গত এক দিনে দেশে করোনা পরীক্ষা হল অনেক কম। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।
পাঁচ দিন পর ফের ৯০ হাজারের নীচে নামল ভারতের দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত তিন দিন ধরেই ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হচ্ছেন ৯০ হাজারের বেশি কোভিড রোগী। কিন্তু গত এক দিনে দেশে করোনা পরীক্ষা হল অনেক কম। যার জেরে সংক্রমণের হার পৌঁছেছে সাড়ে ১১ শতাংশের উপরে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৮৬ হাজার ৯৬১ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৪ হাজার ৩৫০ ও ১৬ হাজার ৩৮৯ জন। গত দেড় মাস ধরেই আমেরিকা ও ব্রাজিলের তুলনায় ভারতের দৈনিক সংক্রমণ অনেক বেশি।
৮৬ হাজার বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ৫৪ লক্ষ ৮৭ হাজার ৫৮০ জন। প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকায় মোট আক্রান্ত ৬৭ লক্ষ ৯৯ হাজার ও তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে মোট আক্রান্ত ৪৫ লক্ষ ৪৪ হাজার।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটক— দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধিতে দেশের মধ্যে এগিয়ে এই তিনটি রাজ্য। মহারাষ্ট্রে দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজারের ঘরেই ঘোরাফেরা করছে। অন্ধ্রপ্রদেশে অবশ্য ১০ হাজার থেকে নীচে নেমেছে দৈনিক সংক্রমণ। সেখানে গড়ে সাড়ে আট হাজার করে আক্রান্ত হয়েছেন বিগত কয়েক দিনে। কর্নাটকেও সাড়ে দৈনিক সংক্রমণ ঘোরাফেরা করছে সাড়ে আট হাজারের আশেপাশে। তুলনায় তামিলনাড়ুতে দৈনিক সংক্রমণ বিগত মাসগুলির তুলনায় অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। মেট্রো চালুর পর থেকেই সাড়ে চার হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে দিল্লির দৈনিক আক্রান্ত সংখ্যা। বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটা একই গণ্ডিতে আবদ্ধ আছে। সেপ্টেম্বরে ওড়িশা ও কেরল দৈনিক সংক্রমণ চার হাজারের ঘর ছুঁয়েছে। অসম, ছত্তীসগঢ়, পঞ্জাব, তেলঙ্গানা হরিয়ানা, রাজস্থান, গুজরাতের মতো রাজ্যগুলির দৈনিক সংক্রমণ নিয়ে চিন্তার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির তুলনায় মৃত্যুর হার কম হলেও, ভারতে দিন দিন বাড়ছে মোট মৃত্যুর সংখ্যা। সেপ্টেম্বরের গোড়া থেকেই তা ধারাবাহিক ভাবে হাজারের উপরে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১৩০ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৮৭ হাজার ৮৮২ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ৩২ হাজার ৬৭১ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত্যু হয়েছে সাড়ে আট হাজার ৮১১ জনের। তৃতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে মৃতের সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশেও মোট মৃত পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে বাড়ছে। উত্তরপ্রদেশও আজ পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে মোট মৃতের সংখ্যা। দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছুঁইছুঁই। পশ্চিমবঙ্গ (৪,৩৫৯), গুজরাত (৩,৩১৯) ও পঞ্জাব (২,৮১৩) মৃত্যু তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। মধ্যপ্রদেশ (১,৯৭০), রাজস্থান (১,৩৩৬), হরিয়ানা (১,১৪৯), তেলঙ্গানা (১,০৪২) ও জম্মু ও কাশ্মীরে (১,০০১) মোট মৃত্যু বেড়ে চলেছে। এর পর তালিকায় রয়েছে বিহার, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, অসম, কেরল, উত্তরাখণ্ড, পুদুচেরী, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যার মধ্যেই আশার আলো কোভিড রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠা। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট ৪৩ লক্ষ ৯৬ হাজার ৩৯৯ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের ৮০ শতাংশই সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৯৩ হাজার ৩৫৬ জন। এই মুহূর্তে দেশে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১০ লক্ষ ৩ হাজার ২৯৯ জন।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। আজ সেই হার বেড়ে হয়েছে ১১.৮৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে পরীক্ষা হয়েছে ৭ লক্ষ ৩১ হাজার ৫৩৪ জনের। যা গত গত ১০ দিনের তুলনায় অনেকটা কম।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )
কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু— দু’টি তালিকাতেই শুরু থেকে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত ১২ লক্ষ পেরিয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অন্ধ্রপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ছ’লক্ষ ২৫ হাজার। তামিলনাড়ুতে মোট পাঁচ লক্ষ ৪১ হাজার ও চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে পাঁচ লক্ষ ১৯ হাজার আক্রান্ত হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশেও সংখ্যাটা তিন লক্ষ ৫৪ হাজারে পৌঁছেছে। দিল্লিতে দু’লক্ষ ৪৬ হাজার। পশ্চিমবঙ্গে তা দু’লক্ষ ২৫ হাজার। ওড়িশাতে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৭৯ হাজার, তেলঙ্গানাতে ১ লক্ষ ৭২ হাজার ও বিহারে এক লক্ষ ৬৯ হাজার পার করেছে। অসমে সংক্রমিতের সংখ্যা দেড় লক্ষ ছাড়িয়েছে। গুজরাত, কেরল, রাজস্থান, হরিয়ানা ও গুজরাতে এক লক্ষ ছাড়িয়েছে মোট আক্রান্তের সংখ্যা। পঞ্জাব (৯৭ হাজার), ছত্তীসগঢ় (৮৬ হাজার), ঝাড়খণ্ড (৭১ হাজার), জম্মু ও কাশ্মীরে (৬৩ হাজার) মোট আক্রান্ত উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।
পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ বেশ কিছু দিন ধরে তিন হাজারের বেশি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে তিন হাজার ১৭৭ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন দু’লক্ষ ২৫ হাজার ১৩৭ জন। যদিও এর মধ্যে এক লক্ষ ৯৫ হাজারেরও বেশি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬১ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন চার হাজার ৩৫৯ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy