ছবি: এপি।
রাত পোহাতেই গত কালের লকডাউন সংক্রান্ত নির্দেশিকায় ফের কিছু সংশোধন ও ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হল নরেন্দ্র মোদী সরকার। এর আগে লকডাউন চলাকালীন দু’দফা ছাড় ঘোষণার সময়ে তো বটেই, জিএসটি রূপায়ণ বা নোট বাতিলের মতো বড় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও ঠিক এ ভাবে ধোঁয়াশা তৈরি করে পরের দিন নতুন ব্যাখ্যা দিয়েছে কেন্দ্র। তবে এ দিন নতুন ব্যাখ্যার পরেও যে ধোঁয়াশা পুরো কেটেছে, তা নয়।
দেশে সংক্রমণের হারের ঊর্ধ্বগতি মাথায় রেখে তৃতীয় দফায় ৪ মে থেকে আরও দু’সপ্তাহ, অর্থাৎ ১৭ মে পর্যন্ত লকডাউনের সময় বাড়ানো হয় গত কাল। সঙ্গে অর্থনীতিতে গতি আনতে গ্রিন ও অরেঞ্জ জ়োনের পাশাপাশি ছাড় দেওয়া হয় রেড জ়োনেও। তার কয়েকটি নিয়ে কালই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। যা দূর করতে আজ সকালেই মাঠে নামে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
সরকারের ওই প্রবণতা প্রসঙ্গে কংগ্রেসের কটাক্ষ, মোদী সরকার শুরু থেকেই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে বিশ্বাসী। এ ক্ষেত্রে তৃতীয় দফা লকডাউন কেন করা হল, সেটাই অস্পষ্ট। শাসক শিবিরের পাল্টা যুক্তি, পরিস্থিতি বিবেচনা করে ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা শিথিলের কথা ভাবা হয়েছে।
আরও পড়ুন: এ বার আরোগ্য সেতু অ্যাপ বাধ্যতামূলক করল কেন্দ্র, কাদের জন্য জেনে নিন
রেড জ়োনের আর্থিক কর্মকাণ্ডে গতি আনতে সরকার যে ভাবে বহু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে রেড জ়োনে বেসরকারি দফতর খোলার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় ও সাধারণ পণ্যের দোকান খোলায় সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে, যাতে অনেকে উদ্বিগ্ন। জ়োনগুলিতে লোক
যাতায়াতের প্রশ্নে অস্পষ্টতা থাকায় সকালে ওই প্রসঙ্গে নতুন ব্যাখ্যা দিতে তৎপর হয় কেন্দ্র। শুক্রবারের নির্দেশিকায় বলা ছিল, অরেঞ্জ জ়োনে ট্যাক্সি বা অ্যাপ-ক্যাবে চালক ছাড়া কেবল এক জন যাত্রী উঠতে পারবেন। আজ তা বাড়িয়ে দুই করা হয়েছে। অরেঞ্জ জ়োনে নির্দিষ্ট কিছু কাজেই আন্তঃজেলা গতিবিধিতে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে, নির্দেশিকায় বলা নেই। একই ভাবে রেড ও অরেঞ্জ জ়োনে বেসরকারি দফতর খুললেও সেখানে বাস চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ওঠেনি। ফলে সেই এলাকাগুলিতে যাঁদের দফতর, তাঁরা কী ভাবে যাতায়াত করবেন, তার দিশা নেই নির্দেশিকায়। বিরোধীদের মতে, শুধু অ্যাপ-ট্যাক্সিতে ছাড়ের কথা বলা রয়েছে। কিন্তু তা সকলের সাধ্যের মধ্যে নয়। গত কাল থেকেই সংশয় তৈরি হয়েছিল মদের দোকান খোলা নিয়ে। আজ বিকেলে সরকারের একটি সূত্রে জানানো হয়, বাকি দুই জ়োনের মতো রেড জ়োনেও একক মদের দোকান খুলতে পারা যাবে। তবে চূড়ান্ত ছাড়পত্র রাজ্যের হাতে।
আরও পড়ুন: ১৭ মে পর্যন্ত লকডাউনের সময়সীমা বাড়াল মোদী সরকার
নোট বাতিল, জিএসটি থেকে লকডাউন— প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে তাতে অসংখ্য ভ্রান্তি ধরা পড়ার পিছনে পরিকল্পনার দৈন্যকে দায়ী করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, “প্রতিটি ঘটনায় স্পষ্ট, সরকারে পরিপক্ক মস্তিষ্কের অভাব রয়েছে।” আর এক মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা প্রশ্ন তুলেছেন তিন নম্বর লকডাউনের যৌক্তিকতা নিয়ে। তাঁর কথায়, “প্রায় সব কিছুতে ছাড় দেওয়া হচ্ছে, আবার বলা হচ্ছে লকডাউন চলবে। লকডাউনের দায় রাজ্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারের উচিত ছিল, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার প্রশ্নে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানানো।” কেন ১৭ মে পর্যন্ত লকডাউন, তার ব্যাখ্যাও দাবি করে তিনি বলেন, “মোদী সরকার জানাক— এটাই শেষ না, আরও লকডাউনের আঘাত সহ্য করতে হবে দেশবাসীকে।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy