বিকাশ দুবে। ছবি: সংগৃহীত।
মা বলছেন, গুলি করে মারা হোক তাঁর ছেলেকে। বাবার মতে, আইনানুযায়ী যা সঠিক মনে হয়, করবে সরকার। তবে পরিবারের মত যা-ই হোক না কেন, পুলিশের কাছে এখনও অধরা উত্তরপ্রদেশের গ্যাংস্টার বিকাশ দুবে। রাজ্যের এক ডেপুটি পুলিশ সুপার-সহ আট পুলিশকর্মী খুনের পর তিন দিন পার হয়ে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও গোটা রাজ্য জুড়ে চিরুনি তল্লাশি চালালেও হদিশ মিলছে না বিকাশের।
বৃহস্পতিবার রাতে কানপুরের বিকরু গ্রামে পুলিশের সঙ্গে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর থেকেই একেবারে বেপাত্তা বিকাশ ও তার দলবল। ওই ঘটনায় এক ডেপুটি পুলিশ সুপার, তিন সাব-ইনস্পেক্টর, চার কনস্টেবল-সহ আট পুলিশকর্মীকে ঠান্ডা মাথায় খুনের অভিযোগ রয়েছে বিকাশের বিরুদ্ধে। বিকাশকে পাকড়াও করতে নামানো হয়েছে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। অভিযান চালাচ্ছে ২৫টিরও বেশি পুলিশের দল। ইতিমধ্যেই একশোরও বেশি জায়গা তন্ন তন্ন করে তল্লাশি চালিয়েছে তারা। উত্তরপ্রদেশ জুড়ে তল্লাশি তো চলছেই, বিকাশের খোঁজে নেপাল সীমান্তেও পৌঁছে গিয়েছে পুলিশ। অভিযান চালানো হচ্ছে অন্য রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকাতেও। ঘেঁটে দেখা হয়েছে পাঁচশোরও বেশি মোবাইলের তথ্য। এমনকি, বিকাশের সম্পর্কে তথ্যপ্রদানকারীর পুরস্কারমূল্য ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১ লক্ষ টাকা। তবে কোনও ভাবেই সন্ধান মিলছে না বিকাশের।
এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা বিকাশের বিরুদ্ধে ৬০টিরও বেশি অপরাধমূলক মামলা ঝুলছে। খুন, অপহরণ, দাঙ্গা বাধানো— সবেতেই জড়িয়েছে তার নাম। ছেলের এহেন কুকর্মের জন্য অত্যন্ত বিরক্ত বিকাশের মা সরলা দেবী। পুলিশের কাছে তাঁর আর্জি, “যেখানেই হোক, বিকাশকে যেন গুলি করে মারা হয়।” তার কারণও জানিয়েছেন সরলা দেবী। বিকাশের কুকর্মের জন্য তাঁর পরিবারকে লজ্জায় পড়়তে হয়েছে বলেছেন বৃদ্ধা। তাঁর কথায়, “লোকজন ওই ঘটনার কথা আমাকে জানিয়েছেন। আমিও টিভিতে দেখেছি।” এর পর সরলা দেবীর স্বগতোক্তি, “যে অন্যদের এত কষ্ট দিয়েছে, তাকে তো পাপের শাস্তি ভোগ করতেই হবে!”
আরও পড়ুন: তাড়াহুড়ো করে কোভিড টিকা বাজারে আনা হচ্ছে, মত এমস কর্তার
সরলা দেবীর মতো কড়া প্রতিক্রিয়া না দিলেও বিকাশের বাবা রামকুমার দুবের মতে, তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সরকারের। তাঁর কথায়, “সরকার আইন অনুযায়ী চলবে, এ বিষয়ে আমি কী করতে পারি? সরকারের যা সঠিক বলে মনে হয়, তা-ই করা উচিত।”
আরও পড়ুন: পুলওয়ামায় ফের সিআরপিএফ কনভয়ে বিস্ফোরণ জঙ্গিদের
বিকাশের খোঁজে জোরদার তল্লাশি চললেও অভিযোগ উঠছে, পুলিশের অন্দরেই তার যোগসাজশ রয়েছে। এমনকি, বৃহস্পতিবার বিকাশকে গ্রেফতারির জন্য অভিযানের খবরও নাকি আগে থেকে জানিয়ে দেন চৌবেপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বিনয় তিওয়ারি। সে কথা বকলমে মেনেও নিয়েছেন উত্তরপ্রদেশ পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। আইজি (কানপুর রেঞ্জ) মোহিত আগরওয়াল বলেন, “এনকাউন্টারের সময় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন ওই আধিকারিক। তিনি দুষ্কৃতীদের মুখোমুখি হলে পরিস্থিতি হয়তো অন্য রকম হতে পারত।” গোটা ঘটনায় বিনয় তিওয়ারির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শনিবার বিকাশের কানপুরের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন। তবে এত কিছু সত্ত্বেও খোঁজ নেই বিকাশের।
বিকাশের তল্লাশি অভিযানের মাঝেই উত্তরপ্রদেশে তাকে নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। শোনা যাচ্ছে, ইতিমধ্যে আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে বিকাশ। অনেকে বলছেন, বিকাশের বাবা রামকুমারকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনও বিবৃতি দেয়নি রাজ্য প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy