদে মেননের পূর্বসূরি লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিংহ হাজির থেকেছেন। সম্প্রতি হরেন্দ্রকে বদলি করা হয়। গত ১৪ অক্টোবর সপ্তম দফার বৈঠকে হরেন্দ্রর সহকারী হিসেবে বৈঠকে ছিলেন মেনন। তা ছাড়া, এ দিনের বৈঠকে কেন্দ্রের এক অসামরিক আধিকারিকও যোগ দিয়েছিলেন।
সেনা সূত্রের খবর, প্যাংগং হ্রদের উত্তর তীরে ফিঙ্গার এরিয়া ৫ থেকে ৮ পর্যন্ত ভারতীয় সেনা যাতে আগের মতো টহল দিতে পারে, বৈঠকে সেই দাবি তোলা হয়। পাশাপাশি, ভারতীয় ভূখণ্ডের অন্তর্গত দেপসাং উপত্যকায় লেহ্-দারবুক-শিয়ক-দৌলত বেগ ওল্ডি সড়কের কাছে এসে পড়া চিনা বাহিনীকে সরে যেতে বলা হয়েছে ভারতীয় সেনার তরফে। অন্য দিকে, চিনের তরফে সঙ্ঘাতের নয়া ক্ষেত্র অর্থাৎ হ্রদের দক্ষিণ তীরের উঁচু এলাকাগুলিতে অবস্থান নেওয়া ভারতীয় সেনাকে ফেরত পাঠানোর দাবি তোলা হয়।
এখনও পর্যন্ত সমস্যা সমাধানের ‘পথ’ না মিললেও সামগ্রিক ভাবে লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে বলেই সরকারের একটি সূত্রের দাবি। গত ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র হামলায় ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু এবং প্রত্যাঘাতে চিনা বাহিনীর কয়েকজন নিহত হওয়ার পরে এলএসি-তে কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। সেনা এবং কূটনৈতিক স্তরে দফায় দফায় আলোচনার পরে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়।
আরও পড়ুন: আমিই প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট কিন্তু শেষ নই, বার্তা কমলার
জুলাইয়ের গোড়ায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং চিনা বিদেশমন্ত্রী তথা স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ই-র বৈঠকের পরে এলএসি-তে মুখোমুখি অবস্থান থেকে 'সেনা পিছনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরবর্তী পর্যায়ে কোর কমান্ডার স্তরের ধারাবাহিক বৈঠকে পূর্ব লাদাখের কিছু অংশে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।
আরও পড়ুন: লাদাখে শুরু সেনা স্তরের বৈঠক, বৃহত্তর সঙ্ঘাতের ইঙ্গিত জেনারেল রাওয়তের
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব সম্প্রতি বলেছেন, ‘‘পূর্ব লাদাখে ছ’মাসের অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে শান্তি ফেরানোর জন্য আমরা আলোচনার মাধ্যমে পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য রফাসূত্র খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাব।’’ আপাতত সেই পথেই হাঁটতে চাইছে নয়াদিল্লি। কারণ, শীতের মরসুমে পরিস্থিতির অগ্রগতির তেমন সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy