Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

আজ প্রধানমন্ত্রীর ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে থাকবেন তৃণমূলনেত্রী মমতা

১৬-১৭ জুন করোনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গকে বলার সুযোগ না-দেওয়ায় আলোচনার টেবিলে বসেননি তিনি।

নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই ও ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই ও ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২০ ০৪:১৮
Share: Save:

দেশ ও দশের নজর এখন রক্তাক্ত লাদাখে। এই পরিস্থিতিতেও কেন্দ্র যেন করোনা মোকাবিলা এবং অর্থনীতি মেরামতে সামান্যতম ঢিল না-দেয়, সে কথা নরেন্দ্র মোদী সরকারকে বার বার মনে করাচ্ছেন বিরোধীরা। তাঁরা বলছেন, চিনের সঙ্গে সংঘাতের আবহেও এই জোড়া সমস্যাকে অগ্রাধিকারের তালিকায় উপরের দিকেই রাখুক কেন্দ্র।

সূত্রের খবর, আগামিকাল প্রধানমন্ত্রীর ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকেও চিন সমস্যা-সহ এই সমস্ত বিষয়ে প্রশ্ন ওঠার সম্ভাবনা। আজ রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, দলের তরফে ওই বৈঠকে থাকবেন খোদ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৬-১৭ জুন করোনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গকে বলার সুযোগ না-দেওয়ায় আলোচনার টেবিলে বসেননি তিনি। কিন্তু সর্বদল বৈঠকে তাঁর থাকারই সম্ভাবনা।

লকডাউন ব্যর্থ বলে আগেই অভিযোগ করেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। ঘরবন্দি দশা শেষ হতেই সংক্রমণ হুহু করে বাড়ছে। সে দিকে আঙুল তুলে বিরোধী দলগুলির প্রশ্ন, দীর্ঘ লকডাউনের সময়ে করোনা সামাল দেওয়ার মতো স্বাস্থ্য পরিকাঠামো কতটুকু বাড়ানো গেল? প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিদের অভিযোগ, অপরিকল্পিত লকডাউনের জেরে কোমর ভেঙে গিয়েছে আগেই ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির। কাজ খোয়াচ্ছেন বহু মানুষ। অথচ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দাওয়াই ২০ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্পে নেই।

আরও পড়ুন: দ্বিতীয় দিনের বৈঠকও নিষ্ফল, লাদাখে জোর বাড়াচ্ছে চিন

কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, কপিল সিব্বলদের অভিযোগ, দেশ করোনার সঙ্গে কঠিন যুদ্ধে লড়ছে। কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে অর্থনীতির। অথচ এর মধ্যেও ভোটপ্রচারে নেমে পড়েছে বিজেপি। একের পর এক ‘ভার্চুয়াল জনসভা’ করছেন অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহের মতো মন্ত্রীরা। বিভিন্ন সমীক্ষা তুলে ধরে প্রচার করা হচ্ছে ‘সফল ভাবে করোনা সামলে’ মোদীর জনপ্রিয়তা বেড়েছে কতখানি! কংগ্রেসের অভিযোগ, “ এ থেকেই স্পষ্ট সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় করোনা বা অর্থনীতি নেই।”

করোনার কাঁটা

• দিনে গড় পরীক্ষা এখনও ২ লক্ষ ছোঁয়নি। যা জনসংখ্যার অনুপাতে নগণ্য। দিনে নতুন সংক্রমণ ১২ হাজার ছাড়িয়েছে।

• মোট সংক্রমিতের সংখ্যা সাড়ে ৩ লক্ষ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা ১২ হাজারের বেশি।

• পর্যাপ্ত হাসপাতাল বেড, আইসিইউ, ভেন্টিলেটরের খোঁজে ইতিমধ্যেই নাজেহাল মহারাষ্ট্র, দিল্লি।

• জনসংখ্যার অনুপাতে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো অপ্রতুল। লকডাউন ওঠার পরে সংক্রমণ দ্রুত ছড়ালে, চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা।

মাথাব্যথা অর্থনীতি

• ঝিমিয়ে থাকা অর্থনীতি লকডাউনের ধাক্কায় কার্যত আইসিইউয়ে।

• চলতি অর্থবর্ষে জিডিপি সঙ্কোচনের পূর্বাভাস। বেকারত্বের হারও রেকর্ড।

• লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক কর্মহীন। কাজ হারাচ্ছেন আরও বহু মানুষ।

• চাহিদার চাকা গতিহীন। দেখা নেই নতুন লগ্নিরও।

• ২০ লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ প্রকল্প ঋণের সুযোগে ঠাসা। অনিশ্চয়তার আবহে ঋণ নিতেই অনীহা।

• রেটিং সংস্থার মন পেতে কঠিন পরিস্থিতিতেও সরকারি ব্যয় সে ভাবে বাড়ায়নি কেন্দ্র। গরিবের হাতে নগদের জোগান নেই। যদি রাজকোষ ঘাটতি বাড়ে! কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।

লাদাখে চিনের সঙ্গে সংঘর্ষকে মোদী সরকারের বিদেশনীতির ‘পাহাড়প্রমাণ ব্যর্থতা’ বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। তাদের প্রশ্ন, এত দিন প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নীরব ছিলেন কেন? কেনই বা সীমান্তের পরিস্থিতি খোলসা করছে না কেন্দ্র? অনেকের ধারণা, এই চাপের মুখে বাধ্য হয়েই সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন মোদী। বিরোধী দলগুলির আশঙ্কা, সীমান্ত-সংঘাতকে অস্ত্র করে জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলতে পারে বিজেপি। তার জেরে অনেকটাই চাপা পড়ে যেতে পারে করোনা সামলাতে কেন্দ্রের ব্যর্থতা। অগ্রাধিকারের তালিকায় পিছিয়ে যেতে পারে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার প্রসঙ্গও।

আরও পড়ুন: মনে হচ্ছে সামরিক জবাবই দেবে দিল্লি, অপেক্ষা পাহাড়ে খাপ খাইয়ে নেওয়ার

প্রধানমন্ত্রী অবশ্য আজও জোর গলায় দাবি করেছেন, অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরার লক্ষণ স্পষ্ট। বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। বাজারে বাড়ছে কেনাকাটা। গ্রামীণ অর্থনীতি থেকে শুরু করে অনলাইনে খুচরো বিক্রিবাটা— মুখ তুলছে সবই। সেই ভিতে ভর করে আত্মনির্ভর ভারত গড়ার স্বপ্নও আজ আবার ফেরি করেছেন মোদী।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE