দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল সাত লক্ষ ৬৭ হাজার ২৯৬ জন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে সাত লক্ষ ছাড়িয়ে গেল। রোজই ২২-২৪ হাজার লোক নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ হাজার ৮৭৯ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা সাত লক্ষ ৬৭ হাজার ২৯৬ জন।
আক্রান্ত বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে করোনার জেরে মৃত্যুও ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে চলেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪৮৭ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হল ২১ হাজার ১২৯ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে ন’হাজার ৪৪৮ জনের। রাজধানী দিল্লিতে ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ২১৩-তে। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে মারা গিয়েছেন এক হাজার ৯৭৭ জন। গত মাসের শেষ দিক থেকে তামিলনাড়ুতেও ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে করোনার জেরে প্রাণহানি। যার জেরে দক্ষিণের এই রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা হল এক হাজার ৭০০ জন। উত্তরপ্রদেশ (৮৪৫), পশ্চিমবঙ্গ (৮২৭) ও মধ্যপ্রদেশে (৬২৯) মৃত্যুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে রাজস্থান (৪৮২), কর্নাটক (৪৭০), তেলঙ্গানা (৩২৪), হরিয়ানা (২৮২), অন্ধ্রপ্রদেশ (২৬৪), পঞ্জাব (১৭৮), জম্মু ও কাশ্মীর (১৪৯) ও বিহার (১০৭)।
আক্রান্ত দ্রুত হারে বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। এখনও পর্যন্ত সাড়ে চার লক্ষের বেশি মানুষ সুস্থ হয়েছেন। অর্থাৎ আক্রান্তের ৬১ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ৫৪৭ জন সুস্থ হয়েছেন। যা ২৪ ঘণ্টার নিরিখে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে মোট চার লক্ষ ৭৬ হাজার ৩৭৭ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হলেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি রুখে দিয়েছিল কেরল। কিন্তু মহারাষ্ট্রে তা বল্গাহীন ভাবেই বেড়েছে। গোড়া থেকেই এই রাজ্য কার্যত সংক্রমণের শীর্ষে ছিল। তার পর সময় যত গড়িয়েছে, এই রাজ্য নিয়ে সারা দেশের শঙ্কা বেড়েছে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ পেরিয়েছিল আগেই। গত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ছ’হাজারেও বেশি নতুন সংক্রমণের জেরে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ২৩ হাজার ৭২৪ জন। তামিলনাড়ু ও দিল্লির মোট সংক্রমণ এক লাখ পার করে ছুটছে। তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ২২ হাজার ৩৫০ জন। রাজধানী দিল্লিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ চার হাজার ৮৬৪ জন।
৩৮ হাজার ৩৩৩ সংক্রমণ নিয়ে গুজরাত ও ৩১ হাজার ১৫৬ আক্রান্ত নিয়ে উত্তরপ্রদেশ, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে। তেলঙ্গানা, কর্নাটক, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান ও অন্ধ্রপ্রদেশের মোট আক্রান্ত ২০ হাজারে গণ্ডি পার করে ছুটে চলেছে। তেলঙ্গানা (২৯,৫৩৬), কর্নাটক (২৮,৮৭৭), পশ্চিমবঙ্গ (২৪,৮২৩), অন্ধ্রপ্রদেশ (২২,২৫৯) ও রাজস্থানে (২২,০৬৩) জন আক্রান্ত হয়েছেন। হরিয়ানা (১৮,৬৯০), মধ্যপ্রদেশ (১৬,০৩৬), অসম (১৩,৩৩৬), বিহারে (১৩,১৮৯) ও ওড়িশাতে (১০,৬২৪) রোজ দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর, পঞ্জাব, কেরল, ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যগুলি।
লকডাউন উঠে যাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গেও নতুন করে অনেক বেশি সংক্রমণ হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৬৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। যা ২৪ ঘণ্টার নিরিখে সর্বোচ্চ। এই বৃদ্ধির জেরে মোট আক্রান্ত হলেন ২৪ হাজার ৮২৩ জন। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মোট ৮২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy