ছবি: পিটিআই।
জেএনইউ কর্তৃপক্ষের দাবি, টানা আড়াই মাসেরও বেশি অচলাবস্থার পরে মঙ্গলবার স্বাভাবিক হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। পরিবেশ তো শান্ত হয়েইছে, সেই সঙ্গে ক্লাসও শুরু হয়েছে কিছু বিভাগে। বাড়ছে নতুন সিমেস্টারের জন্য নথিভুক্তির সংখ্যা। কিন্তু ছাত্র সংসদ জেএনইউএসইউয়ের পাল্টা দাবি, বর্ধিত ফি এবং হস্টেলের নতুন নিয়ম পুরোপুরি প্রত্যাহার না-হওয়া পর্যন্ত জারি থাকবে তাদের আন্দোলন। নাম নথিভুক্ত না-করার অবস্থান থেকেও এখনও সরে আসেনি তারা। আর শিক্ষক সংগঠন জেএনইউটিএ-র অভিযোগ, যতক্ষণ উপাচার্যের পদ থেকে এম জগদেশ কুমার না-সরছেন, ততক্ষণ ক্যাম্পাস স্বাভাবিক হওয়া অসম্ভব। যদিও সংবাদমাধ্যমের সামনে উপাচার্যের দাবি, ক্যাম্পাসে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের মধ্যে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টার জন্যই বার বার বিরোধিতার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। বিশ্ববিদ্যালয়কে না-জানিয়ে বিদেশ যাওয়া থেকে শুরু করে দিনে অন্তত পাঁচ ঘণ্টা ক্যাম্পাসে থাকা— এমন বিভিন্ন বিষয়ে কড়া অবস্থান নেওয়ার কারণেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছে বলে তাঁর অভিযোগ।
সোমবারই আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের উপরে চাপ বাড়িয়ে মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক বলেন, বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবি ঘিরে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তার সমাধানসূত্র বেরিয়েছে। তাই এর পরেও পড়ুয়াদের বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়া যুক্তিহীন। এক ধাপ এগিয়ে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ক্যাম্পাস স্বাভাবিক হওয়ার কথা বলছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি সাকেত মুন বলেন, ‘‘বর্ধিত ফি-ই একমাত্র সমস্যা নয়। হস্টেলের নতুন নিয়মবিধিতে শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদের জন্যও ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার কথা বলা হয়েছে। হিটার-সহ কোনও বৈদ্যুতিন পণ্য হস্টেলের ঘরে রাখলেও ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার কথা বলা হয়েছে। মেসের খরচ সময়ে দিতে না-পারলে তার জন্য চড়া জরিমানা, এমনকি ঘরছাড়া করার কথাও লেখা রয়েছে। এই সমস্ত সমস্যা না-মেটা পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে।’’
এ ছাড়া আন্দোলনকারীদের দাবি, গত শনিবার তাঁরা নথিভুক্তির কথা বললেও, তার সঙ্গে বর্ধিত হস্টেল ফি-ও দিতে বাধ্য করছিলেন কর্তৃপক্ষ। সেই কারণেই আপাতত তা বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, বুধবার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসবে ছাত্র সংসদ।
আরও পড়ুন: সিএএ খারিজের আর্জি নিয়ে আদালতে কেরল সরকার
ক্যাম্পাস স্বাভাবিক হওয়ার দাবি উড়িয়ে দিচ্ছে শিক্ষক সংগঠনও। জেএনইউটিএ-র সচিব সুরজিৎ মজুমদার বলেন, ‘‘ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে পড়ুয়াদের লড়াইয়ে আমাদের নীতিগত সমর্থন ছিলই। তার পরে ৫ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে তাণ্ডবের পরে বদলে গিয়েছে পুরো ছবিই। যে ভাবে পড়ুয়া, এমনকি শিক্ষকদের উপরেও কর্তৃপক্ষের মদতে হামলা হয়েছে, তাতে উপাচার্য না-সরা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিক হওয়া অসম্ভব।’’
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, জেএনইউ-কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ৮ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তারা। এর মধ্যে ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ-সহ পাঁচ জন বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। বাকি তিন জন এবিভিপি যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছিল বলে অভিযোগ, তার সদস্য। বাকিদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তদন্তের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরা যাবতীয় মেসেজ সংরক্ষণের জন্য দিল্লি হাইকোর্ট গুগ্ল, হোয়াটসঅ্যাপকে নির্দেশ দিয়েছে। বাজেয়াপ্ত করতে বলেছে বিতর্কিত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্যদের ফোনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy