প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ছবি এপি।
বুথফেরত সমীক্ষায় বিজেপির ঝুলিতে ভূরি ভূরি আসন! খোদ বিজেপিরই অনেকের বিশ্বাস হচ্ছে না!
যেমন নিতিন গডকড়ী। অনেক দিন ধরেই পরোক্ষে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের সমালোচনা করে আসছিলেন। যা দেখে অনেকেই মনে করেন, বিজেপির সংখ্যা কম হলে মোদীর বদলে তিনিই প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার। আজ আরএসএসের শীর্ষ নেতা ভাইয়াজি জোশীর সঙ্গে নাগপুরে তাঁর বৈঠক হয়। তাতেও ফের জল্পনা চড়েছে। তা হলে কি ভবিষ্যতের কোনও রণকৌশল তৈরি হচ্ছে? প্রধানমন্ত্রীর দাবি পেশের জন্য না কি দলের পরবর্তী সভাপতি হওয়ার জন্য?
জল্পনা আরও বাড়ল, যখন প্রকাশ্যেই গডকড়ী বললেন, ‘‘বুথফেরত সমীক্ষা শেষ অঙ্ক নয়। এটি একটি ইঙ্গিত।’’ যদিও এরই সঙ্গে জুড়েছেন, ‘‘দেশের জনতা বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদীর পাঁচ বছরের কাজের উপর ভরসা রেখে ভোট দিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে এনডিএর সরকার হবে।’’
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং সুষমা স্বরাজ আজ দিল্লিতে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন। পরে তাঁরা অসুস্থ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে দেখতে যান। জেটলি ব্লগ লিখে দলের হয়ে সওয়াল করলেও মুখ খোলেননি রাজনাথ-সুষমা।
আজ দিনভর চুপ রইলেন প্রধানমন্ত্রী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও। আগামিকাল অবশ্য বিদায়ী সরকারের মন্ত্রী, এনডিএর শরিকদের নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। শাহের ঘনিষ্ঠ এক নেতা বলেন, ‘‘সভাপতি যা বলার ২৩ মে আসল ফলের পরেই বলবেন।’’ ঘরোয়া মহলে অবশ্য দলের অনেক নেতাই এখনও পুরোপুরি আশ্বস্ত নন। তাঁদের অনেকেই মনে করছেন, বাস্তব যা পরিস্থিতি, তাতে তিনশো পার করা কঠিন। সে ক্ষেত্রে যদি সরকার গড়ার জন্যও আরও শরিক প্রয়োজন হয়? সে কারণে এখন থেকেই আগ বাড়িয়ে উত্তেজনা দেখানো ঠিক নয়। যে-সব সমীক্ষা গত কাল এনডিএ-কে তিনশো পার করিয়েছে, তাদের অনেকে আবার আসন-বিন্যাস দেখানো বন্ধ করেছে। হিসেবে গরমিল আসতেও শুরু করেছে। ফলে বিজেপি দফতরে সাজগোজ শুরু হলেও, নেতাদের উচ্ছ্বাস দেখাতে বারণ করা হয়েছে।
সকাল থেকে বিজেপির কিছু নেতা প্রচার করা শুরু করেন, রাহুল গাঁধী ফের লন্ডনে গিয়েছেন। তাঁদেরও হল্লা করতে নিষেধ করা হয়। পরে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাহুল দিল্লিতেই আছেন।
তবে বুথফেরত সমীক্ষা নিয়ে ফের ব্লগ লিখেছেন অরুণ জেটলি। এই সমীক্ষার ফল যে তিন দিন পর মিলতে পারে, তাল ঠুকে তেমনটি বলতে না পারলেও একে ঢাল করে গাঁধী পরিবার থেকে বিরোধীদের এক হাত নিয়েছেন তিনি। জেটলির যুক্তি, ‘‘যখন অনেক বুথ-ফেরত সমীক্ষা একই বার্তা দেয়, আসল ফলও সেই দিকেই এগোয়। যদি এই সমীক্ষার সঙ্গে আসল ফল মিলে যায়, তা হলে ইভিএম নিয়ে বিরোধীরা যে ভুয়ো প্রচার চালাচ্ছিল, সেটা অসার বলে প্রমাণিত হবে। পরিবারতান্ত্রিক দল, জাতিগত দল, বাধা তৈরি করা বামেরা ২০১৪ সালেও ধাক্কা খেয়েছে, এ বারেও তাই হবে।’’ এর পরেই গাঁধী পরিবারকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘কংগ্রেসের প্রথম পরিবার আর সম্পদ নয়। পরিবার ছাড়া তাঁরা ভিড় জোটাতে পারেন না। আর পরিবার দিয়ে ভোট আনতে পারেন না।’’
কংগ্রেস নেতা শশী তারুর অবশ্য বলেন, ‘‘সদ্য অস্ট্রেলিয়ায় বুথফেরত সমীক্ষার ফল মেলেনি। আমরা ২৩ তারিখের জন্য অপেক্ষা করব।’’ আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘যে উত্তরাখণ্ডে আমরা ভোটেও লড়িনি, সেখানেও আমাদের দলকে ৩% ভোট দেওয়া হয়েছে। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, এ সব সমীক্ষার কোনও মূল্যই নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy