বিনীশ কোডিয়ারি
সোনা পাচারের সঙ্গেই এ বার মাদক-চক্র। ফের উত্তপ্ত কেরলের রাজনীতি। এবং অস্বস্তিতে শাসক সিপিএম।
বেঙ্গালুরু থেকে ধরা পড়া মাদক-চক্রের সঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক এবং পলিটব্যুরোর সদস্য কোডিয়ারি বালকৃষ্ণনের ছেলে বিনীশ কোডিয়ারির যোগ আছে, এই অভিযোগে এক সুরে সরব হয়েছে কংগ্রেস, মুসলিম লিগ, বিজেপি-সহ গোটা বিরোধী শিবির। কোডিয়ারি আবার পাল্টা মন্তব্য করেছেন, ছেলের অপরাধ প্রমাণ হলে যোগ্য শাস্তি হোক। দরকারে ‘ফাঁসি’ও! কিন্তু বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে এমন অভিযোগের জালে বিপাকে পড়েছে সিপিএম। সাম্প্রতিক অতীতে দক্ষিণের ওই রাজ্যে দলের কোনও রাজ্য সম্পাদকের পরিবারকে ঘিরে এত বিতর্ক হয়নি।
মাদক-তদন্তের ভারপ্রাপ্ত সংস্থা এনসিবি সম্প্রতি বেঙ্গালুরু থেকে একটি চক্রের হদিস পেয়েছে। সেই মাদক চক্রের সঙ্গে দক্ষিণী কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রী, কলা-কুশলীদের যোগসাজশও উদ্ঘাটিত হয়েছে। বেঙ্গালুরু থেকে ধৃতদের মধ্যে এক জন, মহম্মদ অনুপ এনসিবি-র কাছে জবানবন্দিতে দাবি করেছেন, বালকৃষ্ণনের ছেলে বিনীশের সঙ্গে তাঁর ব্যবসায়িক যোগাযোগ ছিল। বেঙ্গালুরুতে রেস্তোরাঁ খোলার জন্য অনুপকে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছিলেন বিনীশ। আবার সেই রেস্তোরাঁ থেকে মাদকের কারবার হত বলে তদন্তে প্রকাশ এবং সোনা পাচারে অন্যতম অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশের সঙ্গেও অনুপের যোগ আছে। বিতর্কের সূত্রপাত এখান থেকেই।
আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুতে দু’মাসের মধ্যে ফের কোভিড আক্রান্ত মহিলা
প্রথম আসরে নেমে মুসলিম যুব লিগের রাজ্য সম্পাদক পি ফিরোজ দাবি করেন, মাদক পাচারে যুক্ত থাকায় বিনীশকে গ্রেফতার করা উচিত। সোনা পাচার এবং মাদকের যোগসূত্র টেনে একই দাবি তুলেছেন বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের রমেশ চেন্নিতালা এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রনও। বিনীশ দাবি করেছেন, তিনি অনুপকে চিনতেন। ব্যবসার টাকাও দিয়েছিলেন কিন্তু সে মাদকের কারবার করে, সেটা জানতেন না। কিন্তু ঘটনার মোড় ঘুরেছে তদন্ত আরও এগোতে। দেখা গিয়েছে, বেঙ্গালুরু ও কোঝিকোড়ে বিনীশের দু’টি সংস্থা ছিল, যারা রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজ (আরওসি)-এর কাছে আয়ব্যয়ের হিসেব জমা দেয়নি এবং তাই তাদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই দুই সংস্থার মধ্যে একটি আবার বিদেশি মুদ্রা (ফরেক্স) সংক্রান্ত লেনদেনে যুক্ত ছিল। বিরোধীদের প্রশ্ন, ‘প্রভাবশালী’ বাবার পরিচয় কাজে লাগিয়ে বিনীশ কি মাদক পাচারের টাকা বিদেশে চালান করতেন?
ঘটনা হল, বালকৃষ্ণনের দুই ছেলে বিনীশ ও বিনয়কে নিয়ে বিতর্ক বিস্তর। অতীতে বালকৃষ্ণন কেরলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময়েও তাঁরা নানা অভিযোগে জড়িয়েছেন। এখন ভোটের মুখে অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব বালকৃষ্ণনকে বলেছেন, অভিযোগ ভিত্তিহীন হলে তাঁর ছেলে যেন মানহানির মামলা দায়ের করেন। আর স্বয়ং বালকৃষ্ণনের মন্তব্য, ‘‘তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। কোনও তথ্যপ্রমাণ থাকলে বিরোধী নেতারা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিন! আমার ছেলের অপরাধ প্রমাণিত হলে তার যোগ্য শাস্তি হোক। ফাঁসিযোগ্য অপরাধ হলে ফাঁসিই হোক! কিন্তু তদন্তের আগে রায় শুনিয়ে দেবেন না!’’ মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও বলে রেখেছেন, কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্ত করছে বলেই রাজ্য সরকার আলাদা কিছু করছে না। নইলে আবার ‘আড়াল করার চেষ্টা’র অভিযোগ উঠবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy