চায়ের সঙ্গে বিস্কুট খাওয়া ভাল নয়? তা হলে ‘টা’ হিসেবে কী কী খাওয়া যাবে? ছবি:ফ্রিপিক।
গরম চা-এর ‘টা’ ছাড়া চলে না। কিন্তু সেই ‘টা’ হিসাবে কী খান, বিস্কুট, নিমকি, চানাচুর না কি চপ?
চায়ের সঙ্গে সবচেয়ে জনপ্রিয় অবশ্য বিস্কুট। সকালে উঠে খালি পেটে চায়ে চুমুক দিতে গেলেই মায়েরা বলবেন, বিস্কুট দিয়ে খেতে। না হলেই শরীর খারাপ করবে। তবে পুষ্টিবিদদের কথায়, চায়ের সঙ্গে বিস্কুট ডুবিয়ে খাওয়ার পুরনো অভ্যাসও কিন্তু মোটেও ভাল নয়। গুরুগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের পুষ্টিবিদ নীতি শর্মা বলছেন, ‘‘ময়দার বিস্কুট, ভাজাভুজি— যেমন শিঙাড়া, কচুরি, পকোড়া ইত্যাদি চায়ের সঙ্গে খাওয়ার চল থাকলেও, তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল নয়। কারণ এই সমস্ত খাবার রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা হার্টের পক্ষে ক্ষতিকর।’’
আসলে বিস্কুটে নয়, সমস্যা রয়েছে ময়দায়। বাজারচলতি বেশির ভাগ বিস্কুট ময়দা দিয়ে তৈরি। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, বিস্কুটেও চিনি থাকে, যা রক্তে শর্করার পরিমাণ হঠাৎ করে বাড়িয়ে তুলতে পারে। যাঁরা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছেন, তাঁদেরও বিস্কুট খেতে বারণ করা হয়। শিশুদের অতিরিক্ত বিস্কুট খাওয়ার প্রবণতা টাইপ ২ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে। তা ছাড়া যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালোরি রয়েছে এতে। বিস্কুটে থাকে ট্রান্স ফ্যাট, যা রক্তে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
ভারতে চায়ের সঙ্গে যা যা খাওয়ার চল রয়েছে, যেমন নিমকি, গাটিয়া, শিঙাড়া, চানাচুর, পকোড়া, কচুরি— তার বেশির ভাগটাই স্বাস্থ্যকর নয়। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের ২০২৪ সালের মে মাসের একটি সমীক্ষা বলছে, ৫৬.৪ শতাংশ ভারতীয়ের রোগভোগের নেপথ্যে রয়েছে অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস। প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনি, নুন যুক্ত মুখরোচক পদ শরীরের বিপদ ডেকে আনছে।
সুতরাং, মুখরোচক বিস্কুট, কুকি থেকে চানাচুর, শিঙাড়া বাদ গেল চায়ের সঙ্গে ‘টা’ হিসাবে খাওয়ার জন্য। তা হলে খাবেনটা কী? পুষ্টিবিদ সিমরত কাঠুরিয়ার পরামর্শ, চায়ের সঙ্গে ছোলাভাজা, সেদ্ধ কোনও খাবার বা কম তেল-মশলাদার পদ বেছে নেওয়া যেতে পারে।
কী কী থাকবে সেই তালিকায়?
১.আটার বিস্কুট। বাড়িতে তৈরি সুজির কুকি। রাগি, বাজরা, ওট্সের কুকি অথবা বিস্কুটে চায়ের সঙ্গে নিশ্চিন্তে কামড় দেওয়া যাবে।
২. পপকর্ন, মশলা মাখানো জোয়ার, বাজরার পাফ, মাখানা, বালিতে ভাজা ছোলা, মটর খেতে পারেন চায়ের সঙ্গে।
৩. কচুরির বদলে অল্প তেলে ঘরে তৈরি মেথি থেপলা, খাকরা, সেদ্ধ করা সুইট কর্নের চাট রাখতে পারেন ‘টা’-এর তালিকায়।
৪. শিঙাড়া নয়, তবে কম তেল-মশলা দিয়ে মুড়ি মাখিয়ে খেতে পারেন চায়ের সঙ্গে। তালিকায় রাখা যাবে কম তেলের চিঁড়েভাজা বা তেল ছাড়া ডায়েট চিঁড়েও। রাখা যাবে চিঁড়ের পোলাও।
৫. এ ছাড়া ঘরে এয়ার ফ্রায়ারে তৈরি রাঙা আলু, বিট, কাঁচকলা, গাজরের চিপ্স খেতে পারেন। ছাঁকা তেলে ভাজা চিপ্স কিন্তু চায়ের সঙ্গে মোটেও চলবে না।
একই সঙ্গে পুষ্টিবিদ সিমরত মনে করাচ্ছেন, চিনি এবং ঘন দুধ সহযোগে বার বার চা, কফি খাওয়াতেও রাশ টানতে হবে। চিনি ছাড়া দিনে ২-৩ বার চায়ে চুমুক দেওয়া যেতেই পারে, তবে তার চেয়ে বেশি নয়। পাশাপাশি হজমের সমস্যা, পেটের গন্ডগোল হলেও চা থেকে বাদ দিতে হবে দুধ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy