সাম্প্রতিক কালে কৃষক আন্দোলন-প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জেরেও অস্বস্তিতে পড়েছে মোদী সরকার। ছবি: রয়টার্স।
আলু-পেঁয়াজের দাম যত কমবে, ততই মূল্য চোকাতে হবে নরেন্দ্র মোদীকে। আগামী লোকসভা নির্বাচনে সেই ফল ভোগ করতে হবে ক্ষমতাসীন দলকে। এমনটাই রুক্ষ মনোভাব দেশের কৃষকদের।
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যশস্যের চড়া দামের প্রভাবে অতীতে বহু সরকারের পতন হয়েছে। এ বার ওই শস্যের যথাযথ দাম না পেলে ফের একই ঘটনা ঘটতে পারে। জানাচ্ছেন দেশের অধিকাংশ কৃষক। খাদ্যপণ্যের সঠিক দাম না মেলায় কৃষকেরা যে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উপর রীতিমতো ক্ষুব্ধ, তা-ও প্রকাশ্যে এসেছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের দাবি, এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমা হচ্ছে। গত সপ্তাহে বহু কৃষিজীবীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে রয়টার্স। সেই সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতেই এই মত তাদের।
খাদ্যপণ্য বিশেষত আলু-পেঁয়াজের নায্য মূল্য না মেলায় দেশের বড় রাজ্যগুলির অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বহু কৃষকের রোজকার জীবনে। মহারাষ্ট্রের নাসিকের এক পেঁয়াজ উৎপাদনকারী মাধুকর নাগারের কথাতে ফুটে উঠেছে সেই ক্ষোভ। তিনি বলেন, “সামনের মাসগুলোতে যা-ই করুক না কেন, আমি বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোট দেব। ২০১৪-র মতো ফের ভুল করব না।”
(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
পেঁয়াজের ঝাঁজ অবশ্য এর আগেও টের পেয়েছে বিজেপি। মূলত পেঁয়াজের চড়া দামের জেরেই ১৯৯৮-এর বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের কাছে দিল্লির দখল হারায় তারা। সাম্প্রতিক কালে কৃষক আন্দোলন-প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জেরেও অস্বস্তিতে পড়েছে মোদী সরকার। ৮ টাকা কেজির পেঁয়াজের দাম কমতে কমতে ১ টাকারও নীচে নেমেছে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ কৃষক সমাজ। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে, রাস্তায় পেঁয়াজ ফেলে নষ্ট করে, মিছিল-বিক্ষোভ করে প্রতিবাদ করেছে সরকারে বিরুদ্ধে। কৃষিঋণ মকুবের জন্যও লং মার্চ করেছে।
আরও পড়ুন: সন্তানের দেখাশোনায় একাকী পুরুষদের ছুটি দু’বছর, নির্দেশ কেন্দ্রের
মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজের দাম পড়ে গিয়েছে ৮৩ শতাংশ। সেই সঙ্গে আগের মরসুমের উদ্বৃত্ত জোগান বেশি থাকার পাশাপাশি মধ্য ও দক্ষিণ এশীয় বাজারে পেঁয়াজের রফতানি কম হওয়ায় আরও বিপদে পড়েছেন কৃষকেরা। উত্তরপ্রদেশে আলুচাষিরাও প্রায় একই সমস্যার মুখে পড়েছেন। তবে খাদ্যশষ্যের দাম কমলেও সারের দাম কমেনি। এরই মধ্যে টাকার মূল্যের অবনমন হওয়ায় তাতেও ক্ষতির মুখ দেখেছেন কৃষকেরা।
আরও পড়ুন: শিশুদের যৌন নিগ্রহে এ বার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, ঘোষণা আইনমন্ত্রীর
আলু-পেঁয়াজের নায্য মূল্য না মেলায় দেশের বড় রাজ্যগুলির অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছবি: পিটিআই।
৫৪৫ আসনের লোকসভায় ওই দুই রাজ্য থেকে ১২৮ জন সাংসদ নির্বাচিত হন। দুই রাজ্যেই গ্রামীণ ভোটারদের সংখ্যাই বেশি। ফলে ওই রাজ্যগুলি থেকে আসন হারালে তার প্রভাব পড়তে পারে আগামীলোকসভা নির্বাচনে। সে ক্ষেত্রে অন্য রাজ্যগুলিতে ফল ভাল না হলে জোট সরকার গঠনের ঝুঁকিও রয়েছে বিজেপি-র সামনে।
সম্প্রতি রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তীসগঢ়ে সরকার গড়ার পর কৃষিঋণ মকুব করেছে কংগ্রেস। সারা দেশেই তা কার্যকর করারচ্যালেঞ্জ তারা ছুড়ে দিয়েছে মোদী সরকারের দিকে। এ নিয়ে বিজেপি সরকারের তরফে কোনও প্রতিশ্রুতি না মিললেও নীতি আয়োগের থিঙ্ক ট্যাঙ্কের প্রধান রাজীব কুমারের দাবি, কৃষিঋণ মকুব করলেও সমস্যার সমাধান হবে না।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদেরদেশবিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy