Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
National News

ঝাড়খণ্ডে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার ১১, বরখাস্ত দুই পুলিশ অফিসার

একটি মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে তবরেজ আনসারি নামে ২৪ বছরের ওই যুবককে গত সপ্তাহে একটি পোস্টে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে উন্মত্ত জনতা। পেটাতে পেটাতেই ওই যুবককে দিয়ে জোর করে ‘জয় শ্রী রাম' ও ‘জয় হনুমান' বলানো হয়। অত্যাচারে কাহিল হয়ে তবরেজ অচৈতন্য হয়ে পড়লে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

তবরেজ আনসারি। ছবি- সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে।

তবরেজ আনসারি। ছবি- সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে।

সংবাদ সংস্থা
রাঁচী শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ১৩:৩৯
Share: Save:

ঝাড়খণ্ডে রামনাম করিয়ে এক যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে দুই পুলিশ আধিকারিক চন্দ্রমোহন ওঁরাও ও বিপিন বিহারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযোগ, তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটির গুরুত্ব বোঝাতে পারেননি। অথচ, একই দিনে তাঁরা গণপিটুনির আরও একটি মামলা নথিভুক্ত করেছেন।

একটি মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে তবরেজ আনসারি নামে ২৪ বছরের ওই যুবককে গত সপ্তাহে একটি পোস্টে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে উন্মত্ত জনতা। পেটাতে পেটাতেই ওই যুবককে দিয়ে জোর করে ‘জয় শ্রী রাম' ও ‘জয় হনুমান' বলানো হয়। অত্যাচারে কাহিল হয়ে তবরেজ অচৈতন্য হয়ে পড়লে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ হেফাজতে চার দিন পরে মারা যায় তবরেজ। ওই ঘটনা নিয়ে দেশজোড়া ক্ষোভের প্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্তের পদ্ধতিতে গলদের কথা মেনে নিয়েছে। একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে ঝাড়খণ্ড রাজ্য পুলিশ। ‘সিট’কে বলা হয়েছে, বুধবারের মধ্যে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে।

সরাইকেলা-খারসাওয়ান জেলার পুলিশ সুপারিটেন্ডেন্ট কার্তিক এস জানিয়েছেন, ‘‘আমরা সমস্ত দিক থেকেই বিষয়টি দেখছি। ওঁর পরিবারের সদস্যরা কয়েক জন অচেনা দুর্বৃত্তের কথা বলেছেন। সেই অভিযোগের উপর ভিত্তি করে আমরা এরই মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করেছি। তাদের এক জনের নাম পাপ্পু মণ্ডল।''

তবরেজ ওই দিন জামশেদপুর থেকে সরাইকেলা-খারসাওয়ান জেলার কারসোভায় গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে। সেই সময় বাড়ি থেকে ৫ কিমি দূরে তাঁকে আক্রমণ করে জনতা। এমনটাই দাবি তাঁর এক আত্মীয়ের।

আরও পড়ুন- ‘জয় শ্রীরাম’ বলিয়ে, ১৮ ঘণ্টা পিটিয়ে খুন ঝাড়খণ্ডে​

আরও পড়ুন- ভয়ঙ্কর​

তবরেজ স্ত্রী শাহিস্তা পরভিন বলেছেন, ‘‘ওঁকে নির্দয়ের মতো মারা হয়েছে উনি মুসলিম বলে। আমার কেউ নেই। শ্বশুর, শাশুড়িও নেই। আমি কী ভাবে বাঁচব? ন্যায়বিচার চাই।''

পরিবারের তরফে তবরেজের স্ত্রীকে একটি চাকরি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেস তবরেজের স্ত্রীকে ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সরকারের কাছে।

পরিবারের অভিযোগ, তবরেজের সঠিক চিকিৎসার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেওও লাভ হয়নি। এমনকি, তবরেজের সঙ্গে কাউকে দেখাও করতে দেওয়া হয়নি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বহু আগেই তিনি মারা গিয়েছিলেন, এই অভিযোগও করা হয়েছে।

ওই ঘটনার জেরে হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বিজেপি এবং আরএসএসের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘‘ওই দলগুলি দেশজুড়ে একটা মনোভাব তৈরি করে দিয়েছে যে, মুসলিমরা জঙ্গি, দেশবিরোধী ও গোহত্যাকারী।'' জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা ‌মুফতিও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘এটাই বোধহয় এনডিএ ২.০-র নতুন ভারত!''

তবে এই ঘটনায় বিজেপিকে জড়ানোর চেষ্টার কড়া সমালোচনা করেছেন ঝাড়খণ্ডের এক মন্ত্রী সি পি সিংহ। বলেছেন, ‘‘এটাই এখন ট্রেন্ড। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে বিজেপি, আরএসএস, ভিএইচপি এবং বজরং দলকে যুক্ত করা। এটা ‘কাট অ্যান্ড পেস্ট'-এর যুগ।''

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy