দৈনিক সংক্রমণ এ ভাবে বাড়তে থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ব্রাজিলকে পিছনে ফেলে আক্রান্তের নিরিখে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে চলে আসবে ভারত। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
৮৩ হাজার ছাড়িয়ে গেল দেশে দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা। যার জেরে তৈরি হল রেকর্ড। করোনাভাইরাস সারা বিশ্বে ছড়ানোর পর এখনও অবধি কোনও দেশে এক দিনে এত জন আক্রান্ত হননি। গত ২৪ ঘণ্টায় যা হল ভারতে। অবশ্য গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা কালের মধ্যে সব থেকে বেশি পরীক্ষা হয়েছে দেশে। এই প্রথম এক দিনে ১১ লক্ষেরও বেশি টেস্ট হল দেশে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৮৩ হাজার ৮৮৩ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। যার জেরে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ৩৮ লক্ষ ৫৩ হাজার ৪০৬ জন। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৯ হাজার ৫৫৩ ও ৪৬ হাজার ৯৩৪ জন। অর্থাৎ আমেরিকা ও ব্রাজিলের তুলনায় ভারতে রোজ বেশি মানুষ নতুন করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এই ধারা গত ১৫-১৬ দিন ধরেই অব্যাহত। আক্রান্তের নিরিখে বিশ্বে প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৬১ লক্ষ ১৩ হাজার ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৩৯ লক্ষ ৯৭ হাজার।
ফি দিন বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় দৈনিক সংক্রমণে শীর্ষে থাকছে ভারত। যার জেরে মোট আক্রান্তও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, এ ভাবে বাড়তে থাকলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ব্রাজিলকে পিছনে ফেলে সংক্রমণের নিরিখে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে চলে আসবে ভারত। আনলক পর্বে দেশে কড়াকড়ি কমেছে অনেকটাই। আগামী সপ্তাহ থেকে চালু হচ্ছে মেট্রো। মুক্তমঞ্চ, পাবও খুলে যাচ্ছে। এর মধ্যেই দৈনিক সংক্রমণের লাফিয়ে বৃদ্ধি উদ্বেগ তৈরি করছে দেশের করোনা পরিস্থিতিতে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আক্রান্তের সংখ্যা যেমন রোজ বাড়ছে, তেমনই প্রচুর মানুষ সুস্থও হয়ে উঠছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যে যা কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে। এখনও পর্যন্ত মোট ২৯ লক্ষ ৭০ হাজার ৪৯২ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের ৭৭ শতাংশ সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬৮ হাজার ৫৮৪ জন।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। গত তিন দিন তা ৭ শতাংশেই বন্দি রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণ হার ৭.১৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে পরীক্ষা হয়েছে ১১ লক্ষ ৭২ হাজার ১৭৯ জনের। যা করোনাকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
মৃত্যুর সংখ্যায় স্পেন, ফ্রান্স, ইটালি,
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু দু’টি তালিকাতেই শুরু থেকে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত ৮ লক্ষ ২৫ হাজার ৭৩৯ জন। তামিলনাড়ুকে পিছনে ফেলে সংক্রমণ তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে অন্ধ্রপ্রদেশ। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সেখানে দৈনিক আক্রান্ত হচ্ছেন গড়ে ১০ হাজার জন। সেখানে মোট আক্রান্ত চার লক্ষ ৫৫ হাজার ৫৩১ জন। তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত চার লক্ষ ৩৯ হাজার ৯৫৯। তামিলনাড়ুতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধি আগের থেকে একটু কম হচ্ছে। চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে মোট সংক্রমিত হয়েছেন তিন লক্ষ ৬১ হাজার। উত্তরপ্রদেশেও মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ ৪১ হাজার। দিল্লি (১,৭৯,৫৬৯) ও পশ্চিমবঙ্গ (১,৬৮,৬৯৭), বিহার (১,৪১,৪৪১) ও তেলঙ্গানাতে (১,৩৩,৪০৬) মোট আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। অসম ও ওড়িশাতে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ছাড়িয়ে বেড়ে চলেছে।
গুজরাতে মোট আক্রান্ত এখন ৯৮ হাজার ৮৮৮। রাজস্থানে সংখ্যাটা ৮৪ হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যায় কেরল ৭৮ হাজার পার করেছে। হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ৬৫ হাজারের বেশি। পঞ্জাবে প্রায় ৫৭ হাজার, ঝাড়খণ্ডে ৪৪ হাজার, জম্মু ও কাশ্মীরে মোট আক্রান্ত ৩৮ হাজার। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে, ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড,
পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ তিন হাজারের নীচে ঘোরাফেরা করছে। মঙ্গলবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, নতুন করে দু’হাজার ৯৭৬ জনের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৬৯৭ জন। এর মধ্যে ১ লক্ষ ৪০ হাজার ৯১৩ জন সুস্থও হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন ৩ হাজার ৩৩৯ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy