কোথাও রাস্তা আটকে, কোথাও ‘রেল রোকো’ অভিযানের মাধ্যমে কৃষি বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন কৃষকরা। ছবি—পিটিআই।
নতুন কৃষি বিল নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন রাজ্যসভার সাংসদদের একাংশ। সেটা ছিল গত রবিবার। শুক্রবার তা ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। রাস্তায় নেমে এই বিলের প্রতিবাদ করছেন কৃষকরা। দেশের কৃষক সংগঠনগুলি মিলিত ভাবে এ দিন ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছিল। কংগ্রেস-সহ দেশের অধিকাংশ বিরোধী দলের নীতিগত সমর্থন আছে এই বন্ধে। পঞ্জাব ও হরিয়ানার বিভিন্ন জায়গা ছাড়াও কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, বিহারেও চলছে প্রতিবাদ বিক্ষোভ। কোথাও রাস্তা আটকে, কোথাও ‘রেল রোকো’ অভিযানের মাধ্যমে এই বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন কৃষকরা। পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সে জন্য প্রচুর পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।
পঞ্জাব ও হরিয়ানাতে এই বন্ধের প্রভাব সবথেকে বেশি। অমৃতসর, জালন্ধর, লুধিয়ানা, অম্বালা। চণ্ডীগড় সহ সেখানকার বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করছেন বিভিন্ন কৃষক সংগঠনগুলি। জালন্ধরের কাছে সকাল থেকেই অমৃতসর-দিল্লি জাতীয় সডকত অবরোধ করেছে ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন ও রেভোলিউশনারি মার্ক্সিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া। অম্বালাতে বিক্ষোভের জেরে বন্ধ রয়েছে দিল্লি-চণ্ডীগড় বাস পরিষেবা। লুধিয়ানার চিত্রটাও একই রকম। কিষান মজদুর সংঘর্ষ কমিটি বৃহস্পতিবার থেকেই পঞ্জাব জুড়েই চালাচ্ছে ‘রেল রোকো’ অভিযান। আজও তা অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যেই ফিরোজপুর ডিভিশনে ১৩টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ বিক্ষোভকারী কৃষকদের করোনাভাইরাস সুরক্ষা বিধি মেনে শান্তিপূর্ণ ভাবে বিক্ষোভ করার আবেদন জানিয়েছেন। এনডিএ-র শরিক শিরোমণি আকালি দলও এই বিলের প্রতিবাদে সারা পঞ্জাব জুড়ে তিন ঘণ্টার ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচি নিয়েছে।
কৃষি বিল ২০২০-র প্রতিবাদে নেমেছে কর্নাটকের রাজ্য কৃষক সংগঠনও। বোম্মানহালিতে কর্নাটক-তামিলনাড়ু জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সে রাজ্যের কৃষকরা। মহারাষ্ট্রেও বিক্ষোভে নেমেছে বাম সমর্থিত অল ইন্ডিয়া কিষান সভা। সে রাজ্যের প্রায় ২১টি জেলাতে বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন কিষান সভার ৩০ হাজারেরও বেশি সদস্য। উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গাতেও পথে নেমেছেন কৃষকরা। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে দিল্লি- উত্তরপ্রদেশ সীমানায় চিল্লাতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিল ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিতে বারাবাঁকিতে অযোধ্যা-লখনউ হাইওয়ে অবরোধ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। দিল্লির উপকণ্ঠে নয়ডাতেও চলছে কৃষকদের বিক্ষোভ। ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন রাস্তা অবরোধ করে এই বিলের প্রতিবাদ করছে। যার জেরে যান চলাচলকে দিক পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিসিপি নয়ডা।
Punjab: Farmers, under the aegis of Bharatiya Kisan Union and Revolutionary Marxist Party of India (RMPI), block Amritsar-Delhi National Highway near Phillaur in Jalandhar, in protest against #FarmBills passed in the Parliament. pic.twitter.com/6zsXZ5VhnW
— ANI (@ANI) September 25, 2020
কৃষি বিলের বিরুদ্ধে বিহারের রাস্তায় নেমেছেন লালুর দুই ছেলে। কৃষকদের নিয়ে পটনার রাস্তায় র্যালিও করেছেন তাঁরা। সেই র্যালিতে রাষ্ট্রীয় জনতা দলে (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদবকে দেখা গিয়েছে ট্রাক্টর চালাতে। তখন তাঁর দাদা তেজপ্রতাপ যাদব চড়েছিলেন ট্রাক্টরের মাথায়। এই বিলকে কৃষক বিরোধী অ্যাখ্যা দিয়ে তেজস্বী বলেছেন, ‘‘সরকার আমাদের ‘অন্নদাতাদের’ পুতুল বানানোর চেষ্টা করছে। ২০২২-র মধ্যে কৃষকদের রোজগার দ্বিগুণ করার কথা বলেছিল সরকার। কিন্তু এই বিল তাঁদের আরও গরিব করবে।’’
#WATCH Patna: Rashtriya Janata Dal (RJD) leader Tej Pratap Yadav sits atop a tractor while Tejashwi Yadav drives it, during the protest against #AgricultureBills passed in the Parliament. #Bihar pic.twitter.com/kHEyuX9kmy
— ANI (@ANI) September 25, 2020
বৃহস্পতিবারই এই বন্ধকে সমর্থন করেছিল কংগ্রেস। শুক্রবার সকালেই কৃষি বিলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মোদী সরকারকে আক্রমন করেছেন রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী ভদ্রা। আজকের বন্ধকে সমর্থন করে রাহুল গাঁধী লিখেছেন, ‘‘ক্রুটিপূর্ণ জিএসটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে ধ্বংস করেছে। নতুন কৃষি আইন আমাদের কৃষকদের ক্রীতদাস বানাবে।’’ এই সুর ধরা পড়েছে প্রিয়ঙ্কার টুইটেও। তিনি লিখেছেন, ‘‘কৃষকদের থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য কেড়ে নেওয়া হবে। কোটি কোটি কৃষকদের ক্রীতদাসে পরিণত হতে বাধ্য করা হবে। না পাবে দাম, না পাবে সন্মান। নিজের জমিতেই শ্রমিকে পরিণত হবে কৃষকরা।’’ বিজেপির আনা কৃষি বিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজত্বের কথাও মনে করিয়ে দেয় বলেও এ দিন তোপ দেগেছেন তিনি।
A flawed GST destroyed MSMEs.
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) September 25, 2020
The new agriculture laws will enslave our Farmers.#ISupportBharatBandh
এই বিল দেশের কৃষকদের আর্থিক উন্নতি জন্য আনা হয়েছে বলে শুরু থেকে দাবি করে আসছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিরোধী আপত্তি উড়িয়ে ‘গায়ের জোরেই’ সংসদে বিল পাশ করেছে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার। তার পর থেকেই দেশের অধিকাংশ বিরোধীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। বিলে সই না করার জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি কৃষকরাও নেমেছেন রাস্তায়। আজকের বন্ধে অংশ না নিলেও এই কৃষি বিলে পরিবর্তনের জন্য সওয়াল করেছে ভারতীয় কিষান সংঘ ও স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের মতো আরএসএস ঘনিষ্ট কৃষক সংগঠন।
किसानों से MSP छीन ली जाएगी। उन्हें कांट्रेक्ट फार्मिंग के जरिए खरबपतियों का गुलाम बनने पर मजबूर किया जाएगा।
— Priyanka Gandhi Vadra (@priyankagandhi) September 25, 2020
न दाम मिलेगा, न सम्मान।
किसान अपने ही खेत पर मजदूर बन जाएगा।
भाजपा का कृषि बिल ईस्ट इंडिया कम्पनी राज की याद दिलाता है।
हम ये अन्याय नहीं होने देंगे।#BharatBandh
পরিস্থিতি অনুকূলে নয় দেখে বৃহস্পতিবার বিতর্কিত বিল নিয়ে কৃষকদের ‘বোঝাতে’ আসরে নামেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর। তিনি বলেছেন, ‘‘এই বিলে কৃষকদের ক্ষতি হবে, এমন কোনও বিষয় নেই। ছোট কৃষকদের লাভের কথা ভেবেই বিল আনা হয়েছে।’’ কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, এই আইনের ফলে কৃষকদের চেয়ে বেশি লাভ হবে বড় ব্যবসায়ী সংস্থাগুলির। পথে বসবেন ছোট কৃষকেরা। উঠে যাবে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যও। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘‘মিথ্যে বলে এত দিন কৃষকদের পাওনা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছিলেন যাঁরা, তাঁরাই এখন কৃষকদের কাঁধে বন্দুক রেখে চালাচ্ছেন। সরকারি নীতি নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy