Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

গডসে-মন্তব্য: প্রজ্ঞা বাদ কমিটি থেকে

এ আবার কী শাস্তি! যাঁকে প্রধানমন্ত্রী মন থেকে ক্ষমা করতে পারেন না, তাঁর তো একটাই শাস্তি হওয়া উচিত—সাংসদ পদ থেকে অপসারণ।

বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর।—ছবি পিটিআই।

বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০৩
Share: Save:

পাঁচ মাস আগে যাঁকে ‘মন থেকে ক্ষমা’ করতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী, আজও তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিতে পারলেন না। বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর কাল লোকসভায় ফের গাঁধী-হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে ‘দেশপ্রেমিক’ বলেন। আজ সকালে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর তাঁর দল ঘোষণা করল, প্রজ্ঞার ‘শাস্তি’ দু’টি। এক, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের উপদেষ্টা কমিটি থেকে বাদ পড়বেন প্রজ্ঞা। আর সংসদ চললে ফি-হপ্তায় হওয়া বিজেপির সাংসদদের বৈঠকে থাকবেন না। অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি হবেন না।

এই শুনে আরও তেড়ে-ফুঁড়ে উঠল কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দল। এ আবার কী শাস্তি! যাঁকে প্রধানমন্ত্রী মন থেকে ক্ষমা করতে পারেন না, তাঁর তো একটাই শাস্তি হওয়া উচিত—সাংসদ পদ থেকে অপসারণ। সংসদ শুরু হতেই ফের হইচই। তার আগেই নিজের মন্ত্রকের উপদেষ্টা কমিটির প্রধান প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানালেন, তিনি প্রজ্ঞাকে কমিটি থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। আর লোকসভায় বললেন, ‘‘নাথুরাম গডসেকে দেশভক্ত বলা তো দূর, যিনি দেশভক্ত ভাবেন, সেই ভাবনারও নিন্দা করি আমরা। গাঁধী আমাদের আদর্শ। তিনি অতীতেও আমাদের পথপ্রদর্শক ছিলেন, আছেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন।’’

বিরোধীরা প্রতিবাদে সভাকক্ষ ত্যাগ করলেন। পরে স্থির করলেন, প্রজ্ঞাকে ভর্ৎসনা করার দাবি জানানো হবে স্পিকারের কাছে। সেই মোতাবেক চিঠিও লিখলেন জনা পঞ্চাশ বিরোধী সাংসদ। কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী থেকে ডিএমকের দয়ানিধি মারান। আসাদউদ্দিন ওয়াইসি জানালেন, স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিচ্ছেন তিনি। সংসদে আজ খোশমেজাজে প্রবেশ করছিলেন রাহুল গাঁধী। প্রজ্ঞা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘‘উনি যা বলেছেন, সেটি তো বিজেপি-আরএসএসের আত্মা। কী করে লুকোবেন? আমি কী বলব? তাঁর শাস্তি চেয়ে নিজের শক্তি অপচয় করব না।’’

পরে অবশ্য টুইট করলেন রাহুল: ‘‘সন্ত্রাসবাদী প্রজ্ঞা সন্ত্রাসবাদী গডসেকে দেশভক্ত বলেন। ভারতের সংসদের ইতিহাসে দুঃখের দিন।’’ যাঁকে নিয়ে এত তোলপাড়, দিনভর অধরা থাকলেন সেই প্রজ্ঞা। শুধু টুইটে দাবি করলেন, ‘‘কখনও কখনও মিথ্যার পাহাড় এত গভীর হয় যে দিনকে রাত মনে হয়। কিন্তু সূর্যের আলো স্থায়ী থাকে। আমি কাল উধম সিংহের অপমান সহ্য করিনি শুধু।’’

সারা দিন সংবাদমাধ্যম থেকে পালিয়েই বেড়ালেন প্রজ্ঞা। ঝাড়খণ্ডের প্রচারে গিয়েও জবাব দিতে হল বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে। পাঁচ মাস আগেই যিনি জানিয়েছিলেন, দশ দিনে শাস্তি হবে প্রজ্ঞার। আজও বললেন, ‘‘বিজেপি এই বক্তব্যে সহমত নয়। ঘোর নিন্দা করে। শাস্তি হবে।’’ কবে? জবাব: ‘‘হবে।’’ কিন্তু বিজেপির শিবির বলছে, মহারাষ্ট্রে মুখ পুড়েছে। এই নিয়ে বিতর্ক হলে মন্দ কী? অন্তত নজর তো ঘুরবে! তা হলে কী প্রজ্ঞাকে বিজেপিই ব্যবহার করছে? সে কারণেই কী কঠোর শাস্তি হচ্ছে না?

এরই মধ্যে বালিয়ার বিজেপির এক বিধায়ক সুরেন্দ্র সিংহও আজ বলে বসেন, ‘‘গডসে সন্ত্রাসবাদী ছিলেন না। শুধু একটি ভুল করেছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Pragya Singh Thakur Nathuram Godse Patriot BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE