Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
one nation and one vote

‘এক দেশ এক ভোট’ নিয়ে ফের সরব মোদী

মোদী ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৭ সালে নীতি আয়োগ তাদের একটি রিপোর্টে ২০২৪ সাল থেকেই লোকসভা-বিধানসভা এক সঙ্গে করার পক্ষে সওয়াল করেছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২০ ০৪:০১
Share: Save:

ফের ‘এক দেশ এক ভোটে’র পক্ষে সওয়াল শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর মতে, দেশের স্বার্থেই বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচন এক সঙ্গে হওয়া উচিত। যে দাবি উড়িয়ে বিরোধী নেতৃত্ব এবং সংবিধান-বিশেষজ্ঞদের পাল্টা বক্তব্য, ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যেই এমন ভাবনাকে তুলে ধরতে চাইছেন মোদী তথা সঙ্ঘ পরিবারের নেতারা। বাস্তবে এমনটা হলে, ভারতের বহুমাত্রিক গণতান্ত্রিক কাঠামোই ধ্বংস হবে।

অতীতে ‘এক দেশ এক ভোটে’র পক্ষে সওয়াল করতে দেখা যেত লালকৃষ্ণ আডবাণীকে। ২০১৪ সালে মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে আডবাণী দলে কার্যত ব্রাত্য হয়ে গেলেও তাঁর সেই পরিকল্পনা নিয়ে ‘এক দেশ এক ভোটে’র পক্ষে সওয়াল শুরু করেছেন মোদী। গোড়া থেকেই মোদীর ওই প্রস্তাবের বিরোধিতায় সরব বিরোধীরা। মাঝে বিষয়টি একেবারে ধামাচাপা পড়ে গেলেও আজ সংবিধান দিবসে ৮০তম জাতীয় প্রিসাইডিং অফিসারদের সম্মেলনে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফের ‘এক দেশ এক ভোট’ বিতর্ক উস্কে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বিষয়টি আর আলোচনার পর্যায়ে নেই। ভারতের জন্য এই ব্যবস্থা প্রয়োজন।’’ প্রধানমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, কয়েক মাস অন্তর ভারতের কোথাও না কোথাও নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনের ফলে উন্নয়নমূলক কাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই বিষয়টি নিয়ে গভীর ভাবে অধ্যয়ন ও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। একই সঙ্গে আর্থিক, লোকশক্তির অপচয় রুখতে তিনি আজ লোকসভা, বিধানসভা বা অন্য কোনও নির্বাচনের কাজে একটি মাত্র ভোটার তালিকা ব্যবহার করার সুপারিশও করেছেন।

মোদী ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৭ সালে নীতি আয়োগ তাদের একটি রিপোর্টে ২০২৪ সাল থেকেই লোকসভা-বিধানসভা এক সঙ্গে করার পক্ষে সওয়াল করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, উন্নয়ন ও প্রশাসনের স্বার্থে ওই দুই ভোট এক সঙ্গে হওয়া উচিত। অতীতে লোকসভা ও বিধানসভার ভোট যে এক সঙ্গে হয়নি, তা নয়। ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে দু’টি নির্বাচন এক সঙ্গে হয়েছিল। কিন্তু ১৯৫৯ সালে কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার কেরলের বাম সরকারের বিরুদ্ধে ৩৫৬ ধারা জারি করে। ফলে ১৯৬০ সালে ফের কেরলে বিধানসভা নির্বাচন হয়। তখন থেকেই লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন এক সঙ্গে করার চক্রটি ভেঙে যায়। বিরোধী দলগুলির প্রশ্ন, আগামী দিনেও যে তা হবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়!

আরও পড়ুন: অচেনা ছবি শিল্পাঞ্চলে

জট খুলতে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেই এ নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন মোদী। এ নিয়ে আলোচনা করতে আমন্ত্রণ জানানো হয় সব দলের প্রধানদের। কিন্তু গত বছরের জুন মাসে হওয়া ওই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের রাহুল গাঁধী, তৃণমূলের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিএসপির মায়াবতী, এসপির অখিলেশ যাদব, ডিএমকের স্ট্যালিন, শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে, আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরীবাল-সহ অনেকেই। সামগ্রিক বিরোধিতার আঁচ পেয়ে এ নিয়ে আলোচনার জন্য প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের নেতৃত্বে কমিটি গড়েন মোদী। সে সময়ে তৃণমূল-সিপিএমের মতো দলগুলির অভিযোগ ছিল, কোনও রাজ্যে সরকার গঠনের এক বছরের মধ্যে সরকার পড়ে গেলে দ্বিতীয় বার ভোট করার সুযোগ থাকবে না। ক্ষমতা কুক্ষিগত হবে কেন্দ্রের হাতে। ঘুরপথে দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো নষ্ট করে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ করতে সক্রিয় হয়েছেন মোদী।

আরও পড়ুন: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় স্থিতাবস্থা বজায় রয়েছে, পূর্ব লাদাখ নিয়ে মন্তব্য চিনা সেনার

অন্য বিষয়গুলি:

one nation and one vote Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy