—প্রতীকী চিত্র।
ধর্ষণের অভিযোগ জানানোর পরেও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। সেই অপমানে থানার মধ্যেই আত্মঘাতী হলেন ২৩ বছরের এক তরুণী। সোমবার হরিয়ানার যমুনানগর জেলার জঠলানা থানায় এমনই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। কাজে গাফিলতির অভিযোগে দুই পুলিশ অফিসারকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০-১২ দিন আগে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ওই থানায় যান নির্যাতিতা। তার পরেও একাধিক বার সেখানে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর বয়ানকে গুরুত্বই দেয়নি পুলিশ। কোনও মামলা দায়েরওহয়নি। তাতেই ভেঙে পড়েন ওই তরুণী। সোমবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে থানার মধ্যেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি তাঁকে।
মেয়ের মৃত্যুর জন্য পুলিশকেই দায়ী করেছে ওই তরুণীর পরিবার। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে তাঁর বাবা জানান, ‘‘২০১৬-র এপ্রিলে মেয়ের বিয়ে দিই। কিন্তু মা হতে পারেনি বলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন অত্যাচার শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে পাড়ারই এক মহিলার সঙ্গে আলাপ হয় ওর। স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করিয়ে দেবে বলে আশ্বাস দেয় ওই মহিলা। বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বলে। সাদা মনে তাকে বিশ্বাস করে বেরিয়ে যায় আমার মেয়ে। তাতেই কাল হয়। ওই মহিলা ও তার লোকজন মিলে ওকে দেহব্যবসায় নামতে বাধ্য করে। নেশার ওষুধ খাইয়ে অশ্লীল ছবি এবং ভিডিয়ো তুলে ব্ল্যাকমেলও শুরু করে।’’
আরও পড়ুন: গমগমে সোনার বাজার যেন শ্মশান, পথে নামলেন বৌবাজারের দোকানিরা
আরও পড়ুন: বোরখায় সন্দেহ! ধর্ম পরিচয় জেনেই পুণেতে চিকিৎসককে আক্রমণ মার্কিন নাগরিকের
এ বছর ১০ মে থেকে ৭ জুলাইয়ের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেন ওই ব্যক্তি। তাঁর কথায়, ‘‘সুযোগ পেয়ে সম্প্রতি কোনওরকমে নিজের কাকার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমার মেয়ে। সঙ্গে সঙ্গে ওই গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে যাই আমরা। ওই মহিলার কবল থেকে মেয়েকে উদ্ধার করি। এর পর গত ১৩ অগস্ট থেকে ১৯ অগস্টের মধ্যে একাধিক বার যমুনানগর থানায় যাই আমরা। এসপির সামনে বয়ানও দেয় আমার মেয়ে। তা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেনি পুলিশ। তাতে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করে ও। গতকালও একই ঘটনা ঘটায় থানার মধ্যেই মুখে বিষ ঢালে ও।’’
শুরুতে বিষয়টিকে তেমন আমল দেয়নি যমুনানগর থানার পুলিশ। তিন মাস আগে নিজের ইচ্ছায় এক ব্যক্তির সঙ্গে ওই তরুণী পালিয়ে গিয়েছিলেন এবং সেই মর্মে আদালতে বিবৃতিও দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন ডিএসপি সুভাষ চাঁদ। কিন্তু গত কাল ওই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ইতিমধ্যেই থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক চন্দ্রপাল এবং এএসআই নরেশকুমারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে সাত অভিযুক্তকেও শনাক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে তিন জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ১২০-বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ৩০৬ (আত্মহত্যায় প্ররোচনা), ৩৭০ (মানব পাচার), ৩৭৬ (ধর্ষণ) ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বুধবার তাদের আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন যমুনানগরের এসপি কুলদীপ সিংহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy