Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Farm Bills 2020

কৃষক বিক্ষোভের আঁচ রাজধানীতে, পুড়ল ট্রাক্টর, পঞ্জাবে অনড় চাষিরা

কর্নাটকে আবার রাজ্য বিধানসভায় দু’টি বিল পাশের প্রতিবাদে বন্‌ধের ডাক দিয়েছে কয়েকটি কৃষক সংগঠন ও বিরোধী কংগ্রেস-জেডিএস জোট।

রাজধানীর রাজপথে জ্বলছে ট্রাকটর। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

রাজধানীর রাজপথে জ্বলছে ট্রাকটর। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১০:৫০
Share: Save:

প্রায় দু’বছর আগে একই রকম ছবি দেখেছিল দিল্লি। দিনের পর দিন হেঁটে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজধানীতে পৌঁছেছিল ১০ হাজার কৃষকের আন্দোলন বিক্ষোভ। তখন ছিল দাবি। এ বার প্রতিবাদ। তিনটি কৃষি বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন-বিক্ষোভ পৌঁছে গেল রাজধানী দিল্লিতে। সোমবার সকালে এক দল কৃষক ইন্ডিয়া গেটের সামনে একটি ট্রাক্টর জ্বালিয়ে দেন। পরে পুলিশ ও দমকল পৌঁছে আগুন নিভিয়ে সরিয়ে নেয় ট্রাক্টরটি।

রবিবার রাতেই তিনটি কৃষি বিলে সম্মতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। রাত পোহাতেই রাজধানীতে কৃষক বিক্ষোভ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সওয়া ৭টা থেকে সাড়ে ৭টার মধ্যে ইন্ডিয়া গেটের সামনে জড়ো হন ১৫-২০ জন কৃষকের একটি দল। একটি ট্রাক্টরে আগুন লাগিয়ে দেন তাঁরা। সঙ্গে চলতে থাকে কংগ্রেসের সমর্থনে বিক্ষোভ। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁরা ঘটনাস্থল ছেড়ে যান। পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।

দিল্লির পাশাপাশি পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশে এখনও চলছে কৃষকদের প্রতিবাদ-আন্দোলন। পঞ্জাবে অমৃতসর-দিল্লি রেললাইনের উপর অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন চাষিরা। ‘কিসান মজদুর সংঘর্ষ কমিটি’র ব্যানারে বুধবার থেকে এই কর্মসূচি চলছে। রাজ্য ও কেন্দ্রের নানা আশ্বাস-প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও আন্দোলনকারী কৃষকদের টলানো যায়নি। রাষ্ট্রপতি তিনটি কৃষি বিলে সই করার পর পঞ্জাবে কৃষকদের আন্দোলন আরও জোরদার হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আরও পড়ুন: নয়া আইনে লাভ চাষিদেরই: মোদী

‘কৃষি পণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন বিল’ এবং ‘কৃষক সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন বিল’ পাশ ঘিরে গত ২০ সেপ্টেম্বর রবিবার ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে যায় রাজ্যসভায়। ওয়েলে নেমে হট্টগোলের পাশাপাশি ডেপুটি চেয়ারম্যানের টেবিলের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ, মাইক্রোফোন ভেঙে দেওয়া, রুল বুক ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে বিরোধী সাংসদের বিরুদ্ধে। শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে সাসপেন্ড হয়ে সংসদের লনে ধর্নায় বসেন আট সাংসদ। অন্য দিকে রাজ্যসভা বয়কট করেন বিরোধীরা। তার পর বিরোধীশূন্য রাজ্যসভায় কৃষি সংক্রান্ত তৃতীয় বিল ‘অত্যাবশ্যকীয় পণ্য (সংশোধনী) বিল’ও পাশ করিয়ে নেয় মোদী সরকার। বিরোধীদের অভিযোগ, সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকা সত্ত্বেও গায়ের জোরে বিল তিনটি পাশ করিয়ে নিয়েছে শাসক দল। তাঁরা ভোটাভুটির দাবি জানালেও ডেপুটি চেয়ারম্যান তাতে কর্ণপাত না করে ধ্বনি ভোটে বিল পাশ করান। রাষ্ট্রপতিকে বিলে সই না করে এই বিল তিনটি সংসদে ফেরত পাঠানোর আর্জিও জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু রবিবার বিলে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি। ফলে তিনটি বিলই (জুন মাসে জারি হওয়া অধ্যাদেশ) আইনে পরিণত হয়েছে। রবিবার প্রথম দু’টি বিল পাশের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ-আন্দোলন।

আরও পড়ুন: এনডিএ ছেড়েই এনডিএ-র বিরুদ্ধে এক হওয়ার ডাক দিল অকালি

২০১৮ সালের নভেম্বরে ‘কিসান মুক্তি মার্চ’ ঘিরে অস্বস্তিতে পড়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কৃষি ঋণ মকুব, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি এবং এম এস স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশ কার্যকর করার দাবিতে পথে নেমেছিলেন সারা দেশের প্রায় ১০ হাজার কৃষক। দুই শতাধিক কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ‘অল ইন্ডিয়া কিসান সংঘর্ষ কো-অর্ডিনেশন কমিটি’র ডাকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক দিন ধরে পাঁয়ে হেঁটে রাজধানীতে পৌঁছেছিলেন কৃষকরা। সেই আন্দোলন ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল গোটা দেশে। বহরে অত বড় না হলেও কৃষি বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আঁচও পৌঁছল দিল্লিতে।

কর্নাটকে আবার আন্দোলন চলছে রাজ্য বিধানসভায় দু’টি বিল পাশের প্রতিবাদে। শনিবার বিধানসভায় পাশ হয়েছে ‘কৃষি পণ্য বিপণন (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) সংশোধনী বিল’ ও ‘কর্নাটক ভূমি সংস্কার সংশোধনী বিল’। তার প্রতিবাদে সোমবার রাজ্য জুড়ে বন্‌ধের ডাক দিয়েছে বেশ কয়েকটি কৃষক সংগঠন এবং রাজ্যের বিরোধী জোট কংগ্রেস-জেডিএস। সকাল থেকেই বন্‌ধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। রাস্তায় যানবাহন অমিল। খোলেনি দোকানপাট। বেঙ্গালুরুতে টাউন হল থেকে মাইসোর ব্যাঙ্ক সার্কেল পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছে বিরোধীরা। যদিও পুলিশ তাতে অনুমতি দেয়নি। তাই এই মিছিল ঘিরে উত্তেজনার আশঙ্কা রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi Farm Bills 2020 Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy