প্রতীকী ছবি।
বন্দুকের নলের সামনে ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিয়ো করে তা নির্যাতিতাদের মোবাইলে পাঠিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ করলে তা ছড়িয়ে করে দেওয়া হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় থানায় গিয়েও অভিযোগ না নেওয়ায় রাঁচীর পুলিশ সদর দফতরে হাজির হয়ে সেই ভিডিয়ো দেখানোয় নড়চড়ে বসে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসন। গত ১৯ জুন ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলার কোচাং আর সি মিশন স্কুলে মানুষ পাচারের বিরুদ্ধে নাটক করতে গিয়ে গণধর্ষিতা হন পাঁচ আদিবাসী তরুণী। সেই মামলার তদন্তে নেমে এমন তথ্যই পেয়েছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, পাঁচ তরুণীকে ধর্ষণে ছ’জন জড়িত রয়েছে। গত কাল দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম আজুব সাণ্ডি পুর্তি এবং আশিস লোঙ্গা। ধৃত দু’জনের বাড়ি খুঁটি লাগোয়া পশ্চিম সিংভূম জেলায়। তাদের জেরা করে বাকিদের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। ঘটনার দিন ওই ছ’জন হাজির ছিল বলে জানতে পেরেছে তারা।
তবে ধর্ষণে জড়িত না হলেও ঘটনার প্রধান ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে ‘পথল্লগড়ি’ আন্দোলনের নেতা জন জোহনাস টিডুর নাম উল্লেখ করেছেন ঝাড়খণ্ড পুলিশের এডিজি (অপারেশন) আর কে মল্লিক। টিডুর নির্দেশেই গোটা ঘটনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ধৃত দু’জনের জবানবন্দি ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেফতারের পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয়েছে আর সি মিশন স্কুলের প্রিন্সিপাল ফাদার অলফনসো আয়েনকে। গোটা ঘটনায় তিনি পুলিশকে সাহায্য করেননি বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, নির্যাতিতা মহিলাদের মুখ বন্ধ রাখতে বলেছিলেন আয়েন।
প্রায় বছর খানেক ধরেই ঝাড়খণ্ডের রাঁচী, খুঁটি, সিমডেগা, গুমলা জেলায় ‘পথল্লগড়ি আন্দোলন’ চলেছে। সংবিধানের ৫ নম্বর তফসিলের উল্লেখ করে আদিবাসী প্রধান এলাকায় গ্রামগুলি স্বায়ত্তশাসন ঘোষণা করেছে। সেই কথাই পাথরে লিখে গ্রামের বাইরে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রামপ্রধানদের অনুমতি ছাড়া বাইরের কেউ গ্রামে ঢুকতে পারবেন না বলে লেখা রয়েছে সেখানে। এমন অবস্থায় কোচাং গ্রামে মানুষ পাচারের বিরুদ্ধে নাটক করতে গিয়ে অত্যাচারিত হয়েছেন আদিবাসী মহিলারাই। পুলিশের চর বলে তাঁদের উপরে অত্যাচার চালানো হয়েছে। নির্যাতিত মহিলাদের সকলেই আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ-প্রশাসনকে ‘শিক্ষা’ দিতেই পথল্লগড়ি আন্দোলনের নেতা টিডু এই ঘটনার পরিকল্পনা করেছেন বলে দাবি এডিজি-র। পুলিশের আরও দাবি, পিএলএফআই জঙ্গি গোষ্ঠীর কম্যান্ডার বাজি সামাদ ওরফে টাকলার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন জন টিডু। ধর্ষণে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে বাজি সামাদের বিরুদ্ধেও।
যদিও পথল্লগড়ি আন্দোলনের নেতারা ধর্ষণের নিন্দা করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ধর্ষণ বা পিএলএফআই জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই।
(চলবে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy