প্রশ্নের মুখে দেবেন্দ্র। —ফাইল চিত্র।
মহা নাটকের যবনিকা পতন হয়েছে আগেই। মহারাষ্ট্র নিয়ে এ বার দোষারোপের পালা শুরু হল বিজেপির অন্দরে। গোটা পরিস্থিতির জন্য দেবেন্দ্র ফডণবীসের অদূরদর্শিতাকেই দায়ী করলেন দলের নেতা একনাথ খাডসে। তাঁর মতে, পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে যে অজিত পওয়ারের বিরুদ্ধে, কোনও পরিস্থিতিতেই তাঁর সঙ্গে হাত মেলানো উচিত হয়নি ফডণবীসের।
বরাবর দেবেন্দ্র ফডণবীসের সমালোচক হিসাবেই পরিচিত একনাথ খাডসে। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও পরিস্থিতিতেই অজিত পওয়ারের সমর্থন গ্রহণ করা উচিত হয়নি বিজেপির। পাহাড় প্রমাণ সেচ দুর্নীতি সহ আরও বহু অভিযোগ রয়েছে ওঁর বিরুদ্ধে। ওঁর সঙ্গে হাত মেলানো একেবারেই উচিত হয়নি আমাদের।’’
১৯৯৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের সেচমন্ত্রী ছিলেন অজিত পওয়ার। সেইসময় ৩৮টি প্রকল্পের ছাড়পত্র দেন তিনি। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, ওই প্রকল্পগুলির জন্য বিদর্ভ ইরিগেশন ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনের ছাড়পত্র তো নেওয়াই হয়নি, উল্টে দরপত্রের নিয়মকানুনেও ইচ্ছামতো পরিবর্তন ঘটানো হয়। অথচ সেই বাবদ প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়ে গেলেও, ১০ বছরে এক শতাংশ জমিও সেচের আওতায় আসেনি।
আরও পড়ুন: রাজ্যপাল-উদ্ধব বৈঠক, মহারাষ্ট্রে কারা মন্ত্রী হবেন? শরদের সঙ্গে আলোচনায় কংগ্রেস
এই প্রকল্পের ব্যর্থতা এবং গোটা প্রক্রিয়ায় অনিয়মের জন্য শুরু থেকেই অজিত পওয়ারের বিরুদ্ধে আঙুল তুলে আসছিল বিজেপি ও শিবসেনা। কিন্তু গত সপ্তাহে এনসিপি ভেঙে দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের সঙ্গে হাত মেলানোর দু’দিন পরেই উপ মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়া অজিতকে সেই সংক্রান্ত ন’টি মামলা থেকে ছাড়় দেওয়া হয়। সরকার গড়তে বিজেপিকে সাহায্য করেছেন বলেই অজিতকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে সেইসময় দাবি করে শিবসেনা-এসিপি-কংগ্রেস জোট।
তার পর মঙ্গলবারই অবশ্য গোটা পরিস্থিতি পাল্টে যায়। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে সুপ্রিম কোর্ট ‘ওপেন’ ব্যালটে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আস্থাভোটের নির্দেশ দিতেই উপ মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে এনসিপিতে ফিরে যান অজিত। বাধ্য হয়ে ইস্তফা দিতে হয় দেবেন্দ্র ফডণবীসকেও। তা নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি একনাথ। তিনি বলেন, ‘‘আস্থাভোটে গেলে আরও মুখ পুড়ত। তাই ইস্তফা দিয়েছেন অজিত। এমনটা যে হবে তা তো জানাই ছিল।’’
আরও পড়ুন: মোদীর স্বপ্নের বুলেট ট্রেনে টাকা নয়, এক সুরে শিবসেনা, এনসিপি, কংগ্রেস
এমনকি অজিত পওয়ারের সঙ্গে জোট গড়ার চেয়ে, মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে শিবসেনার সঙ্গে সমঝোতা করা গেলেই পরিস্থিতি সামলে নেওয়া যেত বলেও মন্তব্য করেন একনাথ। তবে তাঁরা অজিত পওয়ারকে ডাকেননি, বরং গায়ে পড়ে তিনি নিজেই সমর্থন দিতে এসেছিলেন বলে এ দিন দাবি করেন অমিত শাহ। একটি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘সমর্থনের চিঠি নিয়ে অজিত পওয়ারই আমাদের কাছে এসেছিলেন। পরিষদীয় দলের নেতা হওয়ায়, ওঁকে বিশ্বাস করেই এগিয়েছিলাম।’’ সেচ দুর্নীতি কাণ্ডে অজিত পওয়ারকে অব্যাহতি দেওয়ার অভিযোগও খারিজ করেন তিনি। শাহের দাবি, যে ন’টি মামলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে একটির সঙ্গেও অজিত পওয়ারের যোগ ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy