‘ডিজিটাল ডিভাইড’-এর ফলে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া পরিবারের পড়ুয়ারা। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
লকডাউনের জেরে স্কুল বন্ধ। পড়াশোনা শুরু হয়েছে অনলাইনে। সেই ক্লাসে যোগ দিতে বাবার কাছে একটা স্মার্টফোনের বায়না করেছিল বছর চোদ্দোর ছেলেটি। তবে নুন আনতে পান্তা ফুরনো পরিবারের পক্ষে স্মার্টফোন কেনার টাকা ছিল না। হতাশায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিল তামিলনাড়ুুর ওই কিশোর। বুধবার গভীর রাতে নিজের ঘরে সে আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে খবর, তামিলনাড়ুর কুড্ডালোর জেলার ওই পড়ুয়া দশম শ্রেণিতে পা রেখেছিল। পানরুটি শহরের বল্লালর হাইস্কুলের ছাত্র ছিল সে। তার বাবা বিজয় কুমার কাজুবাদামের চাষ করে সংসার চালান।
ছেলের মৃত্যুতে স্বাভাবিক ভাবেই হাহাকার করছেন বিজয় কুমার। পুলিশের কাছে তাঁর বয়ান, “ক্লাস টেনে ওঠার পর অনলাইন ক্লাস করার জন্য একটা স্মার্টফোন চেয়েছিল আমার ছেলে। তবে আমি জানিয়েছিলাম, কাজু বিক্রি করে টাকাপয়সা হাতে এলে স্মার্টফোন কিনে দেব। তাতেই রেগে যায় ছেলে।” গোটা ঘটনা নিয়ে পুলিশের শীর্ষ কর্তারা মুখ খুলতে না চাইলেও অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মদ না পেয়ে গলায় ঢাললেন স্যানিটাইজার, মৃত্যু ৯ জনের
আরও পড়ুন: পরীক্ষা পিছোবে ভেবে প্রস্তুতি বন্ধ করবেন না, পড়ুয়াদের বার্তা ইউজিসির
তামিলনাড়ুর ওই কিশোরের মৃত্যুতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। লকডাউনের সময় রাজ্যের গরিব পরিবারকে বিনামূল্যে রেশন এবং মাসে এক হাজার টাকার সাহায্য দিলেও তা যে যথেষ্ট নয়, তেমনটাই মনে করছেন অনেকে। লকডাউনের ফলে অনেক পরিবারই সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এর আবহে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। তবে তাতে যোগ দেওয়া যে নিম্ন আয়ের পরিবারের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে অসম্ভব, তা নিয়েও মুখ খুলেছেন বিরোধী রাজনীতিকরা। রাজ্যের শিক্ষাবিদদের একাংশ-সহ ওই রাজনীতিকরা এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ই কে পলানীস্বামীর সমালোচনা করেছেন। অনলাইন ক্লাসের জন্য পড়ুয়াদের স্মার্টফোন এবং দ্রুত গতির ইন্টারনেট ব্যবস্থার খরচ সামলানো যে সমাজের সকলের পক্ষে সম্ভব নয়, সে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, ‘ডিজিটাল ডিভাইড’-এর ফলে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তামিলনাড়ুর আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া পরিবারের পড়ুয়ারা। শিক্ষাবিদ আরতি বোয়াজ বলেন, “কোভিড-১৯ অতিমারির সময় আনাজপাতির দাম বেড়েছে হু হু করে। অথচ অনেকেরই হাতে এসেছে অর্ধেক বেতন। এই সময় একটা স্মার্টফোন বা ইন্টারনেট প্যাকেজের ব্যবস্থা করাটাও শুধুমাত্র গরিব পরিবারের কাছেই নয়, বহু মধ্যবিত্তের কাছেও অকল্পনীয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy